বেশ কদিন(দুমাসের বেশি হবে) আগের কথা । রোজার ঈদের ছুটি কাটিয়ে অফিসে ফিরেই দেখি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক থেকে পত্রাঘাত(ই মেইল)। ভারতের জয়পুরে কৃষিঋণ প্রকল্প পরিদর্শনের নেমন্তন্ন । সহযোগিতায় ভারতের HDFC Bank and Mahindra Finance. সর্বমোট দশটি দেশের ২০ জন প্রতিনিধি । বাংলাদেশ থেকে আমিসহ দুজন (ওদের মনে হয় লোক কম পড়েছিলো তাই শুন্যস্থান পুরন আমাকে দিয়ে ) । যাইহোক নানা তালবাহানার (দুবার তারিখ পরিবর্তন) পর এমাসের ১১ তারিখ জেট এয়ারওয়েজ চেপে রওয়ানা হলুম দিল্লী । দিল্লী দুরঅস্ত না হয়ে বরং সময়ের আগেই পৌছে গিয়েছিলুম , ঐদিন বিকেলেই দিল্লী থেকে জয়পুরের উড়ান । দিল্লী টু জয়পুর যাত্রাপথে নাশতা হিসেবে যা পরিবেশন করলো তা মোটামুটি অখাদ্য বলা চলে । হটডগ এর মত দেখতে কিন্তু হটডগ নয় (খোদায় মালুম কী চীজ), খাইনি অবশ্যই। এক কাপ চা বা কফির আশা ছিলো মনে, কিন্তু কপালে না থাকলে যা হয় আরকি , সহযাত্রিদের সেই খোদায় মালুম কী চীজ খাওয়া শেষ না হতেই বিমানবালিকার ঘোষনা, "আমরা নির্ধারিত সময়ের আগেই জয়পুর এর আকাশসীমায় পৌছে গেছি, নামার সময় হয়ে যাওয়ায় সময়াভাবে চা কফি পরিবেশন করা গেলনা বিধায় দুঃখিত" । দুঃখিত আমিও । এককাপ কফি পেলে ঝিমুনি কেটে গিয়ে চাঙ্গা হয়ে উঠতুম । চা কফির খরচ বাঁচাতেই এই দ্রুতগমন কিনা কে জানে !
সন্ধে নাগাদ হোটেলে পৌছলুম । পাঁচতারকা হোটেল তাই আদরযত্নের কমতি নেই । রাতের ডিনারে পুরো টিম সহ WB, HDFC, ও Mahindra Finance এর প্রতিনিধিদের সাথে আলাপ পরিচয় হলো । শেষদিনে আধাবেলার একটা সাইট সীয়িং ট্যুর আছে তাও জানলুম । তার আগে অবশ্য সেদেশের (জয়পুরের) কৃষিঋণ প্রকল্পগুলো পরিদর্শনের পর আমাদের মুল্যবান (!) মতামত ও পরামর্শ(!!) আশা করছেন তারা সেটাও জানলুম । পরামর্শ দিতে না আমার দারুন লাগে (কেউ কখনো আমার কাছে পরামর্শ চায়না এটাই সমস্যা) ।
কদিন ভালই কাটলো । শেষদিনে group discussion session এ পরামর্শ ও কিছু কম দিলুম না , নেপালের প্রতিনিধি তো আর নতুন কিছু না বলে আমার কথাই তার কথা বলে এককথায় তার বক্তব্য শেষ করলেন (আসলে ভদ্রলোক মিতভাষী , আমি লক্ষ্য করেছি) ।
পরদিন সকাল ছটার ফ্লাইটে জয়পুর থেকে দিল্লী পৌছলুম, দিল্লী বিমানবন্দরে ছ ঘন্টা বসে থেকে এটা ওটা খেয়ে পকেটের খুচরা ভারতীয় রুপি গুলো শেষ করলুম , রুপির দেশেই রুপি রেখে যাওয়া ভালো, তাও ন রুপি রয়ে গেল , ন রুপি তে ওখানে কিছু পাওয়া গেলনা।
দিল্লী থেকে ঢাকা ফেরার পথে অখাদ্য লান্চ পরিবেশনের পর একইভাবে খাওয়া শেষ না হতেই বিমানবালিকার ঘোষনা, "আমরা নির্ধারিত সময়ের আগেই ঢাকা পৌছে গেছি, নামার সময় হয়ে যাওয়ায় সময়াভাবে চা কফি পরিবেশন করা গেলনা বিধায় দুঃখিত" । কি আর করা চা বাসায় গিয়েই খাব , নেমে ফোন করে জানলুম ড্রাইভারও গাড়ি নিয়ে হাজির । বাসায় গিয়ে গোসল করে ঘরের খাওয়া খেয়ে একটা ঘুম দেব বলে বিছানায় লম্বা হলুম । আঃ কি আরাম !
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২০