ছোট গল্পঃ অথৈ (পর্ব ১)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
কাহিনী ও চরিত্র কাল্পনিক
গন্তব্যস্থলের কাছাকাছি পৌঁছতেই মাসুদের মেজাজ খারাপ হতে শুরু করলো। সে সবসময় যানজট অপছন্দ করে। ঢাকার রাস্তা মানেই যে যানজট তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু ভাগ্যক্রমে আজ রাস্তায় তুলনামূলক কম যানজট ছিল, যার কারণে গ্রীনরোড থেকে সদরঘাট পৌঁছতে খুব একটা সময় লাগেনি। তাতে কী! সারা রাস্তা জ্যাম না থাকলেও টার্মিনালের কাছাকাছি পৌঁছতেই শুরু হয়ে গেল যানজট। আর বড়জোর ২০ মিনিটের রাস্তা। অথচ রাস্তার যে অবস্থা, পৌঁছতে পৌনে এক ঘণ্টা লাগলেও অবাক হবে না মাসুদ।
মাসুদকে অবশেষে অবাক করে দিয়েই তার গাড়ি টার্মিনালের কাছে পৌঁছলো পাক্কা এক ঘণ্টা পর। রাগ দেখানোর জন্য কাউকে না পেয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে গাড়ি থেকে নামলো সে। ধীর পায়ে এগিয়ে গেল মূল টার্মিনালের দিকে। বাইরে এতো যানজট অথচ ভেতরটা কেমন যেন খালি খালি লাগলো তার কাছে। এখানে সেখানে অল্পকিছু মানুষ ফ্লোরে বিছানা করে শুয়ে-বসে আছে। টার্মিনালে দেখা যাচ্ছে সবগুলো লঞ্চই রয়েছে। তারপরও তারা কীসের অপেক্ষায় বুঝতে পারলো না মাসুদ। ধরে নিলো, গভীর রাতে হয়তো নতুন কোনো পথের লঞ্চ আসবে। সেগুলোর জন্যই অপেক্ষা করে আছে এসব যাত্রী।
টার্মিনাল পার হয়ে ফলের বাজার দেখে অবাক না হয়ে পারলো না। বাংলাদেশে মানুষ পারলে যে নদীর মাঝখানেও দোকান দিয়ে বসবে তার প্রমাণ সামনেই দেখে আপনমনেই হাসলো মাসুদ। এবার লঞ্চে উঠার পালা। যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ চিকন একটি কাঠের উপর দিয়ে নিরাপদেই লঞ্চে পা রাখতে পারলো সে। জিনিসটার নাম জানে না সে, তবে তার সঙ্গে আসা মা ও ছোটভাইয়ের এর উপর দিয়ে সাবলীলভাবে লঞ্চে উঠার ভঙ্গি দেখেই বুঝলো যে এর ঝুঁকিটা মানুষ হয় বোঝেই না অথবা কিছু করার নেই বলে পাত্তা দেয় না।
তখন দশটা বাজে। লঞ্চ ছাড়ার কথা সাড়ে দশটার দিকে। তবে মাসুদের ধারণা এগারোটার আগে লঞ্চ ছাড়বে না। কিন্তু তাই বলে নিচে নেমে ঘুরতেও ইচ্ছে করছে না। একটা ডাবল কেবিন ভাড়া করলো। কেবিনের ভেতরটা বেশ পরিচ্ছন্ন। পরিস্কার চাদর বিছানো। দেয়ালে কোনো আবর্জনা বা আঁকিবুকি নেই। মাথার উপরে টেবিল ফ্যান সেট করা। একটি মাত্র জানালায় আবার পর্দাও আছে। বেডে মাথার দিকের পাশে আবার ছোট একটা টেবিলও আছে। দু’টো ড্রয়ারসমৃদ্ধ টেবিলটা কেবিনের চেহারা উন্নয়নে বেশ ভালোই অবদান রেখেছে, ভাবলো মাসুদ।
পৌনে এগারোটার দিকে লঞ্চ ঘাট ছেড়ে পেছাতে শুরু করলো। স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো মাসুদ। একবার যখন মাঝনদীতে এসে পড়েছে লঞ্চ, তাহলে নিশ্চিত হওয়া যায় এবার চলতে শুরু করবে। ভাগ্য ভালো লঞ্চ লোকাল বাসের মতো নয়। তাহলে তো সারা নদীতেই দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। আর মানুষ নৌকায় করে এসে লঞ্চে উঠতো!
ঘাটে ভিড়ে থাকার সময় লঞ্চের ভেতরের গুমোট ভাবটা উধাও হয়ে গেছে হঠাৎ করেই। মাঝনদীতে লঞ্চ আসার সাথে সাথেই স্নিগ্ধ এক ঝলক হাওয়া এসে পুরো লঞ্চের আবহাওয়া পরিবর্তন করে দিয়েছে। মাসুদ তার কেবিনের সামনেই রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে। প্রকৃতি দেখতে তার ভালোই লাগে। কিন্তু এই অন্ধকার রাতে প্রকৃতি দেখার সময় এখনো আসেনি। আকাশে চাঁদ আছে, প্রকৃতি দেখা যাবে। কিন্তু বুড়িগঙ্গার এই ব্যস্ত আলোকউজ্জ্বল এলাকা পার হওয়ার আগ পর্যন্ত দেখার কিছুই নেই।
লঞ্চ একসময় আলোকউজ্জ্বল শহর ছেড়ে নীরব নদীর বুকে হারিয়ে গেল। আকাশে চাঁদ থাকায় চাঁদের রূপালী আলো নদীর পানিতে প্রতিফলিত হয়ে অপূর্ব এক আবছা সৌন্দর্য্যের সৃষ্টি করেছে। সেই সঙ্গে আছে লঞ্চের গোঁ ধরে থাকা একটানা ইঞ্জিনের শব্দ। নাহ, মাসুদ যতোটা মনে করেছিল, ততোটা খারাপ নয় লঞ্চ জার্নি।
*
রাত তখন একটার মতো বাজে। মাসুদ তার কেবিনে বাইরে থেকে লঞ্চের বিভিন্ন দিক ঘুরে দেখতে বেরিয়েছে। প্রথমেই গেল একদম নিচতলায়। ঢোকার সময়ই দেখেছিল নিচতলাটা একদম খালি। দু’পাশে কিছু বেঞ্চ রাখা আছে কেবল। কিন্তু এই মাঝরাতে সেখানে গিয়ে দেখলো তিল ধারণের জায়গা নেই। পুরো মেঝেতেই চাদর, বস্তা ইত্যাদি যে যা পারে বিছিয়ে শুয়ে-বসে আছে। বেশিরভাগ মানুষই ঘুমোচ্ছে। কেউ কেউ রাজনৈতিক আলাপে মগ্ন। বাকিরা দেখছে টিভি। বেশ মজা পেলো মাসুদ। ছোট একটি টিভিতে বাংলা ছবি দেখাচ্ছে। দেখেই বুঝতে পারলো ভিসিডি প্লেয়ার চলছে। ‘বাহ, বিনোদনের সুবিধা তো ব্যাপক!’ নিজেই হাসলো মাসুদ।
লম্বা এই ‘গ্রাউন্ড ফ্লোরের’ এক কোণে আবার রয়েছে ছোট ক্যান্টিন। এখানে চা-বিস্কুট থেকে শুরু করে ঢাকার টং-এর দোকানের সব সামগ্রীই পাওয়া যায়। মাসুদের একবার মনে হলো সিগারেট কিনে একটা। কিন্তু শেষে আর কিনলো না। বদঅভ্যাসটা ছেড়ে দেয়ার চেষ্টা করছে সে।
পুরো লঞ্চজুড়ে আর দেখার তেমন কিছুই পেলো না। মাস্টারকেবিনের নিচে দ্বোতলায় আরেকটি ছোটখাটো সিনেমা হল দেখা গেল। সেখানেও একই বাংলা ছবি চলছে। তবে এখানে আরও উন্নতমানের সিট রয়েছে। বোঝা গেল, এখানে বসে যেতে হলে ভাড়া একটু বেশি লাগে। কিন্তু যে ভলিউমে টিভি চলছে, এতে ঘুম তো অসম্ভব। কিন্তু তবুও যাদের ঘুমোনোর তারা কীভাবে যেন ঠিকই ঘুমিয়ে আছে।
এরপরের চমকটি অপেক্ষা করছিল লঞ্চের পেছন দিকে। ছোটখাটো এক বাগান বানিয়ে রাখা হয়েছে। সৃজনশীলতা দেখে অবাক না হয়ে পারলো না মাসুদ। রেলিং-এর ধার ঘেঁষে টবে বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগানো। আর মাঝখানে তিন-চারটি গোলটেবিল বসানো যার উপরে ছাতা রয়েছে আর তিন দিকে রয়েছে তিনটি চেয়ার। সেখানে আরাম করে বসার লোভ সামলাতে পারলো না মাসুদ। একটি টেবিলে তখনও দু’জন লোক বসে চা খাচ্ছিল। একটা ছেলে এসে চায়ের কাপগুলো নিয়ে যাবার সময় মাসুদ তাকে ডেকে বললো তার জন্য এককাপ চা বানিয়ে আনতে। এই আবহাওয়ায় চা না খেলে আনন্দটা যেন পরিপূর্ণতা পায় না। সঙ্গে একটা সিগারেট হলে আরও ভালো হতো, কিন্তু সিগারেটের কথা বলার আগেই ছেলেটা চলে গেল।
এর কিছুক্ষণ পর লোকগুলোও চলে গেল। লঞ্চের মিনি গার্ডেনটা তখন একদম খালি। তিনতলায় বলে এমনিতেই এখানে বেশ বাতাস, তারপর আবার লঞ্চ এখন খোলা নদীতে। ঠাণ্ডা বাতাসে শরীর জুড়িয়ে যাচ্ছে মাসুদের। ইচ্ছে করছে এখানেই বিছানা করে শুয়ে থাকতে। তবে এখানে ঘুমোনো সম্ভব না। প্রেস্টিজ ছাড়াও আরেকটি যে সমস্যা আছে তার নাম হলো মশা। এরই মধ্যে মাসুদের অবস্থা খারাপ করে ফেলেছে মশার দল। টেবিলের নিচে পা রাখলেই মশা বেশি কামড়ায় এটা বুঝতে পেরে চেয়ার ছেড়ে রেলিং-এর ধারে গিয়ে দাঁড়ালো মাসুদ।
মেয়েটা কখন পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে মাসুদ টেরই পায়নি।
*
‘প্রকৃতি দেখছেন?’ মেয়েটার মিষ্টি কণ্ঠস্বরে রীতিমতো চমকে উঠলো মাসুদ। একবার ডানদিকে আরেকবার বামদিকে তাকালো। কেউ নেই। যেন হঠাৎই উদয় হয়েছে মেয়েটা। তার আসার কোনো শব্দই পায়নি মাসুদ। অবশ্য তার কানে শব্দ না আসার জন্য মেয়েটার পা টিপে টিপে আসা জরুরি ছিল না, কারণ পেছন দিকে ইঞ্জিনের গোঙানি একটু বেশিই। যথেষ্ট শব্দ করে হাঁটলেও কানে আসার কথা না।
এরপরে মাসুদের মাথায় আসলো তাকে হঠাৎই অচেনা একটি মেয়ে যেচে এসে কথা বলতে চাইবে কেন? সে কী পড়ে আছে তা মনে করলো একবার। নাহ, পোশাক-পরিচ্ছদে তাকে বেশ স্মার্টই লাগছে বোধহয়। তাহলে মেয়েদের যেচে কথা বলতে আসাটা বোধহয় যুক্তিযুক্ত।
এতোকিছু ভাবতে ভাবতে হঠাৎই তার মনে হলো, তাকে একটা প্রশ্ন করেছে মেয়েটা। উত্তর না দেয়া অভদ্রতা। তাই তাড়াতাড়ি করে বলল, ‘না এই তো, ঠাণ্ডা বাতাস তাই দাঁড়িয়ে আছি।’ অপ্রস্তুত ভাবটা এড়াতে পারলো না মাসুদ।
মেয়েটা এগিয়ে এসে রেলিং-এর ধারে দাঁড়ালো। বলল, ‘হ্যাঁ, ঠাণ্ডা বাতাস আমারও খুব পছন্দ। প্রাকৃতিক সব কিছুই আমার অনেক পছন্দ। তবে নদীর প্রতি আমার কোনো দুর্বলতা নেই। নদী কেবলই মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়।’
এবারও কিছুটা অপ্রস্তুত হলো মাসুদ। সে ভেবেছিল মেয়েটা বলবে নদীর প্রতি তার দুর্বলতা একটু বেশি। মাসুদ বলল, ‘কিন্তু তাই বলে নদীকে উপভোগ করার মধ্যে কিন্তু দোষের কিছু নেই।’
‘তা হয়তো নেই। কিন্তু তবুও নদী কেন যেন আমার ভালো লাগে না। নদী না থাকলেই বোধহয় ভালো হতো। কী দরকার ছিল নদীর?’
‘নদী না থাকলে প্রকৃতিই চলতে পারতো না। ভৌগোলিক....’ তাকে থামিয়ে দিয়ে মেয়েটি বলে উঠলো, ‘থাক থাক। আমি বিজ্ঞান অত বুঝি না। প্রকৃতির কী হতো না হতো তা জেনে আমার কাজ নেই। আমি শুধু জানি আমার নদী ভালো লাগে না তাই পৃথিবীতে কোনো নদী না থাকলেই ভালো হতো।’
মাসুদ আন্দাজ করতে পারলো নদী নিয়ে মেয়েটির কোনো ট্র্যাজেডি রয়েছে। কিন্তু এই সুন্দর পরিবেশে মন খারাপের কথা তুলতে ইচ্ছে করলো না তার। তাই সে কথা ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করলো, ‘নাম কী আপনার?’
‘এই প্রশ্নটা আপনার আরও আগে করা উচিৎ ছিল। কারো সাথে কথা বলতে গেলে তার নামই যদি না জানেন তাহলে কীভাবে কথা বলবেন বলেন? আপনি নিশ্চয়ই এতক্ষণ আমার ব্যাপারে মনে মনে যা ভেবেছেন সবকিছুতে আমাকে “মেয়েটি” বলে সম্বোধন করেছেন, তাই না?’
মাসুদ তৃতীয় দফা অপ্রস্তুত হলো। মেয়েটির ঠাস ঠাস কথায় তার মতো কথায় পটু মানুষও যেন হার মানছে। আসলে পরিস্থিতিই তাকে একটু হতবাক করে দিয়েছে। মাসুদ বললো, ‘না মানে শুরু থেকেই অন্য একটি বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছিল তো তাই জিজ্ঞেস করা হয়নি।’
মেয়েটি বললো, ‘সমস্যা নেই কোনো। আমার মেয়েটি শব্দটা ভালোই লাগে। শুনলেই কল্পনায় ভেসে ওঠে একটা রহস্যময়ী মেয়ের অবয়ব। আপনি জানে না মেয়েটি দেখতে কেমন, মেয়েটির স্বভাব-চরিত্র কেমন, তারচেয়ে বড় কথা, মেয়েটি কে। যাই হোক, আমার নাম অথৈ।’
‘সুন্দর নাম। আমি মাসুদ।’
‘আরে! আপনি মাসুদ হতে যাবেন কেন?’
‘মানে?’ একটু হতচকিয়ে গেল মাসুদ।
‘আপনি হচ্ছেন মানুষ। আপনার নাম হচ্ছে মাসুদ। আমি মাসুদ মানে হলো আপনি একটা মাসুদ। ধরেন আপনাকে জিজ্ঞেস করা হলো আপনি কী? আপনি কি মানুষ বলবেন নাকি মাসুদ বলবেন?’
‘উম, মানুষই বলবো।’
‘তাহলে? আমি মাসুদ কথাটা ভুল। এরপর থেকে ঠিক করে বলবেন।’
‘তাহলে কেউ যখন জিজ্ঞেস করবে আমি কে, তখন কী বলবো? আমি মানুষ?’
‘আবারও ভুল করলেন। আপনি কে এর উত্তর হচ্ছে আপনার পরিচয়। মানে আপনার নাম। কে আর কী-এর মধ্যে প্যাঁচ লাগিয়ে ফেলেন কেন?’ শেষ কথাটা বলার সময় যেন একটু ধমকের সুর টের পেলো মাসুদ। আপনমনেই হাসলো মাসুদ। অদ্ভূত এক পরিবেশে অজানা-অচেনা এক মেয়ের সঙ্গে এমন তর্কে জড়িয়ে পড়াটা রোমান্টিক গল্প লেখকদের জন্য গল্প লিখতে বেশ ভালো আইডিয়া হওয়ায় লেখকরা খুশি হয়ে উঠতে পারেন, কিন্তু মাসুদ লেখক না হওয়া সত্ত্বেও তার খুশির কোনো কমতি ছিল না। সে পুরো ব্যাপারটা বেশ উপভোগ করছে।
‘স্যার, চা!’ ক্যান্টিনের ‘ওয়েটার’ চা নিয়ে হাজির হলো। মাসুদ অথৈকে জিজ্ঞেস করলো, ‘চা খান আপনি?’
‘খুব একটা পছন্দ করি না। তবে এখন এই ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় খাওয়া যেতে পারে।’
ছেলেটাকে উদ্দেশ্য করে মাসুদ বললো, ‘আরেক কাপ চা নিয়ে আসো যাও।’
ছেলেটা চলে গেল।
তারপর অনেক্ষণ দু’জনেই চুপচাপ। মাসুদ ভাবলো, রেলিং-এর নিচে মশাগুলো অত্যচার শুরু না করলে হয়তো সারারাতই এখানে দাঁড়িয়ে কাটানো যেত। গরমও লাগছে না। আর মেয়েটার সঙ্গে কথা বলতেও ভালোই লাগছে।
তারপর, কোথায় যাচ্ছেন আপনি?’ বেশ কিছুক্ষণ নীরবতার পর জিজ্ঞেস করলো মাসুদ।
‘মামার বাড়ি।’
‘নিশ্চয়ই একা যাচ্ছেন না?’
‘আম্মু আর ছোট ভাইটা আছে কেবিনে। আমার ভেতরে দম বন্ধ হয়ে আসছিল তাই ঘুরতে বের হয়েছি।’
‘তাই! আমারও তো মা আর ছোট ভাই কেবিনে। ওরা ঘুমুচ্ছে। আমার ঘুম আসছিল না তাই লঞ্চটা ঘুরে দেখতে বেরিয়েছি।’
‘আপনাকে এভাবে যেচে এসে এসব জিজ্ঞেস করেছি তাই রাগ করেননি, তাই না?’
হাসলো মাসুদ, ‘রাগ করবো কেন? আমাকে দেখে কি মনে হচ্ছে আমি রাগ করেছি?’
‘আপনি রাগ করলেও আপনি সেটা দেখাবেন না আমি জানি।’
‘তাই? কেন?’
‘কারণ আমার সাথে কথা বলতে আপনি বিরক্ত হচ্ছেন না।’
(চলবে)
প্রথম প্রকাশ
====================================
সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। আগামী পর্ব পাবেন শিগগিরই।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছবির গল্প, গল্পের ছবি
সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত
বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!
কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে
সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে
আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?
এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন