+
২০১১ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ৭৫.০৮ শতাংশ যা গত বছরের থেকে ০৮ শতাংশ বেশি এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৯ হাজার ৭৬৯ জন যা গত বছরের থেকে ১০৭৬৫ জন বেশি। অভিনন্দন তোমাদের।
এইচএসসি পাশের পরের সময়টা হচ্ছে বাংলাদেশের একজন শিক্ষার্থীর জীবনের সবচেয়ে "গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত" নেয়ার সময়। এখনকার নেয়া সিদাধান্তটাই তাদেরকে পরবর্তী জীবনের লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যায়। তাই এই সিদ্ধান্তটি অনেক ভেবে চিন্তে নেয়া উচিত। আমি এমন অনেক দেখেছি যারা একমাত্র এই সিদ্ধান্তটি ভুল নেবার কারণেই এখন অসুখী জীবনযাপন করছেন এবং জীবনকে অভিশাপ দিচ্ছেন আর কপালের দোষ-দোষ বলে চিল্লাচ্ছেন! কিন্তু এখন তাদের আর কিছুই করার নেই যেহেতু আমরা বাংলাদেশে শিক্ষা লাভ করেছি (বিদেশের অনেক দেশে আমার জানা মতে অনেক ধরনের সুযোগ আছে)।
আমরা যে জিনিসটা ভুল করি সেটা হচ্ছে লক্ষ্য নির্ধারণ। আমি এটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি যে, যদি কেউ তাঁর লক্ষ্য স্থির করে সে অনুযায়ী একাগ্রচিত্তে প্রস্তুতি গ্রহণ করে তবে তাঁর সাফল্য অভিশ্বম্ভাবী। কিন্তু যারা বার বার লক্ষ্য পরিবর্তন করে তাদের পরবর্তীতে দুঃখ করা ছাড়া কিছু থাকে না। উপরে উল্লিখিত অভিশপ্ত মানুষদের মতোই হয় তাদের জীবন।
আমি এখন যে কথাগুলো বলবো তা শুধু মেডিকেলে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্যে নয় সকল বিষয়ের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্যে প্রযোজ্য।
আমি মনে করি, যদি কারও ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা থাকে তবে তাকে প্রথমে সরকারি মেডিকেলে চান্স নিতে হবে আর এজন্য কঠোর অধ্যাবসায়ের কোনো বিকল্প নেই।
যদি সে কোনো কারণে প্রথমবার উত্তীর্ণ না হতে পারে তবে তাকে দ্বিতীয়বার চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে তাকে গতবারের থেকে দ্বিগূণ পরীক্ষার্থীর সঙ্গে পাল্লা দিতে হবে যা খুব কঠিন কাজ। তাই সবারই উচিত প্রথমবারই তার কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠানে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করা। তদুপরি যদি না পায়, তবে সামর্থ্য থাকলে প্রাইভেট মেডিকেলে ভর্তি হয়ে তার ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা পূরণ করা ইচিত। কিন্তু এটা বাস্তবতা যে এই সামর্থ্য আমাদের দেশের অধিকাংশ পরিবারেরই নেই । তখন বাধ্য হয়ে সেসব ছেলেমেয়েদেরকে তাদের স্বপ্নকে মাটি দিয়ে অন্য কোনো বিয়য়ের ওপর পড়তে হয়। তথাপি কিছু কষ্ট হলেও সেসব পরিবারের উচিত তাদের ছেলেমেয়েদের ইচ্ছা পূরণ করা;অন্তত ভবিষ্যতে যেন তারা দোষারোপ করতে না পারে। আর ছেলেমেয়েদেরও,যদি সুযোগ থাকে, একটু চাপ-চুপ দিয়ে বুঝিয়ে (তুমি টিউশনি বা পার্ট-টাইম চাকরি করে টাকা উপার্জন করবে, তাদের উপর থেকে চাপ কমানোর চেষ্টা করবে এটা বলতে হবে, যেভাবে হোক মানানোর চেষ্টা করবে) পরিবারকে রাজি করানো উচিত। নিজেকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, টিউশনি বা পার্ট-টাইম চাকরি করে টাকা উপার্জন করতে হবে, পরিবারের উপর থেকে যত পারা যায় চাপ কমানোর চেষ্টা করতে হবে, পরিবারের কস্টকে তোমায় বুঝতে হবে। এটা কখনোই ভুলে যাওয়া যাবেনা যে তোমার পরিবার তোমার জন্যে অনেক কষ্ট করছে।
একথাগুলো সম্পূর্ণই আমার। আমর জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছি। যদি কেউ এখান থেকে কোনো ধরণের অনুপ্রেরণা বা সহযোগিতা পায় তবেই আমার সার্থকতা।