পাঁচ তারা সোনারগাঁও হোটেলের সামনে ভিআইপি রোডে প্রতি ১২টা লেবু বিক্রি হয় দশ টাকায়। দেশের বাজারে এর চেয়ে কিছু সস্তা আর আছে কীনা, তা জানা নেই (পোষ্ট লেখিয়ে শওকত হোসেন মাসুম বাকিটা বলতে পারবেন। তিনি কয়েকদিন আগে প্রথম আলোতে বাজার বিষয়ে প্রধান সংবাদ লিখেছেন, দুইদিন ধরে গোটা দশেক সংবাদের সম্পাদনাও করেছেন। নিজের লেখাটাও ব্লগারদের জন্য পোষ্ট হিসাবে দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি লেবুর রসের দাম এত কম তা বলেননি। "মন্তব্য করলাম-খন্ডিত ভাষন")।
আমাদের দেশে অবশ্য আরো একটি জিনিস, চোখের পানি নাকি খুব সস্তা। কাকতালীয়ভাবে কোনো কোনো এলাকায় চোখের পানিকে আবার লেবুর রস বলে ব্যঙ্গ করা হয়। তবে লেবু বেশি চিপলে নাকি তেতো হয়। ফলে আর চিপতে চাই না। বরং তার চেয়ে "অন্য কিছু চিপলে" হয়ত কোনো ফল হতে পারে (ব্লগাররা ক্ষমা করবেন, তবে নিশ্চয় সে চেষ্টাও সবার আছে.. হা হা হা..)।
অবশ্য বেশি চিপে এমনিতেই দেশের রাজনীতি তেতো হয়ে গেছে। আর নেতা-নেত্রীদের আচরন, হম্বি-তম্বি, যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় যাওয়া বা ধরে রাখার প্রতিযোগীতা গত অক্টোবর মাসে দেশের মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত করেছিল। যার ফল হয়েছে মাবুদ এর (সৃষ্টিকর্তাকে মাবুদ বলে সম্বোধন করা হয়, যিনি সব নিয়ন্ত্রণ করেন। এখানে মাবুদ রূপক অর্থে ব্যবহৃত) দরবার। মানুষও এই মাবুদদের সমর্থন করেছে তারও একটা কারণ তেতো রাজনীতি।
কিন্তু এই উর্দিপরা মাবুদদের নতুন খেলাও মানুষের আর ভালো লাগছে না। দলভাঙ্গা, নতুন দল (দোকানের মত) খোলা এখন খুবই সহজ (আসলে এখন সবতো কাগজে বাঘ, নির্বাচন হলে ভোটে দেখা যাবে "নৌকো না ধানের শীষ" না অন্য কেউ। তবে এই মার্কা থাকবে কীনা তা নিয়েও সংশয় আছে। আর এ নাটকের শেষ দৃশ্যে কি হবে তা সবই জানেন আমাদের ওই "মাবুদরা")। এই যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের (ভারতের বিভিন্ন সংবাদপত্রের ভাষায় তদারকি সরকার) সময় দেশে জরুরী অব্স্থা রয়েছে তার মধ্যেই দেখি নতুন নতুন দল হচ্ছে (বি. দ্র. মাবুদদের সমর্থন আছে, তাই জরুরী অবস্থা এক্ষেত্রে কার্যকর নয়)। সংস্কারের নামেও দল ভাঙ্গা-গড়ার কত ফত (পথ)। রাজনীতিতে বলি হওয়া কর্ণেল (অব.) কলি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের নাতি, নাতি বলে কাছে ডাকা কাউধরি (ইংরেজি উচ্চারণ ব্যঙ্গ করে চৌধুরী না হয়ে কাউধরি), রাজনীতির কৌতুক, দুর্নীতিবাজ (প্রকৃত অর্থে যিনি বাংলাদেশের রাজনীতিকে দূর্বত্তায়ন করেছেন), লম্পট খ্যাত সাবেক জেনারেল হু ম, তার মুখপুড়ি, আনিসুল ই. মাহমুদ, বিএমপির (যশোর এলাকাতে বসবাসরত কিছু বরিশালের রিকসা চালক কখনো বিএনপিকে বিএনপি বলতে পারে না, তারা বলে বিএমপি) মন্নান, অব. জেড খান, আমলিগের (উপরের ওই একই ব্যক্তিদের উচ্চারণে আওয়ামী লীগ উয়ে উঠে আমলিগ) নায়ক রাজ (বাকশালের শেষ পতাকাবাহী), তাফারেল (নিশ্চয় মনে আছে বার্জিলের বিশ্বকাপ টিমের গোলকিপার তাফারেলের কথা), রঞ্জিত বাবু, আ. হো. আ., (যাকে বলা হয় ছাত্রলীগ খায়ছি, যুব লীগ খায়ছি আওয়ামী লীগ খামু, আমি আ. হো......) আর বাংলাদেশে কোরাইশ বংশের একমাত্র ও শেষ উত্তারাধিকার (যদিও ডেইলি স্টারে মাহফুজ আনাম লিখেছেন নির্দেশিত অথনীতির মত নির্দেশিত রাজনীতিও চলে না)। এদের বেলিল্লাপনায় দেশের মানুষ এরই মধ্যে তেতো স্বাদ পেয়ে গেছে। আর ইনুসের (ব্লগাররা নিশ্চয় টেলিভিশনে মোবাইল কোম্পানি একটেল ইজি লোডের বিজ্ঞাপনে এক কেবলা {বোকা} ইনুসের সঙ্গে তুলনা করবেন না। তাহলে বেল {নো-বেল} কিন্তু আর খুজে পাওয়া যাবে না) রথযাত্রা তো মাঠেই মারা গেছে (এটাকে বলা চলে ভুমিতেই সলিল সমাধি, পানিতে না হয়ে)।
তদারকি সরকারের দায়িত্ব ছিল নির্বাচনের। কিন্তু যে পরিস্থিতিতে তারা দায়িত্ব নিলেন তাতে মাবুদদের ভুমিকাকে মানুষ শান্তি ও স্বস্তির জন্য স্বাগত জানায়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদের কথাতে সাময়িক খুশি ছিল মানুষ (যদিও তারা ভুলে গেছে হু ম '৮০ সালে একই কথা বলে ক্ষমতায় এসেছিল। অনেককে সাজা দিয়েছিল। আর এই হু মই দেশের দুবৃত্তায়নে সবচেয়ে বেশি দায়ী)। তারপরও মানুষের সোজা-সাপটা চাওয়া ছিল মাবুদরা নিরপেক্ষভাবে শীর্ষ ২০০-২৫০ (অংকটা উদাহরণ হিসাবে বলা) জনকে দুর্নীতির দায়ে সাজা দিয়ে অনুপযুক্ত (ডিসকোয়ালিফাই) করে নির্বাচন দিয়ে দেবে। তাতে হাসি না (অনেকেই যাকে ঝগড়াটে মনে করে), খালি খা(খাওয়া-দাওয়াতো তার আমলেই সবচেয়ে বেশি হলো গত পাঁচবছরে), যেই বাদ পড়ে পড়ুক, যে থাকে থাকুক। আমলিগ কিভাবে নির্বাচন করবে, বিএমপি কাদের দিয়ে দল সাজাবে তা ওদের তৃতীয়-চতুর্থ গ্রেডের নেতারা ভেবে ঠিক করুক। তাতে মাবুদের নাক না গলালোর কি দরকার।
কিন্তু, হলো না গো হলো না, সইগো...। যেন আদালতের পেশকারের ডাক এসেছে.. পচা মাল হাজির। তাফারেল, মন্নানরা কি দেবতা, পাপ স্পর্শ করেনি কোনো দিন। আর আরবের কোরাইশ বংশের শেষ ব্যক্তিতো "ওহি" নিয়েই নাজিল হয়েছেন!
সুতরাং সেই তেতো! আবারও ওই লেবুর মতই তেতো করে দিল মাবুদরা। হয়তবা এটাও এক নীল নকসা ( শংকা, এক রাতে--- সব প্রচেষ্টায় ব্যর্থ, তাই জাতির স্বার্থে আস-সালামুআলাইকুম ....)!
ফখরুদ্দীন আহমদ কেন্দ্র (সেন্ট্রালকে কোলকাতায় কেন্দ পর্যন্ত বলে ছেড়ে দেয়) ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন। দেশের মানুষের ধারণা ছিল হয়ত এবার জিনিসপত্রের দাম কমাতে সরকার ব্যবস্থা নেবে। সাধারণ মানুষ একটু স্বস্তি পাবে। কিন্তু সে গুড়ে কতটা বালি পড়েছে তা বলতে পারবে বাজার গবেষকরা (শওকত হোসেন মাসুমের প্রথম আলোর প্রতিবেদনগুলো ও পোষ্টে আগুনের আঁচ রয়েছে স্পষ্ট)। তবে যাই হোক ফখরুদ্দীন বাবুর্চির খেতাব তার পাঁকাপাকি। আর তার খাবারের দাম যে, যোকোনো সময়ের চেয়ে বেশি তার প্রমাণ রয়েছে সরকারের মূল্যস্ফীতির উপাত্তে। অবশ্য হকার উঠিয়ে দিয়ে যে হলিডে মার্কেট গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে তার নামও ইতিমধ্যেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে "ফখরউদ্দিন মার্কেট" হিসাবে।
গতকাল সোমবার বিডিআর (যাদের দায়িত্ব দেশের সীমান্ত রক্ষা করা তারা এখন জনগণ ও পণ্যমুল্যের মধ্যে যে সীমান্ত হয়েছে, তা রক্ষায় ব্যস্ত) সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে ঘোষণা দিয়েছে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে তারা সারাদেশে দুইশ' বিক্রয় কেন্দ্র খুলবেন। আমরা অপেক্ষায় থাকি চাঁদ দেখার, যার পরের দিনই ঈদ, মুসলমানদের আনন্দের দিন!