somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২০২১ এর সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি: গ্রামে ফিরে যেতে পারা

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গ্রাম ছেড়েছি সেই কবে:(! ২০০৩ সালে মনে হয়।

চট্টগ্রামের এক প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম ও বড় হওয়া আমি গ্রাম ছেড়েছি '০৩ এর দিকে। তখন আমি মাত্র অষ্টম শ্রেণী পাস করলাম গ্রামের হাই স্কুল থেকে। আমার বড় ভাই আর আমি এক ক্লাস এদিক ওদিক, একই স্কুলে পড়াশুনা করি। স্কুলের শিক্ষকেরা সবাই চট্টগ্রামেরই। নিজ গ্রামের ১ জন, পাশের গ্রাম থেকে আসেন 8-৫ জন শিক্ষক, পাশের থানা থেকে আসেন ২ জন, পাশের জেলা থেকে আসেন ১ জন শিক্ষক; সবমিলিয়ে "আমরা আমরাই তো" লেভেলের একটা ভাব। স্কুলে ছাত্র শিক্ষক সবাই চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে, পড়াশুনা না পারলে আঞ্চলিক লেভেল এ মাইর দেয়। আলাদা একটা ফিলিংস।

১.৪ কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে যেতাম, আবার হেঁটে হেঁটে বাড়িতে চলে আসতাম স্কুল শেষে। স্কুলের কাছেই ছিল "চিত্তিয়ের দোকান"। দোকানদারের ভালো নাম চিত্ত, অথবা চিত্তরঞ্জন। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক হিসাবে কোনো নামকেই বইয়ের ভাষায় ডাকা হয় না । কিছুটা বিকৃতি থাকবেই। সেই হিসেবে দোকানটা আমাদের কাছে "চিত্তিয়ের দোকান" নামেই পরিচিত। টিফিন ব্রেক এ দোকান এ যাইতাম, বেশির ভাগ সময় বাটার বন ছিল আমার টিফিন। মাঝে মাঝে স্বাদ বদলানোর চেষ্টা করতাম। তবে ওই দোকানে আইটেম মুটামুটি ফিক্সড। বাজে মালের দোকানে নতুনত্ব আশা করা বোকামি। অন্তত সেই বয়সে বোকামি ছিল। এখন কি অবস্থা জানি না।

প্রাইমারী স্কুলে আমি কখন রোল এক হতে পারিনি। আমার বন্ধু রাসেল সবসময় রোল এক হতো, আমি দুই অথবা তিন এ ঘুরাঘুরি করতাম। ক্লাস ফাইভ পাস করার পর রাসেল উপজেলা শহরের ভালো স্কুলে চলে গেলো। সেই সুযোগে ক্লাস সেভেন আর এইটে আমি রোল এক ছিলাম। জীবনের এই দুইটা বছর আমি "টপার" ছিলাম শুধু , আর কখনো টপ এ যাইতে পারলাম না। বন্ধু রাসেল, তোকে অনেক ধন্যবাদ। তোর সহযোগিতা ছাড়া কখনো এই দুইটা বছর নিজের করে নিতে পারতাম না।

যাহোক, গল্পের লাইনেই থাকি। হাই স্কুলের জীবন আমার খুব আরামেই যাচ্ছিলো। এর মধ্যে আমাদের গ্রামে এক নতুন ছেলে আসলো। গ্রামে সাধারণত "নতুন" কোনো ছেলে আসে না। গ্রাম এলাকায় কেউ নিজের এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় বাড়ি কিনে না। সেই হিসেবে নতুন কাউকে পাওয়াটা খুব অস্বাভাবিক। যে ছেলে আসলো সে আসলে নানার বাড়িতে থাকে। কোন এক ঘটনাক্রমে সে তার বাপের বাড়িতে আসলো কিছুদিনের জন্য। সম্পর্কে আমার চাচা লাগে, বয়সে সমান। একই ক্লাসে পড়ি আমরা, তবে ভিন্ন স্কুল এ। আমি পাবলিক রিলেশনস এ কখনোই ভালো ছিলাম না, তখন তো একেবারে অন্তর্মুখী। শাখাওয়াত এর সাথে আমি তখন কথা বলিনি। ওরা চলে যাওয়ার কিছুদিন পর জানতে পারলাম, শাখাওয়াত "ট্রাস্ট" এ পড়াশুনা করে। ট্রাস্ট এর নাম আমি আগে কখনো শুনি নি, তবে এটা নাকি খুব ভালো স্কুল, আশেপাশের সব এলাকা হিসেবে করলে এক নাম্বার এ ট্রাস্ট।

তখন আমি ক্লাস এইটে। মাত্র বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হল। শান্তিতে শীতের দিন উপভোগ করছি। হটাৎ আমার বড় ভাই এসে বললো ট্রাস্ট এ ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছে ক্লাস নাইনে। সে আমার জন্য ইতোমধ্যে ৪০ টাকা দিয়ে ভর্তি ফরম কিনে নিয়ে আসছে। কিভাবে কখন আনলো আমি কিছু জানি না। ৪০ টাকা তখন আমার কিংবা ভাইয়ার পকেটে থাকার কথাও না। তবে আমার ভাই ম্যানেজ করতে পারতো তখন থেকেই। যেহেতু ভর্তি পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করা হয়ে গেলো, ভাবলাম পরীক্ষাটা দিয়েই আসি। আর কিছুদিন পরে যখন ক্লাস শুরু হলো, দেখি আমি আর শাখাওয়াত একই ক্লাস এ। খুব ভালো লাগছিলো ঐদিন ক্লাস এ অন্তত একটা পরিচিত চেহারা পেয়ে।
আমার দাদার বাড়ি থেকে ট্রাস্ট অনেক দূরে। ওখানে যাওয়ার জন্য কোনো গণপরিবহনের ব্যবস্থা ও নাই। কিছুদিন সাইকেল এ করে যাওয়া আসা করেছিলাম। আমার ছোটচাচা সাইকেলটা দিয়েছিলো আমাকে। পরে কোনো এক কারণে শাস্তিস্বরূপ সাইকেলটা আবার নিয়ে নেন। হেঁটে হেঁটে তো এই নতুন স্কুলে যাওয়া কোনোভাবেই সম্ভব না। তখন আমার নানা বললো আমাকে নানার বাড়ি চলে যেতে। পাশের ইউনিয়ন এই নানার বাড়ি আমার। নানার বাড়ি থেকে নতুন স্কুলে যাওয়া খুব সহজ। ১০ মিনিট হেঁটে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক এ যাবো, সেখান থেকে টেম্পুতে করে স্কুলের সামনে নেমে যাবো। এই হলো প্ল্যান। আমার আম্মু অনেক ভেবে চিন্তে দেখলেন আপাতত এর চাইতে ভালো কোনো বুদ্ধি নাই। এইদিকে আমিও মহাখুশি। নানার বাড়িতে মজা সবসময় বেশি। আমার ছোট মামা থাকেন একটা দেউড়ি ঘরে। আমি উনার সাথে থাকবো। মামার অনেক ভালো গানের কালেকশন, বড় একটা ক্যাসেট প্লেয়ার ও আছে। সর্বোপরি মামারা আমার চাচাদের মত গোঁড়া না।
একদিন সব জামাকাপড় নিয়ে নানার বাড়ি চলে গেলাম। তার কিছুদিন পর আমার মা উপজেলা শহরে চলে গেলো আমার বড় ভাইকে নিয়ে। আমার ছোট বোনকেও আমার নানা নিয়ে আসলো। আমার বাবা আয়-রোজগারের চেষ্টা করতে এই শহর ওই শহরে ঘুরাঘুরি করছে। আমাদের ছোট ফ্যামিলি টুকরা টুকরা হয়ে গেলো সেই ২০০৩ সালে। সেই যে গ্রাম ছাড়লাম কবে, ওভাবে আর কখনো ফিরে যাওয়া হয়নি।

কত বছর পার হয়ে গেলো, কত কিছু ঘটে গেলো মাঝে,
চোখের মনিতে ভাসে গ্রামের সেই ছবি, মরিচ ক্ষেতে নিড়ানি দেওয়া
আলু ক্ষেতে পানি, সারি সারি হলুদের ফুল, খেজুর গাছের রস
দাদার সাথে জাল বেয়ে মাছ ধরা নিজেদের পুকুর থেকে
দিনশেষে হাত পা ধুয়ে পড়তে বসা, রক্ত রাঙা সাঁজে।

এর মধ্যে অনেক ঘটনা ঘটে গেলো। স্কুল পাশ করে কলেজে গেলাম উপজেলা শহরে। কলেজ পাশ করে ডিগ্রি নেয়ার উদ্দেশ্যে গেলাম দেশের অন্য প্রান্তে। চট্টগ্রামে ফেরত আসলাম ২০১২ সালে। চট্টগ্রামে ফিরেই পরিবার পুনর্গঠনে মনোযোগী হলাম। ইতিমধ্যে আমার বড় ভাই গেলো মধ্যপ্রাচ্যে, ভাবি আমাদের সাথে চট্টগ্রামেই। এতদিনের অগোছালো সংসার, তার উপর উত্তরাধিকার সূত্রে চাচাদের সাথে মন কষাকষি জমিজমা নিয়ে। একদিকে সামলাই তো আরেকদিকে বেসামাল। আব্বুকে বাড়িতে থাকতে হচ্ছে বাড়ির দখল বজায় রাখতে, আমাদেরকে শহরে যেতে হচ্ছে আমার চাকরি বজায় রাখতে। এক হওয়া আর হলো না।

২০১৪ সালের শেষের দিকে উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশগমনের একটা সুযোগ পেলাম। আমার ছোটবোন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার সুযোগ পেলো। মনে হলো ভালো দিনের শুরু হওয়া শুরু করলো। ২০১৫ এর জানুয়ারিতে দেশ ছাড়লাম আমি। পরিবারের বাকিরা বহদ্দারহাটের বাসা হাটহাজারী নিয়ে গেলো। এবার আমাদের ছোট পরিবারের সবাই এক জায়গায়, শুধু আমি ছাড়া।

২০২০ এ দেশে যাবো বলে কর্মস্থল থেকে ছুটির অনুমোদন নিলাম। অনেক বছর পর প্রথমবারের মতো আমরা আবার একত্রিত হব। ভাবতেই যেন কেমন কেমন লাগছে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা অন্য হিসাব করে রেখেছেন সে কি আর আমি জানতাম! করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী প্রকোপ শুরু হলো মার্চ - এপ্রিলের দিকে। আমার দেশে ফেরার পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত করতে হলো।
আমার আম্মু খুব বুদ্ধিমতী একজন মানুষ। আব্বু আম্মু দুইজনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ওরা হাটহাজারীর বাসা থেকে গ্রামের বাড়িতে চলে আসলো আইসোলেশান এ থাকার জন্য। ছোটবোনের মাস্টার্সের কাজ শেষ হয়নি দেখে সে তখনই বাড়িতে আসতে পারে নি। আমার বড়ভাই তার কর্মস্থল কক্সবাজারে আটক।

মাঝে মাঝে এইসব অবস্থায় নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়। দুইজন বয়স্ক মানুষকে সমাজ থেকে আলাদা রাখার জন্য গ্রামের বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। কিন্তু তাদের ৩ সন্তানের কেউই কাছে থেকে সেবা শুশ্রূষা করতে পারছে না। এর চেয়ে খারাপ লাগা আর কিছু থাকতে পারে না। খুব কষ্ট পেতাম তখন। দুই টুকরা জমির আশায় আমার চাচারা তখনও গ্রাম্য রাজনীতি করে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে আমার বাবা-মা'কে ওসব স্বার্থান্বেষীদের পাশেই দিন কাটাতে হচ্ছে। কি নিয়তি!
যাহোক, যেহেতু গ্রামেই নিরাপদে থাকতে পারছে, আমার আম্মু ঠিক করলো গ্রামের বাড়িটা একটু মেরামত করবে। পাশে নতুন করে দুইটা রুম ও বানাবে আমরা দেশে গেলে থাকার জন্য। একটু একটু করে পুরো বছর জুড়েই তিনি বাড়ির কাজ করলেন। ২০২১ এর শুরুর দিকে প্রথম বারের মতো আমার মা-বাবা "নিজবাড়ি"তে ঘুমানোর শান্তি পেলেন। তাদের মনে কিরকম অনুভূতি হচ্ছিলো আমি বলতে পারি না, তবে আমি মনে অনেক স্বান্তনা পাচ্ছিলাম। পাকা দালান হয়নি তো কি হয়েছে, নিজের তো বাড়ি হলো অবশেষে।
ছোটবেলায় বাড়িছাড়া হওয়ার অনেক অসুবিধা, তারমধ্যে একটা অসুবিধা আমাকে বারবার খোঁটা দেয়। এ বাড়ি ও বাড়ি, এই শহর ওই শহর, এই বাসা ওই বাসা করতে করতে আমার অনেক জিনিস হারানো গিয়েছে, অনেক জিনিস ইচ্ছা করেও রাখতে পারিনি, অনেক জিনিস রাখতে পারবো না বলে সংগ্রহই করিনি। সবসময় আমার মনে হতো, আহা, নিজের একটা বাড়ি থাকলে আজ কত সুবিধা হতো। আমি নিশ্চিত আমার মা ও একই ভাবে চিন্তা করে। একই ভাবে আফসোস করে।
এখন অন্তত সেই আফসোস কিছুটা হলেই প্রশমিত হবে। হোক না সে শেষ বয়স, তারপর ও তো নিজের বাড়িতে ঘুমাতে পারছে। গ্রামের বিশুদ্ধ বাতাস, নিরিবিলি আবহাওয়া, পাশের খাল থেকে নিয়ে আসা তরতাজা মাছ, প্রাকৃতিক ভাবেই উৎপন্ন শাক-সবজি, অবসরে এর চাইতে ভাল আর কি হতে পারে।

২০২১ এর শুরুতেই ছোটবোনের বিয়ে ঠিক হল। দেশে যাওয়ার প্রচণ্ড ইচ্ছা, সবার সাথে দেখা করবো, বিয়েতে হৈহুল্লোড় হবে, চাচাতো-মামাতো-খালাতো ভাইবোনের সাথে আনন্দ করবো। খুব ইচ্ছা। কিন্তু বাড়িতে বাবা-মা'র কথা চিন্তা করেই যেতে পারলাম না। বিমান চলাচল যদিও বা কোনোভাবে বন্ধ না হয়, এতগুলা এয়ারপোর্ট ঘুরে দেশে গিয়ে বাবা-মা'কে যদি আমি করোনাভাইরাস এ আক্রান্ত করি সেই ভয়েই আর দেশে গেলাম না। আমরা ৩ ভাইবোনের মধ্যে শেষ বিয়ের আয়োজনে আমি থাকতে পারলাম না। আমার বড়ভাইয়ের বিয়ে হয়েছিল ২০১২ সালে। যেহেতু চট্টগ্রাম আর সিলেট এর মধ্যে বিয়ে হচ্ছে, আর আমরা অতবড় আয়োজন করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না, বড়ভাইয়ের বিয়েটা পারিবারিকভাবেই হয়েছে ছোট পরিসরে। ২০১৭ সালে আমার বিয়ে হয়। তখন মাত্র মাস্টার্স এর পড়াশুনা শেষ করে ২৭ দিনের ছুটিতে দেশে গেলাম, কথা ছিল আকদ-কাবিন হবে শুধু, বিয়ের আয়োজন করে বৌ তুলে আনা সব পরে হবে। তখনও ছোট পরিসরে শামীমের সাথে আমার বিয়ে হয়। এর পর শামীম আমার কাছে চলে আসে ২০১৯ সালে। বিয়ের আয়োজন করার সময় আর হয়ে উঠে নি। এখন আমাদের ৩ ভাইবোনের শেষ জনের বিয়ে হচ্ছে ধুমধাম করে। কিন্তু আমি যেতে পারছি না। কপাল আমার অনেকদিয়েই ভালো, তবে পরিবারের সাথে একসাথে হয়ে ছোটবেলার সে অবর্ণনীয় শান্তির দেখা পাওয়ার ক্ষেত্রে আমার কপাল সবসময়ই খারাপ।

একুশ সালের মার্চ এ করোনার টিকা আসা শুরু হলো। আমি আর শামীম টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিলাম এপ্রিল মাসে। এর মধ্যে বিমান চলাচল ও কিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করলো। দেশে যাওয়ার টিকেট করলাম মে মাসের শুরুতেই। চাকরিতে নতুন বস অনেক ভালো। বললো যতদিন ছুটি জমা হয়েছে সব ছুটি অনুমোদন করবে। প্রায় দেড় মাসের মতো ছুটি পেলাম। আহা! কি শান্তি।

অবশেষে বাড়ি ফিরলাম এই বছর। ২০২১ সালে। ছুটির বেশির ভাগ সময় বাড়িতে কাটাইছি। সবাই বলতেছিলো, শহরে বাসা থাকা সত্ত্বেও কেন গ্রামের এই অনুন্নত পরিবেশে সময় কাটাচ্ছিলাম। তাদেরকে তো আর বুঝিয়ে বলতে পারবো না কেন গ্রামের এই পরিবেশ আমার স্বপ্নে ভাসে। তাদেরকে তো ব্যাখ্যা দিতে পারবো না কেন গ্রামের বাড়িতে আমি শান্তিতে ঘুমাতে পারি। তাদেরকে কিছু বলতামই না। কি দরকার! ওরা তো জানে না শহরের যান্ত্রিকতা মানুষকে সুখ দেয় কিন্তু শান্তি দিতে পারে না।

এবারের ছুটিতে বাড়িতে সবাই ছিলাম একসাথে। রোজার ঈদের ২ দিন আগে করেই বাড়ি গেলাম। যাওয়ার আগে কাউকে বলিনি। শুধু ছোট মামা আর ভাইয়া জানতো। অনেক বছর পর সবাইকে নিয়ে গ্রামে ঈদ করলাম। ঈদের পর আরো মাসখানেক ছিলাম। গরম এ একটু কষ্ট পাইছি, কিন্তু সপ্তাহখানেক পরেই শরীরে সয়ে গেছে। আমার বড় ভাইয়ের চাকরি থেকে লম্বা ছুটি পাইছে মহামারীর কারণে। ছোটবোন এর শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য মহাসড়কে উঠা লাগে না। সে হিসেবে রাস্তায় লকডাউন হলেও সে ভেতর দিয়ে আসা যাওয়া করতে পারে। সে এসে ছিল বেশ কিছুদিন। মহামারীর কারণে সব স্কুল কলেজ বন্ধ। ছোট ছোট কাজিনরা সবাই বাড়িতে। তাদের সাথে আড্ডা আর ঘুরাঘুরি করেই দিন শেষ। সবার সাথে একসাথে অলস সময় কাটানোর এই ফিলিংস বলে বুঝানো সম্ভব না, লেখার ভাষাও খুঁজে পাচ্ছি না।
তারপরেও ভাবছি আরেকদিন বসবো। লিখবো কেন গ্রামের বাড়িতে কাটানো এই এক মাস আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলোর মধ্যে অন্যতম হয়ে থাকবে। আজকে থাক। আজ শুধু লিখতে চেয়েছি, ২০২১ এ আল্লাহর কাছ থেকে পাওয়া সবচেয়ে বড় উপহারের কথা। কিভাবে এই উপহার উপভোগ করেছি, সেটা আরেকদিন লিখবো।

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৪০
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×