somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সময় কাটাতে কাঠমিস্ত্রীর কাজ

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিশের বিশে করোনার হামলার পরপরই আমাদের অফিস থেকে বাসায় কাজ করার অনুমতি দেয়। তিন বছর মাঠে-অফিসে টানা খাটনি দেয়ার পর তখন মাত্র নতুন একটা পজিশনে কাজ শুরু করলাম। পুরোটাই "ডেস্ক জব", তার উপর ওয়ার্ক ফ্রম হোম। আরাম আর আরাম। তখন হাতে অফুরন্ত সময়, কিন্তু বাইরে লকডাউন। অফিসের কাজ শেষে বিকেলের সময় আর কাটে না। রাতে ঘুমাতে ঘুমাতে ঘুমের উপরও বিরক্তি চলে এসেছিল। কিছুদিন আগে বাসা বদলানোর সময় পোষা কচ্চপটাকেও বিদায় জানাতে হয়েছিল। কচ্চপটা থাকলে তার পেছনে কিছুটা সময় ব্যয় হত। এখন সে সময়ও পুরো অলস। "কি করি আজ ভেবে নাই" অবস্থা আমাদের। অনেক ভেবে স্বামী-স্ত্রী মিলে ঠিক করলাম আমাদের হাতের কাজে আবার মন দেয়া উচিত। পুরোদমে কাঠমিস্ত্রীর কাজে হাত দিলাম তখন থেকেই।

পুরোদমে কাঠমিস্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই আমি ছোটখাট ক্রাফট প্রজেক্ট করতাম। একটা একটা করে যন্ত্রপাতির ভান্ডার বড় করতেছিলাম। ল্যাপটপের স্ট্যান্ড, কচ্চপের একুরিয়ামের স্ট্যান্ড, কাঠিবিড়ালী আর পাখির আড্ডাখানা, জাপানীজ ডাইনিং টেবিল, এইগুলা ছিল আমার প্রথম দিকের প্রজেক্ট। এই প্রজেক্টগুলোতে ফিনিশিং এর দিকে তেমন বেশি নজর দিতাম না। শক্তপোক্ত হলেই প্রজেক্টের ইতি টানতাম। যখন বাসায় অফিসের কাজ করা শুরু করলাম, তখন ভাবলাম একটা বড়সড় প্রজেক্টে হাত দেয়া দরকার। বেশ কিছুদিন চিন্তা-ভাবনা করে একটা নৌকা বানাবো বলে ঠিক করলাম। স্টাইরোফোম বেইসের উপর ইপোক্সি-ফাইবার গ্লাসের আস্তরন দেয়া একটা নৌকাও বানিয়ে ফেললাম বেশ কয়েকমাস সময় নিয়ে। নৌকাটা ৩ জন মোটামুটি সাইজের মানুশ বহন করতে পারবে বলেই আমার বিশ্বাস। তবে আমার সাথে লোড টেস্ট করার জন্য এখন কাউকে পাইনি। এখন আমার হোম-অফিস কক্ষে শোভা পাচ্ছে একটা ছোটখাট সাম্পান। আজকাল ভিডিও কলে সবাই জিজ্ঞেস করে কেমনে এই জিনিস বানালাম, আর আমি খুব উৎসাহ নিয়ে এই নৌকার ফিচার বর্ননা করি।

এই বছরের জুন মাস থেকে অফিসে ফেরত যেতে হচ্ছে আমাকে। আরামের দিন শেষ। এর পরে বেশ কিছুদিন ধরে কোন প্রজেক্ট করিনি। গতসপ্তাহে হঠাত করে মনে হল, একটু আধটু কাজ করা দরকার। বিকেলগুলো খুব নীরস হয়ে যাচ্ছে। মনে মনে ভাবলাম, কচ্চপের একুরিয়াম নাহয় নাই এখন, ছোট একুরিয়ামটা তো সেটাপ করা যায়। ১০ গ্যালনের একুরিয়ামটা পরে আছে ঘরের কোনে সেই কবে থেকে। ভাবলাম, এই একুরিয়ামের জন্য একটা দৃষ্টিনন্দন স্ট্যান্ড বানানো দরকার। স্ট্যান্ড ডিজাইন আর বানাতে সপ্তাহখানেক, সেটাপ করতে আর এক সপ্তাহ। দুইসপ্তাহের আলসেমি দূর করার উপায় পেয়ে গেলাম।

গত সপ্তাহ ধরে ইউটিউবে আইডিয়া অনেক খুজলাম একটা সুন্দর স্ট্যান্ডের জন্য। মনের মত কিছু না পেয়ে নিজেই একটা আইডিয়া দাঁড় করালাম। আইডিয়াটা তেমন খারাপ হয় নি, বাসার গিন্নির অনুমোদন পেলাম কাজ শুরু করার জন্য। আজ সকালে পাশের হার্ডওয়ার দোকানে গিয়ে কাঠ নিয়ে আসলাম পরিকল্পনা মত। দুপুরে খেয়ে দেয়ে কাজ শুরু করলাম। বিকেলে পাঁচটার মধ্যেই স্ট্যান্ডের আসল কাজ শেষ।

প্রথম দেখাতে তেমন খারাপ লাগছে না। আসলে মডেলের চাইতে বাস্তবে দেখতে এটা বেশি সুন্দর লাগছে আমার। মডেলের একটা ছবি দেই, আপনারাই বলুন কোনটা দেখতে ভাল লাগছে।



যাহোক, স্ট্যান্ডে এখনো ফিনিশিং করা বাকি। কালকে থেকে তো অফিস শুরু। মনে হয় না, আগামী শনিবারের আগে ফিনিশিং এ হাত দিতে পারব। ভাবছি, ফিনিশিং এর কাজ ফিনিশ করে বিস্তারিত লিখব এই প্রজেক্টের ব্যাপারে। ধাপে ধাপে বর্ণনা আর প্লান থাকবে সে লেখায়। জানি না সামুর পাঠক-পাঠিকাদের মধ্যে অলস সময় কাটাতে কাঠমিস্ত্রীর কাজ করার ধারনাটা কিরকম গ্রহনযোগ্য হবে। তারপরও ভাবছি লেখাটা লিখব।

আমার অ-সামু ফ্রেন্ডরা আমার লেখা পড়তে পারে না, এই অভিযোগ শুনতে হচ্ছে বারবার। বাংলাদেশে নাকি এখনো এই ওয়েবসাইট পুরোপুরিভাবে এক্সেসিবল না। তার উপর পোস্টের লিঙ্ক শেয়ার করলে আমার ব্লগ প্রোফাইল শেয়ার হচ্ছে, কোন একটা নির্দিষ্ট লেখার লিঙ্ক শেয়ার করে তেমন সুবিধা পাচ্ছি না। যেটুক বুঝলাম, মোবাইল থেকে সামু ওয়েবসাইট তেমন ভালভাবে পারফর্ম করে না। ২০২২ সালে এসেও কোন একটা ওয়েবসাইট সম্পর্কে এই অভিযোগ করতে হবে, সেটা চিন্তারও বাইরে। এখন সবাই সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট বানায় মোবাইলের জন্য। যাদের একটু তেল বেশি, তারা কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য আলাদাভাবে নজর একটু নজর দেয়। সে যায়গায় সামুর সাইট মোবাইলে ভালভাবে কাজই করে না।

আপনারা অবসরে কি করেন? কোন কাজে আপনি বেশি আনন্দ পান? আপনার অবসর-বিলাস শেয়ার করুন আমাদের সাথে। কি জানি হয়ত আপনার সখের কাজটাই হয়ে উঠতে পারে আরেকজনের খুজে-না-পাওয়া তরিকা।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:১৭
১১টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×