somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেখা হলো, কথা হলো না!

২৪ শে নভেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তাবৎ বিশ্বের সব ঐতিহাসিক সংকট কোনো না কোনো মতে একটি পর্যায়ে এসে সাফল্যের মুখ দেখেছে অর্থাৎ সংকটের সমাধান পাওয়া গেছে। ইতিহাসের সব সমস্যা-সংকট যদি চলতেই থাকত কবেই বিলীন হতো মানুষ ও তার অগ্রগতি বা সভ্যতার ধারা। দুটি বিশ্বযুদ্ধ ও একটি স্নায়ুযুদ্ধসহ অসংখ্য সংঘাত-সংগ্রামের মধ্য দিয়েই মানুষ সামনে এগিয়েছে এবং একটা না একটা নিষ্পত্তির পথ খুঁজে বের করেছে_ তা রাজনীতিতে বা তার বাইরেই হোক। মাও সে তুং তো রাজনীতিকেও এক প্রকার যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তাই যদি হয়, যুদ্ধ তো আবহমানকাল ধরে চলতে পারে না।

আমাদের দেশে একাধিক ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব আছে এবং তার সঙ্গে আস্থাহীনতা ও অবিশ্বাসও বিরাজ করে। আশ্চর্য যে, আমাদের অভিন্ন জাতীয়তা, ধর্ম, অতীত ইতিহাস ও অভিজ্ঞতা বিরাজমান দ্বন্দ্ব-পার্থক্য দূর করতে পারে না। যদিও বিরাজমান দ্বন্দ্ব-পার্থক্য দূর করার উদ্যোগ গ্রহণও নগণ্য নয়। যখন থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বিএনপির চেয়ারপারসন এ দেশের রাজনীতিতে পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে আবির্ভূত হন, এই দুই শীর্ষ নেত্রীকে এক কাতারে আনার জন্য উদ্যোগ ও প্রচেষ্টার কোনো কমতি ছিল না এবং এখনও তা অব্যাহত আছে।

যে ইস্যুগুলো উভয় নেত্রীকে পরস্পরের মুখোমুখি করে সেগুলো নিছক আস্থার ব্যাপার, যেখানে কোনো ব্যক্তি বা মহলের প্রবেশাধিকার নেই। কোনো কিছুতে আস্থা রাখা বা না রাখার ব্যাপারে নেহাত ব্যক্তিগত এবং ব্যক্তিবিশেষের মনন ও মনস্তত্ত্বের নিয়ন্ত্রণাধীন এবং সেখানে সেই ব্যক্তিবিশেষের সিদ্ধান্তই প্রাধান্য পায়। তবে উভয়ের সম্পর্কে যদি একটি অকারণ বৈরী মনোভাব গড়ে ওঠে এবং দীর্ঘ সময়ে তা লোকচক্ষে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়, তখন অনিবার্যভাবেই উভয়ের মধ্যে একটি অনতিক্রম্য মনস্তাত্তি্বক দূরত্ব
তৈরি হয়।

শেখ হাসিনার মনস্তত্ত্বে এখনকার বিরোধীদলীয় নেত্রীর বিরুদ্ধে হয়তো অসংখ্য নালিশ আছে। একইভাবে খালেদা জিয়াও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনুক্ত-অঘোষিত অনেক অভিযোগ লালন করে থাকেন। এগুলোর সমাপ্তি কি সেনাকুঞ্জের কুশল বিনিময়েই ধুয়েমুছে যাবে? এর জন্য সম্ভবত উদ্যোগীদের অন্যরকম কৌশলের কথা ভাবতে হবে। বঙ্গবন্ধু বা শহীদ জিয়া তো জাতির কাছে জাতীয় বীর হিসেবে সমানভাবে আদৃত। আমাদের শীর্ষ নেত্রীদ্বয় কি পারেন না জাতির সেই আবেগের অংশীদার হতে? পারেন না কি খালেদা জিয়া একান্ত নিজের উদ্যোগে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করতে বা প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে যাওয়ার পথে শেরেবাংলায় জিয়ার মাজারে গিয়ে চমক সৃষ্টি করতে?

যতবার সশস্ত্র বাহিনী দিবসে উভয় শীর্ষ নেত্রীকে তাদের পারিষদ নিয়ে একই শামিয়ানার নিচে উপবিষ্ট হয়েছেন, তাদের বডি ল্যাংগুয়েজে কখনোই মনে হয়নি তাদের উভয়েই বা কোনো একজন এমন উদার ধারণা পোষণ করেন বা তাদের মধ্যে এমন বিশালত্বের স্থান বা ছাপ আছে। যে অন্তর্লোকে জমাট বাঁধা হিমবাহের অবস্থান সেখানেই বাধাপ্রাপ্ত হয়ে আছে আমাদের মহৎ উদ্যোগ।

তাহলে? তাহলে কেমন হবে আমাদের আগামী দিনের রাজনৈতিক সংকট? অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট উক্তি প্রদানের কেউ নেই, থাকলেও তারা অন্তরে পুষে রাখবেন। হায়রে দুর্ভাগা দেশ এবং আমাদের স্তাবকবেষ্টিত জাতীয় নেতৃত্ব! আমরা দেশবাসী রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও অচলাবস্থায় নাজেহাল এবং আমাদের নেতৃত্ব নির্বাচনে জিতলে বাঘ মারা, ভাল্লুক মারার কথা অনর্গল বলেই যাচ্ছে, অথচ তারা নিজেরাই জানে না আদৌ কোনো নির্বাচন হতে যাচ্ছে বা হলে তা কোন পদ্ধতিতে হবে। ভেবে দেখুন, আমেরিকায় এবারের নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের হিসাব-নিকাশ ও মেরুকরণ এখনই শুরু হয়ে গেছে।

যে কোনো দেশেই একটি সমীক্ষক গোষ্ঠী সবসময়ই তৈরি থাকা উচিত, যারা গণতান্ত্রিক রাজনীতির অন্তরায়গুলো চিহ্নিত করে রাজনীতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। শুধু সেনাকুঞ্জের সম্ভাব্য অলৌকিকতার ওপর ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে বসে থাকা যাবে না। এমন ট্রাবল শুটারের ভূমিকায় দেশের সুশীল সমাজ, একাডেমিক গোষ্ঠী ও থিঙ্কট্যাঙ্কগুলোর নিরন্তর কাজ করে যাওয়া দরকার। পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে শুনেছি, রাজনৈতিক, সামরিক বা অর্থনৈতিক সংকটে একটি ট্র্যাক-টু কূটনীতি বহাল থাকে, যারা বেসরকারি এবং ইনফরমাল পন্থায় সংকট নিরসনে নিয়োজিত থাকে। আমাদের দেশে যে অভিনব সংকট তৈরি হয়েছে তারও নিরসন অবশ্যই আমাদের আয়ত্তের মধ্যে আছে বলে আমার বিশ্বাস ও আশাবাদ।






















সংগৃহিত
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×