somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রিভিউ- মোস্ট ওয়েলকাম ২ : একটি গ্রাফিক্যাল চলচ্চিত্র !

০৮ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এম এ জলিল অনন্তের মুভি বার বার দেখতে যাই নিখুঁত কোন সিনেমার আশায় নয় নিখুঁত বিনোদনের আশায়। তো বলাইবাহুল্য সেই হিসেবে “মোস্ট ওয়েলকাম ২” ও হতাশ করেনি :p

গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রাতরাশ সেরেই চাপা উত্তেজনা নিয়ে উর্ধশ্বাসে ছুটতে থাকি ঐতিহাসিক বলাকার দিকে। তিন ঘন্টার অ্যাকশান, টেনশন টেনশন। সেখানে বন্ধু সম্রাট আর হাবিব অনন্ত জলিলের জ্বলন্ত টিকিট হাতে দন্ডায়মান।

যথাসময় মর্নিং শো শুরু হল। বাংলাদেশের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী সাদা চুল, সাদা গোঁফওয়ালা হাসান মইন খান (যিনি কথা বললেই ফুঁ লেগে লেগে সাদা গোঁফ উড়ে নীচের আসল খাটি ‘সোহেল রানা’ কালো গোঁফটা হাস্যকরভাবে বের হয়ে পড়ে) গবেষণা করে ক্যন্সারের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে ফেলেছেন। ডজন ডজন পুলিশ যখন এই বিজ্ঞানীকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ তখন –
হিরোদের হিরো, মারকুটে, সৎ পুলিশ অফিসার, সদ্য বিউটি পার্লার ফেরত নায়কের (আরিয়ান) আবির্ভাব। বলাবাহুল্য একপ্রস্থ মারপিট হইয়া গেল।

খানিক বাদেই ঘুম থেকে উঠে মুখে পানি ছিটাতে ছিটাতে আয়নায় সামনে/পর্দায় ভেসে উঠলো নায়িকা বর্ষার মুখ। তারপর সোজা রেস্টুরেন্ট- সেখানে বান্ধবীদের সামনে পুলিশ অফিসার আরিয়ানের মেয়েবন্ধু হিসাবে আলগা পার্ট নিতে থাকা কালে আরিয়ান সাহেব সব শুনে ফেলে। ছদ্মবেশ ধরে আরিয়ান সাহেব নায়িকার সাথে কিছুক্ষন ইয়ার্কিও মেরে আসলেন।

এরই কোন ফাঁকে বোধহয় একখানা গ্রাফিক্যাল মিউজিক ভিডিও হয়ে গেলো (আসলে পুরো ছবিতে কখন গান শুরু হয় কখন শেষ হয় তা হিসাব রাখা শক্ত)। উইন্ডোজ ৯৮ এর ওয়ালপেপারগুলোর উপর নায়ক-নায়িকার উপর্যুপরি নাচগুলোয় ছিল ফটোশপের শৈল্পিক ব্যবহার। একবারতো দেখলাম বরফের একটা চাই ভেসে যাচ্ছে আর নায়ক তার উপর নাচের তাল করতেছে। বোঝেন তাইলে অসম্ভবকে সম্ভব করা কার কাজ? :/ নাচ-গানের জন্য এই পোড়ার দেশে একটা ভালো জায়গাও পাওয়া যায়নি :/



ওইদিকের বুড়ো বিজ্ঞানী পাসওইয়ার্ড বান্ধব গুপ্ত স্থানে তার ভ্যাকসিনের ফর্মুলা একখানা হার্ড ডিস্কে লুকায়া রাখছে। সেইটা উদ্ধারে দেশি গুন্ডা মিশা বিদেশি গুন্ডা ন্যনোর আন্ডারে একজোট হয়ে মুহুর্মুহ আক্রমন চালায় যাচ্ছে। না পাইরা তারা বিজ্ঞানীর নাতনী, নায়িকা বর্ষাকে কিডন্যপ করতে ব্যর্থ হয়ে তার প্রতিবন্ধি ভাইকে তুলে নিয়ে যায়। নায়ক জলিলের খবর পাইতে দেরি কিন্তু আসতে দেরি নাই – পথের মাঝেই শুরু হয় ঢাসিয়া ঢাসিয়া গুলাগুলি।

দুয়েক রাউন্ড গুলি করেই অতগুলো গুন্ডার গুলি শেষ। কাজেই তারা বোধ হয় কিডন্যাপ করা প্রতিবন্ধী পোলাটারে পানিতে চুবাইতে উদ্বুদ্ধ হয় ! তারা হুইল চেয়ার ঠেলতে ঠেলতে পানির দিকে ধাবিত হতে থাকে আর নায়ক যায়া পাছায় লাথি মারে, লাথি খাইয়া উইঠা আবার চেয়ার ঠেলতে থাকে- আবার লাথি খায় এভাবে একপর্যায় পানির কাছে চলে আসে।

অইদিকে ভিলেনরা বুড়ো বিজ্ঞানীকে হেলিকপ্টারে উঠায় নিয়া যায়... জলিল কোন মতে হুইল চেয়ার সেভ কইরা লাফ দিয়া হেলিকপ্টারের নীচের ডান্ডা ধইরা ফেলে ! কিন্তু শেষ রক্ষা আর হয়না।

এই ব্যার্থতার দায়ে চাকরি যায় বক্ষ-বন্ধনী আবশ্যকীয় (স্যাডলি-সিরিয়সলি ঃ/) নায়কের। সদ্য চাকরি হারা এক মাসুম পুলিশ অফিসারকে ভিলেনের একদল টাকা খাওয়া পুলিশ জেলখানায় নিয়ে আচ্ছা করে ধোলাই দেয়। এসময় জেলখানায় নায়কের পরনে থাকে বেল্ট-বকলেস সমৃদ্ধ যুদ্ধাংদেহী পোশাক (যেটা ধরা খাওয়ার আগে ছিলনা)। মানে যখন যেটা দরকার সেইভাবে ড্রেস, জুতা, চুলের কালার (লালচে বা কালো) । সদাপটে এই বিপর্যয় থেকে নায়ক জেলখানা তসনস করতে করতে বের হয়ে আসে ফেয়ার এন্ড হ্যান্ডসাম হয়ে।

তারপর নানান কাহিনী, উথান-পতন জলিলের হরিজন্টাল ভাবে হাওয়ায় ভেসে থেকে কাইত হয়ে ট্রেডমার্ক একশানের যথাযথ ব্যবহার এবং বর্ষার মেকআপ ঠিক রেখে একসময় ভিলেনের ডেরায় হাজির হয়।

মহানবিজ্ঞানীকে উদ্ধার করে দেশ ও জাতিকে উদ্ধার করেন বিপুল ক্ষতি থেকে।

# এত কিছুর মাঝে বলতে হবে গান সিলেকশন ভালো হইছে। বিশেষ করে কৈলাস খেরের গান মানুষকে ৫ মিনিটের জন্য থমকায় দিসিল।

# গ্রাফিক্সের কথা বললে একবাক্যে বলতে হয় রিপ ফটোশপ। কোটি কোটি টাকা খরচ করে হাস্যকর গ্রাফিক্সের মানে হয়না।

#রেটিং : সালমান খানের মুভি থেকে অনেক ভালো।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:১০
১৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×