একটি কথা কখনো মিথ্যে হতে পারবে না,
"মানুষ মানুষেরি জন্যে"
কথাটি আজীবন সত্য যতদিন পৃথিবী বেঁচে রবে, ততদিন মানব প্রেমী দায়িত্ববানরা বেঁচে থাকবে।
আসলেই ভাল মানুষের গুণে পৃথিবীর বেঁচে থাকা।
তাদেরকে অর্থের লোভ দেখিয়ে,হুমকি - ধমকি দিলেও কাজ হয় না এবং হবে না।
তারা নিরবে মানুষে উপকার করে যায়,মহান আল্লাহতালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যে।
রক্ত একটি ভয়ানক তরল পদার্থ।অনেকে রক্ত দেখলে ভয় পায় অনেকে আবার মানসিক ভাবে ফিট হয়ে যায়,অনেকক্ষণ অজ্ঞানো থাকে। ঠিক তার ব্যাতিক্রম আমি নয় তবে বেশি ভয় করতাম না।
বাস্তবে সাথে যখন খাপ খেতে হবে এইসব ভয় ভীতি রেখে লাভ কি…!
কেউ নিজের পক্ষ থেকে রক্ত দিতে আগ্রহী হয় না, তাকে আগ্রহী করে তুলতে হয় ঠিক তারই মত আমাকেও আগ্রহী করে তুলেছিল চট্রগ্রামের বর্তমান "উৎসাহ" সেচ্ছার রক্ত প্রদান একটি সমাজিক সংগঠনের প্রেসিডেন্ড #রাহুল, পরিচয়টা যদিও মাটির মানুষ নাম থেকে হয়েছে।
#মাটির_মানুষ নামটি ছিল তার ফেবুর একাউন্টের নাম।
সে এক লম্বা কাহিনীতে তার সাথে পরিচয়।
একদিন চট্টগ্রামে,
বিকেলের দিকে আড্ডা চলছে প্যারেড মাঠে, সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমিতে একটি অনুষ্ঠান রয়েছে, আগে থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা করা ছিল,
অনুষ্ঠানে অনেক জ্ঞানী গুণীজন উপস্থিত থাকবেন।
গেলাম একাডেমিতে,
অনুষ্ঠান উপলক্ষে একাডেমির সামনে ফুতফাত ঘেঁষে ভ্রামমান নানা স্টল গড়ে উঠেছে। স্টলে ছিল নানা সংগঠনের ব্লাড ক্যাম্পেইন, রক্ত গ্রপ নির্নয় সহ অনেক কিছু।
আমার সাথে ছিল #মাটির_মানুষ_রাহুল , তার সাথে দেখি সবাই ভাল পরিচয় সেই সুবাদে সে আমার ব্লাড টেষ্টটা করিয়ে দিল,এবার না হয় আমার নিজের ব্লাড গ্রুপটা জানতে পারলাম।
বলে রাখা ভাল আমার রক্তের গ্রুপটা (B+) বি পজেটিভ।
গ্রুপ নির্নয় করার পর ভয়টা ভেঙ্গে গেল।
তবুও সুইয়ের আঘাতকে ভয় পেতাম।
একমাস পর এক পরিচিত ফোন করে ব্লাড গ্রুপ কি জানতে চাইলো,প্রতি উত্তরে জানালাম বি পজেটিভ।
এক ব্যাগ রক্ত দেওয়ার প্রস্তাব পেলাম। রোগির সমস্ত অসুস্ততার কথা জানিয়েছে।
আর্থিক ভাবেও খুব দুর্বল এক গর্ভবতি মায়ের বাচ্চা প্রসব হবে,তাও জটিল সমস্যা একসাথে দুই জন জন্ম হবে।
ব্লাডের প্রয়োজন ৪-৬ ব্যাগ।
আমারটা ছিল প্রথম ব্যাগ।
অপারেশানের সময়টাও খুব ঘনিয়ে আসছে কয়েক ঘন্টা বাকী আছে।
সদর হাসপাতালের ব্লাড বাংকে গিয়ে এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে দিলাম।
আলহামদুলিল্লাহ।
সবই বিদাতার হুকুম।
কয়েক মিনিট পর হালকা হালকা মাথাটা চক্কর দিচ্ছে।
ব্লাড দিলে নাকি একটু এই রকম হয়, তা নিজেকে মেনে নিতে হয়।
ডাব, ওরস্যালাইন পানি তো খেয়েছিলাম প্রচুর।
এভাবে সাহস ভাঙ্গার পর শুরু হলো রক্ত দেওয়া।
সে এক অনুভূতি,এক সফলতা।
এক পর থেকে আমরা কয়েকজন মিলেই মানুষের ব্লাড প্রয়োজনে সহযোগিতা করে আসছি।
ফেবুতে কয়েকটা ব্লাড ডোনেশান গ্রুপও খুলেছি।
এইভাবে চলছে…
আল্লাহ আমাদের প্রতি সহায় হোক।
হাফিজ আসাদ
২০-০৪-২০১৬ ইং
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:২৩