এক মৌলভী (ভাব ভঙ্গিতে- কর্মে নয়) একবার বলল, ভাইবা দেখেন জনাব, মশা কত ছোট, আর কত ছোট তার আল, সেই আল দিয়া কি সুন্দর টুক কইরা রক্ত টাইনা নেয়- কি জিনিস বানাইসে- আল্লাহু আকবার। আল্লাহর কি রহমত- শেষ করতে না দিয়ে বললাম, এখানে রহমত দেখলেন কোথায়- আরে ভাই কি কন- ভাইবা দেখেন, মশা এত ছোট তাই কি জ্বালায় আর একটু বড় হইলেতো দশ কামড়ে জীবন শেষ-এটা রহমত না !
তারপর হতেই “মশা” রহমত নিয়া ভাইবা দেখতাছি। তেলেগু ইগা ছবিটাও আমাকে অনুপ্রানিত করেছে। মশা এক প্রকারের পতঙ্গ। অধিকাংশ প্রজাতির স্ত্রীমশা স্তন্যপায়ী প্রাণীর রক্ত পান করে থাকে। (মশা উইকিপিডিয়া) বোঝা যাচ্ছে “স্ত্রী” বচনরা সব জায়গাতেই বিপদজনক! এই মশাকে নিয়া ব্যবসা করমু ভাবতেছি। মশা উৎপাদন করমু, ট্রেনিং দিমু, মশার কানে, চোখে মাইক্রোচিফ বসামু যাতে চোখে ঠিক মত দেখে আর দূর হতেও আমার ইঙ্গিত বুঝতে পারে।
লাভ কী ?
(মোটা মানুষকে যদি হাতির সঙ্গে তুলনা করা বিচার বর্হিভূত কাজ হয় তাহলে আমাকেও মশার সাথে তুলনা করা চলে না) আমি তো মশাওয়ালা হইয়া যামু। আজকাল “ওয়ালা” ওয়ালাদের অনেক দাম। যেমন-বাড়ীওয়ালা, গাড়ীওয়ালা, টাকাওয়ালা ইত্যাদি। আমি মশা ভাড়া দিমু।
আচ্ছা তাই?
আরে ভাই এ যেন তেন মশা না, রীতি মতো ডিগবাজী দেওয়া মশা, গেরিলা ট্রেনিং প্রাপ্ত মশা, এ উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন দাত দিয়া কামড় দিয়া রক্ত নিতে অন্য মশার চাইতে দশ গুন কম সময় নিব। এরা হিট ডিটেক্টর দিয়া বিবেচনা করে আপনার হাতের হিট হইতে মুক্ত থাকব, মশার ব্যাট দিয়া পিটাইয়াও আউট করতে পারবেন না। আমার মশা হবে পৃথিবীর সবচাইতে আধুনিক, শক্তিশালী, বুদ্ধিমান মশা। উৎপাদনের সময় এদের শিশুদের মতো সকল প্রকার টিকা প্রদান করা হবে যাতে এদের দ্বারা কোন খারাপ রোগ না ছড়ায়। (স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের কর্তা ব্যক্তির দূর্নীতির কারনে মেয়াদোত্তীর্ন ঔষধ দিলে আমার কোন দোষ নাই)
বুঝলাম, কিন্তু ভাড়া কে নিবে ?
কেন-নেতাকর্মীরা, আন্দোলোনকারীরা, সিরিয়াল কিলালেরা, মনে বিদ্বেষ পোষনকরীরা। আবার কেউ শখ কইরাও নিব, বিশ্বাস হয় না তাই না, শখ কইরা যদি কুত্তা পালন যায় তবে অত্যাধুনিক মশা পলতে সমস্যা কই। তার উপর আলাদা কইরা থাকার জায়গা লাগবনা খাওয়ারও কোন খরচ নাই।
ভাইবা দেখেন মশা বাহিনী দিয়া যদি সহজেই দাবী আদায় করা যায় তা হলে খুন, গুম কত কইমা যাইব। আমাগো রাজপথে রাজার মতে রজ্যের জন্য প্রান দিতে হইব না, ওয়ার্ডার অনুযায়ী মশা সাপ্লাই কইরা দিমু। কামড়াইয়া দাবী আদায় কইরা ছাড়ব। মাথার মধ্যে ঢুইকা সৎ পরামর্শ দাতা মশারও উৎপাদনের চিন্তা বিবেচনাধীন।
প্রশাসন ?
ঘরের স্ত্রীকে যদি ভয় পায়, স্ত্রী-জাত মশাকেও ভয় পাইবে। জানেন তো “স্ত্রী” বচনের বাচন ভঙ্গিই আলাদা, যখন দেয় উজার কইরা দেয়, যখন নেয় তখন-----------! তাছাড়া আমাদের বর্তমান নগর পাল- গোপাল, মশা বান্ধব সবুজ নগরী গড়ে তোলায় অত্যন্ত মনোযোগী। সবুজ নগরী মশার জন্য খুবই স্বাস্থ্যকর স্থান। এই জন্য আজকাল মশারাও খুব উৎফুল্ল, সব জায়গাতেই গ্রীন সিগন্যাল, আর তাইতো তাদের এত সরব বিচরন। তবে কি আর করবে প্রশাসন !!!!
(এই লেখাটি রম্য ভঙ্গিতে লেখা, শান্তিকামী সাধারন মানুষে জন্য ; কোন রাজনৈতিক রূপ দেয়া ঠিক হবে না)