এখন কারো ব্লগ পড়ার সময় নেই। এখন শুধু পোস্ট দেওয়ার সময়। কিন্তু এই অধম আপনাদের সামনে কিছু ইস্যূ তুলে ধরতে চাই, যেগুলো সত্যিই ভাবার বিষয়।
বাংলাদেশর জেতার তরী ভিড়তে ভিড়তে বহুবার ডুবে গেছে। তীরে এসে তরী ডোবার অদম্য যন্ত্রণায় কতোবার পুড়তে হয়েছে, সেগুলোর পরিসংখ্যান দিতে গেলে মহাকাব্য হয়ে যাবে। কিন্তু একটা জিনিস খেয়াল করে দেখবেন, প্রায় প্রতিটা ম্যাচেই আমাদের প্লেয়ারদের সাথে সাথে আম্পায়াররাও দারুণ ভিলেনের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছেন। একটা ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে সাত সাতটা লেগ বিফোর এর ডিসিশান দিয়েছে আম্পায়ার। স্পষ্ট মনে নেই ম্যাচটা কার বিপক্ষে খেলেছিলো টাইগাররা।
আজকের ম্যাচটার কথাই বলি না কেন। বোলিংয়ে শফিউল গম্ভীরকে আউট করার পরের বলটাই লেগ বিফোর এর আপিল, বিরাট কোহলির অ্যাগেইনস্ট এ। রিপ্লেতে পরিষ্কার দেখা গেলো, আবেদনটা যথার্থই ছিলো। কিন্তু আম্পায়ার কাছে কেন জানি মনে হলো, সেটা আউট ছিলোনা। বাজি ধরতে পারি সেটা ইন্ডিয়ার আপিল হলে, আম্পায়ার আঙ্গুল উঁচাতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করতেন না।
ব্যাটিংয়ে আমাদের সবেধন নীলমনি সাকিব কে থার্ড আম্পায়ার এর হাতে সঁপে দেয়া হলো। ক্রিকেটের নিয়ম অনুযায়ী, বেনিফিট অব ডাউট সবসময় ব্যাটসম্যানের পক্ষেই যায়। সাকিবের পা লাইনের পিছনে ছিলো কি ছিলোনা, সেটা শ্রীলংকান আম্পায়ার এর সাথে দেখেছে স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শক। টিভির সামনে পুরো দেশ। ক্রিকেট বুঝি বলেই মনে করেছিলাম সাকিব এ যাত্রা বেঁচে যাবে। কারণ, চান্স ফিফটি ফিফটি ছিলো। আম্পায়ার নিশ্চিত হতে পারলেন না, সাকিবের পা লাইনের পিছনে ছিলো কি ছিলোনা। সুতরাং বেনিফিট
অব ডাউট। কিন্তু ক্রিকেটের নিয়ম ভেঙ্গে যথারীতি বাংলাদেশের মেরুদন্ড ভাঙ্গার কাজটি করে দিলেন আম্পায়ার। বেনিফিশিয়ার বোলার, সাকিব আউট।
সাকিব রিপ্লে দেখলেন মাঠে। যেতে চাইছিলেন না। ড্রেসিংরুমে বসেও ল্যাপটপে দেখার চেষ্টা করছিলেন, লংকান আম্পায়ার কোন যু্ক্তিতে তাকে আউট দিলেন।
যুক্তি একটাই। ক্রিকেটের পরাশক্তি, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বিরাগভাজন হওয়া যাবেনা। তারা নমস্য, তারা শক্তিমান। তাদেরকে চটানো যাবেনা।
সেটা যদি না হয়, তারা কিভাবে আইসিসিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বাংলাদেশকে তাদের দেশের মাটিতে সিরিজ খেলতে দেয়না? টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্ত দেশগুলো একে অন্যের মাটিতে সিরিজ খেলার অধিকার রাখে। কোন অহংকার, কোন অদৃশ্য শক্তির যাদুবলে ইন্ডিয়া আমাদের সে অধিকার থেকে বঞ্চিত করে???????
ফিরে আসি আম্পায়ারদের কথায়।
প্রশ্ন হলো, তাদের এহেন বিমাতাসূলভ আচরনের কারণ জানতে চাওয়ার কোন উদ্যোগ নিয়েছেন কিনা আমাদের কর্তা ব্যক্তিরা? মনে হয়, লোটা কামালের সে সময় নেই, সে ব্যস্ত কিভাবে ক্রিকেটারদের শায়েস্তা করা যায়, তাই নিয়ে। এই লোকটা কিভাবে বিসিবি প্রেসিডেন্ট এর পদ আকড়ে থাকে, তা আমার বোধগম্য নয়। বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডও চলছে পাকিস্থানের পদাংক অনুসরন করে। তামিমকে ধন্যবাদ, সে তার প্রতি লোটা কামালে হিংসাত্বক আচরনের জবাব ব্যাটেই দিয়ে দিয়েছে।
ইন্ডিয়া সহ অন্য দেশগুলো যাদের টেস্ট মর্যাদা আছে, অহরহ সিরিজ খেলছে। ধোনিরা খেলতে খেলতে যখন আচানক হেরে বসে, তখন একটানা খেলে যাওয়া জনিত ক্লান্তিকে ইস্যূ হিসেবে টেনে আনেন। আর আমরা তাদেরই মতো টেস্ট প্লেয়িং কান্ট্রি হয়েও তাদের দেশের মাটিতে সিরিজ খেলতে পারিনা। এতোটাই অচ্ছুত আমরা।
দোয়া করি, সাকিব তামিম নাসির মুশফিকরা এ বঞ্চনার জবাব মাঠ থেকেই দেবেন। যেমন আজকে দিয়েছেন। পাকিদের ম্যাচটা জিততে জিতেতে হেরে বসার পর আজকের ম্যাচটা নিয়ে মোটেও আশাবাদী ছিলাম না। স্কোর ২৯০ হয়ে যাওয়ার পর তো নয়ই। কিন্তু হলো, হয়েই গেলো। অভিনন্দন টাইগার্স।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১২:০৫