somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

বিএম বরকতউল্লাহ
পড়াশোনা করি। লেখালেখি করি। চাকরি করি। লেখালেখি করে পেয়েছি ৩টি পুরস্কার। জাতিসংঘের (ইউনিসেফ) মীনা মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড ২০১১ ও ২০১৬ প্রথম পুরস্কার। জাদুর ঘুড়ি ও আকাশ ছোঁয়ার গল্পগ্রন্থের জন্য অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৬।

ভূত ফিকশন-২

২৩ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এই ভূত-দেবতার আছে গোটা চল্লিশেক স্ত্রী আর আছে অসংখ্য ছেলে-মেয়ে, নাতি-পুতি-খুতি। তার আছে এক সন্তান সম্ভবা স্ত্রী। সে ভাবছে- আরে, আমি তো আমার ওই স্ত্রীকে দিয়েই কায়দামত কাজটা সেরে ফেলতে পারি। আমি আমার স্ত্রীকে তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দিই না কেনো সেরালির ঘরে!

ভূত-দেবতা সেরালিকে ডেকে বলল, সেরালি, তুই আর চেঁও মেঁও করিস না তো। আমি থাকতে তোর এতো চিন্তা কীসের? আমার কাছে এসে তারাই খালি হাতে ফেরৎ যায়, যারা আমার দেয়া নিয়ম মানতে পারে না, আমার কথার অমান্য করে আর প্রয়োজনে টাকা খরচ ইতস্তত করে, তারা। তোকে তো দেখি এর বিপরীত। যাহ্, সন্তান তুই পাবি। ঠিকমত তোর স্ত্রীর যতœ-আত্তি করবি। কোনো রকম অবজ্ঞা-অবহেলা আর অনিয়ম করলে তুই সন্তান পাবি না। যাঃ তুই এখন বাড়ি চলে যা।

সেরালি কৃতজ্ঞচিত্তে আবেগ-অভিমানে দেবতাকে বলল- হে আমার প্রাণপ্রিয় দেবতা, আমি এতদিন কেন যে তোমার সন্ধান পাইনি, তোমার মত দয়ালু দেবতাকে চিনিনি; নিশ্চই আমি পাপী, হতভাগা। কেন আমি এভাবে ঠকে ঠকে এসেছি। আমি যদি আগে তোমার সন্ধান পেতাম তা হলে তো এতদিনে আমি সন্তাান দিয়ে আমার ঘরবাড়ি সব ভরে ফেলতে পারতাম। আমাকে আজ নিঃসন্তান হয়ে পথে-ঘাটে, আদারে-বাঁদাড়ে ঘুরে মরতে হতো না। আর মানুষের মুখে এত অপ্রিয় কথা শুনতে হতো না। ছিঃ কত বোকা ছিলাম আমি, ছিঃ!
দেবতা বললেন, তোর আশা পূর্ণ হোক।
সেরালি অদৃশ্য দেবতার উদ্দেশ্যে উপরের দিকে মুখ তুলল। সে বারবার হাত জোড় করে কুর্ণিশ করতে করতে বাড়ির দিকে রওনা দিল। সেরালির মনে বেজায় আনন্দ।

সেরালির স্ত্রীর উপর ভূতের আছর
এদিকে ভূত-দেবতা মুখের কোণে হাসি ফুটিয়ে মাথা ঝাকিয়ে বলে, সন্তান দিয়ে আমি তোর ঘর ভরে ফেলব রে সেরালি।
ভূত তার সন্তান সম্ভবা স্ত্রীকে ডেকে এনে সেরালির সব কথা খুলে বলল। দুষ্টভূতের দুষ্ট স্ত্রী। সে-ও অর্থ-স¤পদের লোভে সানন্দে রাজি হয়ে গেল। ভূত তার স্ত্রীকে বলল, সেরালি বাড়ি ফেরার আগেই তোমাকে পৌঁছে যেতে হবে সেরালির ঘরে। তারপর তার স্ত্রীর ওপর ভর করবে। তখন তুমিই হবে তার স্ত্রী। তারপরে কী করতে হবে আমি তোমাকে শিখিয়ে দেব। যাও, আর দেরি নয়, এক্ষুনি চলে যাও তুমি। সেরালি বাড়ি পৌঁছার আগেই তুমি তার অন্তসত্ত্বা ¯ত্রীর উপর ভর করে বসে থাকবে। যাও।
সেরালি মনের সুখে শরীর ঝাঁকিয়ে তাইরে নাইরে করে বাড়ি ফিরল। সে আনন্দে টগবগ করছে। ঘরে ঢুকেই সে আদর-আহ্লাদে তার স্ত্রীকে ডেকে বলল, কই গো সোনামানিক আমার, আরে আসো আসো, দারুন খবর! আমি আজ মহা আনন্দের খবর নিয়ে এসেছি, এবার বাবার দরবার থেকে খালি হাতে ফিরে আসিনি, শোনো।
সেরালির স্ত্রী অসুখ অসুখ ভাব নিয়ে তার সামনে এসে বলল, কী হয়েছে তোমার কও ত, শুনি। সেরালি নাকে-মুখে সব কথা খুলে বলল। তার স্ত্রী মুখে আঁচল টেনে একগাল হাসি দিয়ে শরমে শরমে বলল, আমার তো মনে হয় দেবতা আমাদের উপর মুখ তুলে চেয়েছেন। সেরালি বলল, তুমি বুঝলা ক্যামনে গো!
শরীরটা কেমন ভার ভার লাগছে।
সেরালি আনন্দে মুখটা বউয়ের কানের কাছে নিয়ে বলল, এখন কাউকে কিছু বলবে না। খুব সাবধানে চলাফেরা করবে। সন্তান আমরা পেয়ে গেছি। এখন খালি সময়ের অপেক্ষা।
স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই প্রচন্ড আগ্রহে সন্তানের অপেক্ষায় রইল।

দিনে দিনে সেরালির স্ত্রীর খাবারের চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে গেল। স্ত্রী যখন যা চায় সেরালি ছুটাছুটি করে তা-ই এনে দেয়। যা আনে তাই গপা গপ করে খেয়ে ফেলে। খাওয়াতে তার কোনো অরুচি নেই। হাঁড়কিপটে সেরালি মাঝে মধ্যে স্ত্রীকে বলে, যা আনি তাই খেয়ে সাবাড় করে ফেল, এত খাবার তুমি লও কই! স্ত্রী কুটকুট করে হেসে বলে, ওম্মা কয় কি! আমি কি এখন একা নাকি! দু‘জন না। বেশি লাগবে না তো কি! কিৎ কিৎ কিৎ, হেঃ হেঃ হিঃ হিঃ। চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:১৫
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×