somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানবিক মূল্যবোধে যৌনতার অবস্থান

৩০ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৫:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যে লেখক যৌন বিষয়ে প্রবন্ধ রচনা করে তার মনের মধ্যে সর্বদা এই ভয় থাকে যে, সে তার লেখনী দ্বারা সমালোচিত হবে। তারা মনে করে এই বিষয়টিকে সর্বসাধারনের কাছে প্রকাশ করা উচিত নয়। এমনকি তথাকথিত তার্কিক বুদ্ধিজীবীরাও তার এই প্রয়াসকে কালিমালিপ্ত করতে পারে এই মত প্রকাশ করে যে, তার লেখনী দ্বারা সমাজের বৃহৎ অংশের কোন উপকার হবে না। একমাত্র যারা প্রাচীনপন্থী নৈতিকতার খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে আগ্রহী তারাই এই লেখককে সাধুবাদ জানাবে। আমরা সেইসব মানুষকে যৌনবিষাদের পথিক মনে করতে পারি না যারা কোনো চঞ্চলা বারবধূর ভ্রুকটিতে উত্তেজিত হয়, এই আদিম ব্যবসাকে আইনের আশ্রয়ে আনতে চায়, অবাধ ও সুন্দর বহির্বৈবাহিক সর্ম্পকে জয়গান করে, মিনিস্কার্ট পরা এবং রন্জ্ঞনীতে লালিমাদীপ্ত ওষ্ঠের অধিকারিণী রমনীদের অনুরাগী হয়, আর সমূদ্রের সৈকতে বিশ্রামরতা রৌদ্রস্নাতা অসংযমী নারীদের সংক্ষিপ্ত স্নান-পোষাকের অন্তরালে জেগে থাকা ত্রিভঙ্গ শরীরের সুষমা দর্শনে মেলে ধরে তাদের গোয়েন্দা চোখ। এইভাবে তারা যৌন স্বাধীনতার স্বপক্ষে যুক্তি আনয়নকারী লেখকদের চেয়ে আরো বেশি মাত্রায় কষ্ট ভোগ করে। নির্মম নৈতিকতা হল কামুক প্রক্ষোভের বিপরীতধর্মী উপ্যাখান এবং যে মানুষ নিজেকে এর মধ্যে সমর্পিত করে সাধারনত তার মন কুচিন্তায় ভরপুর হয়। এই চিন্তার অন্তরালে শুধু যে যৌনতার প্রচ্ছন্ন মহিমা থাকে তা নয় কিন্তু নৈতিকতার কুয়াশায় আবৃত বলে সেই মানুষ জীবন ও যৌনতা সর্ম্পকে কোনো স্বচ্ছ, সুন্দর, সার্বিক মনোভঙ্গীর পরিচয় দিতে পারে না। এই বিষয়ে ধর্মের সাথে আমার কোনো দ্বিমত নেই যে, যৌন বিষয়ের তাড়না পাপের উদ্রেক করে। কিন্তু আমি ধর্মের সাথে একমত হয়ে বলতে পারি না যে, একে উপেক্ষা করার মধ্যেই সার্থকতার বীজ নিহিত। ক্ষুধা ও তৃষ্ণার মত যৌনতাও মানবজীবনের এক প্রাকৃতিক চাহিদা। যদি আমরা খাদ্য-পানীয় গ্রহনে উন্মুখ মানুষকে নিন্দা না করি তাহলে কেন যৌন জীবনের অভিলাশী মানুষকে অকারনে নিন্দা করবো? সুজনশিল্প আমাদের এই শিক্ষা দেয় যে , মানুষ তার বেঁচে থাকার স্বাভাবিক উপাদানগুলিকে লালন করবে। আবার নীতিবাগীশরা যৌন অনুভূতি থেকে মানুষকে বিমুক্ত রাখার অপচেষ্টায় স্ব-আরোপিত মতবাদের প্রর্বতন করেছে। সতের দশকের এক নীতিবাগীশ সমালোচক এই মন্তব্য করেছেন- Would you enjoy gay nights and pleasant dinners? Then must you board with saints and bed with sinners. এর থেকে মনে করা যেতে পারে যে, অতি ভক্ষণকে নীতিবাগীশরা নরকের পথ ধরে নিয়েছিল। খাদ্য গ্রহনের ক্ষেত্রে দেখা যায় মানুষ একবার তার আহার গ্রহনের পর পরবর্তী আহারের মধ্যে অন্যান্য বিষয়ের চিন্তা করে। কিন্তু যারা নান্দনিক দর্শনকে জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হিসাবে গ্রহন করেছে, নূন্যতম খাদ্যগ্রহন বাদে জীবনের আর কোনো চাহিদা মেটায় নি, তারাও মাঝে মাঝে লোভনীয় নৈশকালীন আহার এবং দৈত্যকর্তৃক প্রদর্শিত, রসালো ফলের আকাংক্ষায় বিসাদগ্রস্ত হয় এবং যে সমস্ত অভিযাত্রীরা সুমেরু অঞ্চলে অভিযান করে তারাও তিমি মাছের লিভার খেতে খেতে সেই স্বপ্নে বিভোর হয় কখন তার স্বদেশে ফিরে সুস্বাদু খাবারের স্বাদ পাবে। এর থেকে আমরা সহজেই বুঝতে পারি যে, যৌনতাকে একটি অবদমিত ইচ্ছা হিসেবে চিহ্নিত না করা হয় তাহলে একে খাদ্যের মতই জীবনধারণের সহযোগী হিসেবে চিন্তা করা উচিত। যে খাদ্য আমরা সাধারণভাবে ভক্ষণ করে থাকি, যা থেবিড অরণ্যের সন্ন্যাসীদের খাদ্য নয়। খাদ্য ও পানীয়ের মতো যৌনতা এক স্বাভাবিক মানবিক চাহিদা। যদিও এর অবর্তমানে মানুষ বাঁচতে পারে কিন্তু খাদ্য বা পাণীয় বেলায় এমন কথা প্রযোজ্য নয়। কিন্তু মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গীতে বিচার করলে এই সত্যকে স্বীকার করতে হবে যে, খাদ্য ও পানীয়ের আকাঙ্ক্ষার মতো যৌনতাও একটি স্বাভাবিক চাহিদা, যা অপ্রযুক্তিতে অসম্ভব বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় এবং প্রশ্নমতে সাময়িকভাবে হ্রাস প্রাপ্ত হয়ে থাকে। যখন এর চাহিদা প্রবল হয় তখন রুদ্ধ হয় চেতনার সবকটি বাতায়ন।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দাসত্বের শিকল ভাঙার স্বপ্ন দেখা এক ক্রান্তদর্শী ধূমকেতু ওসমান হাদী।

লিখেছেন মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল), ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশে যে ধরণের রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তাহলো বিদেশী প্রভুরদের দাসত্ব বরণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের উপর প্রভুত্ব করা , আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×