somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মান্ধ সন্ত্রাসবাদ উত্থানের ইতিকথা

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দেশে ধর্মান্ধ সন্ত্রাসবাদের ব্যাপক উত্থান ঘটে ২০০৪ সালে। অভয়ারণ্য হিসেবে ধর্মান্ধ সন্ত্রাসীগোষ্ঠী বেছে নেয় চট্টগ্রামের দুর্গম পাহাড়ি জনপদকে। গড়ে তোলে ঘাঁটি। জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এ এলাকায় গড়ে তোলে ৭টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। আরএসও’র সহায়তায় ধর্মান্ধ সন্ত্রাসীরা যুদ্ধের নানা কৌশল রপ্ত করে। সেই সঙ্গে আফগান ফেরত যোদ্ধা মুফতে আবদুল হান্নান দায়িত্ব নেয় ধর্মান্ধ সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণের। ছাত্র শিবিরের সাবেক তরুণ নেতা তথাকথিত বাংলা ভাই ওরফে বাংলা সন্ত্রাসী গ্রহণ করে অপারেশন পরিচালনার সার্বিক দায়িত্ব। সমুদ্রপথে অস্ত্র, বোমা, গ্রেনেড সংগ্রহ করা, আরএসও’র প্রশিক্ষিত কমান্ডারদের সঙ্গে প্রশিক্ষণ শেয়ার করাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কারণে চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলকে বেছে নেয় তারা। খাগড়াছড়ির পানছড়ি, চেংড়াছড়ি, বান্দরবানের ফাইতং, চকরিয়া, রাঙ্গামাটির লংগদু, ভূষণছড়া, মহালছড়ি ও বরকল এলাকায় গড়ে উঠে ধর্মান্ধ সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি। সুযোগ বুঝে ধর্মান্ধ সন্ত্রাসীরা পাহাড় থেকে নেমে আসে সমতলে।
২০০৪ সালের মার্চ মাসে বাংলা সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে চট্টগ্রাম থেকে রাজশাহীতে চলে যায় একটি দল। সেখানেই শুরু হয় অপারেশনাল কর্মকাণ্ড

ধর্মান্ধ সন্ত্রাসবাদের বীজ এর অনেক আগে থেকে বপন করা হলেও সশস্ত্ররূপে তারা আত্মপ্রকাশ করে ২০০৪ সালের মাঝামাঝি। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের অংশীদার বিশেষ গোষ্ঠীর নেপথ্য ইশারায় স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় ২০০৪ সালের এপ্রিল-মে মাসে রাজশাহী, বাগমারা, রানীনগর, আত্রাইয়ে শুরু হয় তা-ব। কিছুদিন পর ধর্মান্ধ সন্ত্রাসীরা আবার ফিরে যায় চট্টগ্রামের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়। সেখানে চলে বোমা ও ভারিঅস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট বোমা হামলায় প্রকম্পিত হয়ে উঠে গোটা দেশ। ধর্মান্ধ সন্ত্রাসী আছে, ধর্মান্ধ সন্ত্রাসী নেইÑ তৎকালীন বিএনপি-জামাত জোট সরকারের এই টালবাহানায় ধর্মান্ধ সন্ত্রাসীরা ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। মেতে উঠে হত্যাযজ্ঞে। এসব কর্মকা-ের খলনায়কের নাম মাওলানা আব্দুর রহমান ওরফে আব্দুশ শয়তান।
ধর্মান্ধ সন্ত্রাসবাদের উত্থানের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৮০ সালে ওহাবী মাওলানা আব্দুর রহমান ওরফে আব্দুশ শয়তান ছিলো ওহাবী ফেরকাপন্থী গ্রুপ তথাকথিত জমিয়তে আহলে হাদিসের সভাপতি। ১৯৮১ সালে সে ওহাবীদের নিয়ন্ত্রিত মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সউদী সরকারের বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করতে যায়। ১৯৮৩ সালে দেশে ফিরে রাজশাহীতে তথাকথিত আহলে হাদিসের সাংগঠনিক বৈঠকে ইসলামের নামে সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদের ঘোষণা দেয়।
ওই সময় মতবিরোধ হলে মাওলানা আব্দুশ শয়তান প্রতিবাদ করে সংগঠন থেকে বেরিয়ে আসে। তথাকথিত আহলে হাদিসের একটি গ্রুপের নিয়ন্ত্রক হয় মাওলানা আব্দুশ শয়তান। এসময় ছদ্মনামে বই লেখা শুরু করে সে। তার ছদ্মনাম ছিল আবদুল হামিদ। এই নামে প্রথম বইটি ছিল ‘দ্বীন কায়েমের সঠিক আক্বীদা।’ বইটি ৫০ হাজার কপি ছাপিয়ে দলীয় কর্মীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।


ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে ওহাবী বাতিল ফিরকাপন্থী গ্রুপ তথাকথিত আহলে হাদিস আন্দোলনের কার্যক্রম অনেক আগে থেকে চালু রয়েছে। মাওলানা আব্দুশ শয়তান লক্ষেœৗভিত্তিক তথাকথিত আহলে হাদিস আন্দোলনের দ্বারস্থ হয় আর্থিক সহায়তার জন্য।
১৯৯২ সালে মইত্যা রাজাকার নিজামীর সহায়তায় মাওলানা আব্দুশ শয়তান সউদী আরবে কুয়েত দূতাবাসে চাকরি করতে চলে যায়। সউদী আরবে চাকরির পাশাপাশি সে ‘ইসলামিক উন্নয়ন’ নামধারী যেসব সংগঠন কাজ করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তার সঙ্গে পাকিস্তানের জামাতের নেতা কাজী হোসাইন আহমদ, সাইফুল ইসলাম বান্না, হামাস নেতা ফাতহী শাকার্কী, হামাস নেতা শেখ আহমদ ইয়াসিনের সঙ্গে গভীর সখ্য গড়ে উঠে। ১৯৯৩ সালে সে দেশে ফিরে তথাকথিত জমিয়তে আহলে হাদিস আন্দোলন বাংলাদেশ গঠন করে। সে এ সংগঠনের পেছনে বিদেশে থেকে আনা কোটি কোটি টাকা ব্যয় করতে থাকে।
এক পর্যায়ে জামাত থেকে তথাকথিত আহলে হাদিস আন্দোলনে অনেক নেতাকর্মীকে দলে নেয়। তাদের প্রধান যুক্তি সশস্ত্র বিপ্লব ছাড়া দেশে ইসলাম কায়িম করা সম্ভব নয়। ১৯৯৮ সালে মাওলানা আব্দুশ শয়তান গঠন করে জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) নামের ধর্মান্ধ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। এই সংগঠনের সে আমীর নিযুক্ত হয়।
উল্লেখ্য যে, ১৮৫০ সালের দিকে উপমহাদেশে ব্রিটিশবিরোধী জামা’আতুল মুজাহিদীন নামে একটি সংগঠন গঠিত হয়েছিল। কিন্তু কালের চক্রে ১৯২৫ সালের দিকে এসে এ সংগঠনটির অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যায়।

(লেখাটি শেয়ার করুন সবার কাছে)
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×