এই নগরের হাজার হাজার ছা-পোষা চাকরিজীবি জানেন না, যে, তাদের অবসরের পরিকল্পনা কী।
খাওয়া, পড়া, পরিবার পরিপালনের পিছনে সর্বস্ব ক্ষয় করে ফেলা আমরা কেউ জানি না, ৬০ বছর বয়সের পরে আমাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে?
৬০ বছর বয়স পর্যন্ত হেঁচড়ে পেঁচড়ে কোনোমতে চাকরি টিকিয়ে রাখতে পারলেও, তার পরে জীবন কীভাবে নির্বাহ হবে, তার খরচ কোথা হতে আসবে, যখন জীবনযাত্রার ব্যয়, চিকিৎসা খরচ আরও বেড়ে যাবার কথা, সেই সেময়টার জন্য সঞ্চয় করা যাদের দিবাস্বপ্ন, তাদের জন্য ঠিক কী অপেক্ষা করছে?
’টায় টায়’ জীবন এখন কোনোমতে (সম্মানজনকভাবে) চললেও, আমাদের একটি বড় অংশেরই অবসর যাপনের জন্য প্রস্তুতি (মূলত সঞ্চয়) শুন্য।
হ্যা, আপনি অবশ্যই বলতে পারেন, সেভাবেই তো এখন হতে প্রস্তুত ও পরিকল্পনা করার দরকার ছিল। যিনি সেটি পারেননি, করেননি, তিনি তো শুন্যতায় ভুগবেনই।
কথাটি নিরেট সত্যি।
কিন্তু, তারপরও কথা থাকে।
উন্নয়নের দৈত্যাকার ক্ষুধায় জর্জরিত ও উন্নয়নের নীল নেশায় বুঁদ একটি রাষ্ট্রের অত্যন্ত স্বাভাবিক অভিঘাত (বৈষম্য, প্রতিযোগীতা, অসাম্য ও অনিয়ম) মোকাবেলা ও তার সাথে লড়াই করা একটি রাষ্ট্রীয় জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই উন্নয়নের ক্ষুধার দৈত্যের বলি হয়ে খুব বেশি পসার জমাতে পারবেন না-এটাই উন্নয়নের নীতি।
তার শিকার হয়ে, আজকের মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত চাকরিজীবি (কার্যত পরজীবি) আসলে কতটা কী করতে সক্ষম? কত তার আয়? কত তার ব্যয়? কত সঞ্চয়? (যখন বিপুল হারে উচ্চারিত হচ্ছে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি করতে বাধ্য হবার উচ্চাঙ্গ নাদ।)
পাকেচক্রে আমাদের জীবন প্রতিদিনই একটু একটু করে মৃত্যুর দিকে যেমন এগোচ্ছে, তেমনি এগোচ্ছে (অকাল মৃত্যু না হলে) ততোধিক অনিশ্চয়তা, দুঃশ্চিন্তা, অসহায়ত্ব, অমানবিকত্ব, অপরিকল্পিত এক জীবনের দিকে।
প্লিজ, সার্বজনীন পেনশন,ছেলেমেয়ের দায়ীত্ব, গ্রামে ফিরে যাও-ইত্যকার মর্মবাণীর মলমের কথা আর বলবেন না। ওসব বহুত দেখা আছে।
আর, আপনার কাছে অতিশায়ন মনে হলেও, আমার মতো নেগেটিভ মানুষ এটা বলেই যাবে, যে, আজকের মিলেনিয়াল জেনারেশন (মানে আপনাদের আজকের অপত্য ছেলেমেয়ে) আজ হতে ১৫-২০ বছর পরে পিতামাতার দায়ীত্ব পালনের মতো সুবোধ মনুষ্য মোটেও থাকবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৯:১২