somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বজনীন ভাবনার টুকিটাকি

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক: বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে চাওয়া ও পাওয়া:

বিশ্ববিদ্যালয়সহ যেকোনো ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ আমার সব সময়ের একটি অন্যতম আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।
বিশ্ববিদ্যালয়ের থীম, জন্মের প্রেক্ষাপট, বিশ্ববিদ্যালয়ের করণীয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রমের প্রত্যাশিত রোডম্যাপ-এই বিষয়গুলোর উপরে আমার নিজস্ব কিছু ভাবনা রয়েছে। এই ভাবনাকে সমৃদ্ধ করবার জন্য এবং আমার ভাবনাকে যাচাই করে নেবার জন্য পাঠকদের কাছে যেটি জানতে চাই, তা হল, বিশ্ববিদ্যালয় হতে শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা আসলে কি পেতে চাই?
অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালযয়ে গমন এবং সেখান থেকে ৪-৫ বছর পরে কোর্স শেষ করে বেরিয়ে আসার ভেতর দিয়ে আমাদের কী কী প্রত্যাশা থাকে?
আমি কিছু উদাহরণ বলছি, বিশ্ববিদ্যালয় হতে আমি কী পেতে চাইব বা চেয়েছিলাম-তা নিয়ে। আপনিও কিছু যোগ করুন:-
-প্রথমত, আমার মনে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আমাদের প্রথম প্রত্যাশা থাকে সাবজেক্টিভ নলেজ প্রাপ্তি।
-দ্বিতীয়ত, সরাসরি সাবজেক্টের সাথে রিলেটেড না হলেও, পারিপার্শ্বিক অনেক বিষয়ের উপরে ইনসাইট পাওয়া।
-কী করে চিন্তা করতে হয়-তার দিক নির্দেশনা পাওয়া।
-কীভাবে জ্ঞান আহরণ করতে হয়, কী করে শিখতে হয়, এবং কী করে শেখাতে হয়-তা জানা।
-নতুন ভাবে ভাবতে শেখার পাঠ অর্জন করা।
-দৃষ্টিভঙ্গিতে কাঙ্খিত পরিবর্তন আনয়ন করা।
-জীবন, জগত, সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্ব ব্যবস্থার উপরে বিস্তৃত, বহুমুখী এবং নবতর ভাবনা অর্জন করা।
-ডাইভারসিটি অর্জন এবং পারসেপশনের ডাইমেনশনকে মাল্টিফোল্ড ও মাল্টিডিসিপ্লিনারী করতে শেখা।
-গবেষণা করতে শেখা। চিন্তাকে সাজাতে ও ক্লাসিফায়েডভাবে প্রকাশ করতে শেখা।
-একজন আধুনিক এবং আলোকিত মানুষ হবার দীক্ষা অর্জন করা।
-সার্বিকভাবে বললে জ্ঞানচক্ষু ও অন্তর চক্ষু খুলে নেয়া।
এক কথায়, এগুলোই আমার দৃষ্টিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার প্রধানতম ডেলিভারেবলস। আমি প্রায়ই বলি (যদিও বিষয়টি এত সরল নয়।) চাকরির বাজারের সাথে মিল রেখে কারিক্যুলাম ডিজাইন করা এবং চাকরির বাজারের উমেদার সরবরাহ করা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়ীত্ব নয়। আপনি যদি এর সাথে কিছু যোগ করেন, বা, আপনার বিশ্ববিদ্যালয় হতে এগুলো পেলেন কিনা-তা জানান, তাহলে আমরা আরও ঋদ্ধ হতাম।

দুই: বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার প্রক্রিয়া কেমন হতে পারত?

গত সপ্তাহে একটি বিশেষ কারণে আমি Facebook এবং লিংকডইনে একটি পোস্ট দিই, যে পোস্টটিতে আমি দেশের একটি প্রথম সারির পাবলিক ইউনিভার্সিটি, একটি প্রথম সারির প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি এবং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির একটি কলেজের চতুর্থ বর্ষে অধ্যায়ন করছেন-এমন তিনজন মানুষের সাথে সরাসরি কথা বলবার আগ্রহ প্রকাশ করি।
অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী আমি সেখান থেকে বাছাই করে তিন জনের সাথে কথা বলি। তাদের সাথে হওয়া কথার আলোকে এবং আগে-পরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সাথে আমার যেসব আলোচনা হয়েছে, তা সংযুক্ত করে, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের থিম, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য, বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা কি পেতে চান বা সাধারণভাবে একটি দেশ কেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে-তার উপরে আমার আগের বক্তব্যকে যুক্ত করে কিছু ইনসাইট সামনে এলো।
কখনো ভেবে দেখেছেন কি, যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিক্যুলাম অথবা সার্বিক কার্যক্রম, সার্বিক আয়োজন কী হওয়া উচিত? বা কী হতে পারতো? আমি আপনাদের কোন নির্দিষ্ট ন্যারেটিভ বা ডিটেকটিভস বলে দেব না।
আমি সেটি পছন্দও করি না। তাছাড়া, আমি যেহেতু শিক্ষাবীদ নই, সেহেতু শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে করণীয়’র ওপরে আমার কথা বলার কাবেলিয়াতও নেই। কিন্তু, একজন সাবেক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র এবং বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজের অন্যতম সুবিধাভোগী টেল এন্ডের একজন রিক্রুটার প্রতিনিধি হিসেবে আমি আপনাদের ভাবনার জন্য কিছু ফুড ফর থট বলছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে এই বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া উচিত, কি উচিত নয়; শিক্ষার্থীদের অভিভাবক হিসেবে অথবা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত কেউ না কেউ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে এই বিষয়গুলো বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত বলে আপনি মনে করেন কিনা?
যেমন ধরুন: -
ক্লাস লেকচার (এটা বাধ্যতামূলক হলেও ন্যাশনালের কলেজগুলোতে অনুষ্ঠানের বা অংশ নেবার হার অতি সামান্য),
ফাইনাল এক্সাম,
মিড টার্ম এক্সাম
টিউটোরিয়াল ক্লাস,
টিউটোরিয়াল এক্সাম,
থিসিস অর রিসার্চ পেপার,
রিসার্চ ওয়ার্ক,
প্রজেক্ট ওয়ার্ক,
ফিল্ড স্ট্যাডি,
ইন্ডাস্ট্রিয়াল এটাচমেন্ট,
ইন্টার্নশিপ,
ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া কোলাবরেশন এন্ড নলেজ এক্সচেঞ্জ,
ইন্টার ইউনিভার্সিটি কোলাবরেশন এন্ড নলেজ এক্সচেঞ্জ,
লাইব্রেরি ওয়ার্ক,
ল্যাবরেটরি ওয়ার্ক,
একাডেমিক সেমিনার অ্যান্ড ওয়ার্কশপ (যা মূল কার্যক্রমের বাধ্যতামূলক অংশ),
আর্টিকেল পাবলিকেশন,
ক্যারিয়ার ক্লাবিং।
হ্যা, এর সবগুলোই, বা, প্রায় সবগুলোই হয়তো এখনো রয়েছে। আমি বলছি, যে,
এই কার্যক্রমগুলো অতি অবশ্যই কারিকুল্যাম ও ক্যালেন্ডারে বাই-ডিফল্ট থাকা এবং সেগুলো মূল প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে সার্বিক মূল্যায়ন বা রেজাল্টের অংশ হওয়া জরুরী মনে করেন কিনা।
যারা এখনো শিক্ষার্থী আছেন, তারা জানাতে পারেন, যে, আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কার্যক্রমের কতটা চালু রয়েছে। বা, চালু থাকলে, সেটি কতটা ভ্যালু এ্যড করছে? কতটুকু সন্তুষ্ট আপনি সেটি নিয়ে?
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:৩৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×