বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন লর্ড শান্ত'র ব্যাডলাকের ভাগ্য খারাপ। চমৎকার খেলছিল। ১১ বলে ৩ রান করার পর হঠাৎই ছন্দ পতন। এতো কাছে গিয়েও সেঞ্চুরি মিস। কি আর করা.........আসলে শান্তর না, বাংলাদেশের ব্যাডলাকের ভাগ্য খারাপ, বাংলাদেশ ক্রিকেটেরও ব্যাডলাকের ভাগ্য খারাপ। নয়তো আমাকে এই দিনও দেখতে হলো? আচ্ছা হ্যায় ম্যায় আন্ধা হু!!! শান্ত'র বদলে নারী দলের নিগার সুলতানাকে দলভুক্ত করা এখন সময়ের দাবী। সম্ভবতঃ আম্রিকান দলে কয়েকজন কালো খেলোয়াড় থাকায় ''নিগার'' সুলতানাকে দলভুক্ত করা হয় নাই এইবার।
বলছিলাম আসলে আম্রিকাতে বাংলাদেশের টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু নিয়ে। বিশ্বকাপের আগে আম্রিকার সাথে একটা তিন ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। এইগুলোকে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচও বলা যেতে পারে। প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশ জিততে পারতো। তবে পিচ ব্যাটিং কন্ডিশানের না হওয়াতে হেরে গিয়েছে। আবার বাংলাদেশ বোলিং করার সময়ে হাওয়া বইছিলো পশ্চিম দিক থেকে, আর আমাদের বোলাররা বল করে অভ্যস্ত পূর্বদিক থেকে আগত হাওয়ায়। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। হতাশ হওয়া যাবে না; এটা থেকে শেখার অনেক কিছুই আছে। আমাদের বোলারদের এখন পশ্চিমা হাওয়াতে বল করার অভ্যস্ততা বাড়াতে হবে। তাছাড়া মাত্র তো গেল। নতুন জায়গায় রাতে ঠিক মতো ঘুম হয়নি, দীর্ঘ ভ্রমণে শারীরিক ক্লান্তি, মাঠে খাপ খাওয়াতে না পারা, আরও কত কি কারণ আছে হেরে যাওয়ার পেছনে! তবে ঘটনা সেটা না। আমি আশা করেছিলাম দেশ ছাড়ার আগে বাংলাদেশ পুরুষ দল নারী দলের সাথে একটা তিন ম্যাচের প্রস্তুতিমূলক সিরিজ খেলবে। সেটা না খেলাতেই এই বিপত্তি। ফলে বাংলাদেশের এই ফলাফল প্রত্যাশিতই ছিল।
প্রধান নির্বাচক বলেছে, সাইফুদ্দিন প্রত্যাশা পুরন না করায় দলে নাই। তাইলে শান্ত আর লিটন কি কি প্রত্যাশা পূরণ করলো? এরা তো বহুদিন ধরেই প্রত্যাশা পুরন করতে পারছে না, তবুও দলে থাকে কিভাবে? বিসিবি হলো আসলে একটা সার্কাসের দল। এই দলের কর্ণধার পাপন চায় হাতুড়ুকে জামাই বানাতে, হাতুড়ু চায় লিটনকে জামাই বানাতে........ফলে কেউ কাউকে ছাড়তে নারাজ। আর শান্ত তো অটো-চয়েজ। পারফরমেন্স এখানে বিবেচ্য বিষয় না। ক্রিকেট অথবা দেশের মান-সন্মান গোল্লায় যাক, আত্মীয়তা আর চাটুকারিতার জয় বাংলা। নয়তো নৌকা মার্কা স্টেডিয়াম বানানোর দিকে বিসিবি'র যতোটা নজর, তার চাইতে বেশী নজর থাকতো ক্রিকেটের উন্নতির দিকে! পাপন-হাতুড়ু গং যে বাংলাদেশের ক্রিকেট ধ্বংসের ষোলকলা পূর্ণ না করে যাবে না, সেটা বোঝা সারা হয়ে গিয়েছে। এইজন্যই বাংলাদেশ দল সম্পর্কে কোন এক মহান বিদগ্ধ কবি বলেছেন,
রড ছাড়া বিল্ডিং
তামিম ছাড়া ওপেনিং,
রডের বদলে বাশ
লিটন কুমার দাস।।
আমাদের বেশীরভাগ ব্যাটারের একটা জিনিস আমার খুবই ভালো লাগে। এরা ওয়ানডে ক্রিকেট খেলে টি-টুয়েন্টি মেজাজে, টি-টুয়েন্টি খেলে ওয়ানডে মেজাজে, আর টেস্ট খেলে ওয়ানডে আর টি-টুয়েন্টির কম্বিনেশানের মাধ্যমে। আর সব সময়ে শেখার মুডে থাকে। এরা সাংঘাতিক রকমের ট্যালেন্ট, দেখলে মুগ্ধ না হয়ে অন্য কোন উপায় থাকে না!!
বাংলাদেশ পিতিবির একমাত্র দল, যারা ক্রমাগত অফ ফর্মের খেলোয়াড়দের খেলিয়ে ফর্মে থাকা খেলোয়াড়দের ফর্ম নষ্ট করে। ফলে সাইফউদ্দিন, মেহেদী হাসান মিরাজরা দলের বাইরে থাকে। অন্যদিকে পছন্দের খেলোয়াড়কে খেলানোর জন্য সুবিধামতো অভিজ্ঞতা, ট্যালেন্ট ইত্যাদির ধোয়া তোলে। তাই শান্ত, লিটনরা ক্রমাগত হাস্যকর ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী চালু রাখে। আর ফর্মে থাকা খেলোয়াড়রা মাঠে পানি টানে; অনেক সময়ে তো সেটা করারও সুযোগ পায় না।
কোন সন্দেহ নাই, বাংলাদেশ দল প্রথম ম্যাচে চমৎকার খারাপ খেলেছে। তাই শান্তর মতো ক্যাপ্টেনই বাংলাদেশ দলে দরকার। তবে শান্তর কাছে রান চাওয়াটা বোকামি কারন সে যে দলে আছে এটাই বাংলাদেশ দলের জন্য আশির্বাদ। সাবাস লিটন-শান্ত। অন্যরা দলে থাকুক বা না থাকুক, তোমাদের দল থেকে কখনো বাদ দেয়া হবে না। টাকার জন্য চালিয়ে যাও খেলা। আমাদের দেশে পদত্যাগের যেহেতু কোন কালচার নাই, তাই শান্তকে একটা মেডেল দেয়া হোক। হাতুড়ু'র বেতন আরো বাড়িয়ে দেয়া হোক। লিটন-শান্তকে ফর্মে ফেরানোর জন্য ম্যাচে একাধিকবার ব্যাটিং করার সুযোগ দেওয়া হোক। আইসিসি'র কাছে বিসিবি'র এই ব্যাপারে আবেদন করা উচিত। তবে যতো যাই বলেন, বিশ্ব পরাশক্তি আম্রিকার সাথে খেলছে.......এটাই তো অনেক বড় একটা বিষয়!! দেশের ক্রিকেটের দীর্ঘ মেয়াদী উন্নয়নের জন্য আরেকটা কাজও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটা হলো, কোচ-ক্যাপ্টেনসহ বিসিবি'র কিছু নির্বাচিত লোকজনকে ডিম থেরাপী দেয়া। তবে ডিমটা অতি অবশ্যই ডায়নোসরের ডিম হতে হবে।
গাধা দিয়ে হাল চাষ কি বন্ধ হবে না কখনও? বাংলাদেশ টিমের প্রতি আমার একটাই অনুরোধ, দেশবাসীকে আর লজ্জা দিও না। আল্লাহর দোহাই লাগে তোমরা ফিরে আসো! ট্যাকা যা লাগে নাও, তারপরেও আসো। দেশে অনেক নতুন নতুন দোকান হচ্ছে, উদ্বোধন করার জন্য তোমাদের দরকার!!! যাওয়ার আগে শান্ত বেশি আশা না করতে বলেছিল, যথার্থই বলেছিল। শেষ পর্যন্ত যদি না-ই আসে; শিক্ষা সফর শেষে দল যথাযথ শিক্ষা গ্রহণ / অভিজ্ঞতা অর্জন করে সহি-সালামতে ফিরে আসবে, এটাই আমার একমাত্র চাওয়া। পরবর্তী বিশ্বকাপের জন্য অভিজ্ঞতা অর্জনও কম কথা না!!!
খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে শান্ত বলেছে, ''দুশ্চিন্তার কিছু নেই, ব্যাটাররা কাজ করছে। ভালো খেলিনি তাই হেরে গেছি।'' আসলেই দুশ্চিন্তার কিছু নাই। শুধু সমস্যা হলো, আমাদের লজ্জা লাগে, কিন্তু এদের লাগে না। ভয়ে আছি, কোনদিন আসল টাইগাররা না আবার বিসিবিতে এসে দাবী তোলে, ''বস.........এরা আমাদের নাম খারাপ করছে। এদের সুন্দরবনে পাঠিয়ে দেন, ক্রিকেটটা এখন থেকে আমরাই খেলবো!!!''
ছবিসূত্র। Click This Link