somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চাই শান্তি পাক মেয়েটার আত্না,ক্ষমা করুক আমাদেরকে.....

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত ১৯ মার্চ পর্যন্ত তনু বলতে আমরা যার যার ক্লাসের বা পাশের বাসার বা পরিচিত কোন এক তনুকে বুঝতাম।
তারপর ২০ তারিখ থেকে তনু নামটা বললেই পাশের বাসার হাসিখুশি মেয়েটার বদলে মাত্র ১৮ বছর বয়সের একটা না দেখা মেয়ের রক্তাক্ত চেহারা চোখে ভাসতে শুরু করলো।

বীর বাঙালীর আগ্রহের কেন্দ্রে থাকলো কাল পর্যন্তও না চেনা মেয়েটা।কে, কেন, কখন, কিভাবে,কোথায়, কি উদ্দেশে,কার দোষে মেয়েটাকে মেরে ফেলল তা নিয়ে চললো ব্যাপক গবেষনা।অনলাইন সেলেব রা কেউ লিখলো,কেউ চুড়ি পড়লো, কেউ রাস্তায় নামলো ফোকাস হলো একটাই তনু হত্যার বিচার চাই....

লাভের লাভ হলো কি...
ইস্যু প্রিয় বাঙালী নতুন ইস্যু পেল...
মেয়েটা কেমন ছিলো,কেন রাত করে বাড়ি ফিরতো,কেন গান গেয়ে ফেসবুকে দিলো, কার সাথে ফোনে কথা বলতো ,কার সাথে ঘুরতে যেত সর্বোপরি তার চরিত্র নিয়ে জল্পনা কল্পনা করার সুযোগ পেলো.... কিছু অতি উৎসাহী পাবলিক তো এই কনক্লুশনেও পৌছে গেল যে মেয়ের চরিত্র অতি অবশ্যই খারাপ ছিলো...
ওয়াও যাস্ট ওয়াও....!
কাল পর্যন্ত যে মেয়েটাকে আপনি চিনতেনও না আজ তার চরিত্র নিয়ে কথা বলছেন।অসাম না???
বেঁচে থাকতে যে মেয়ে নিজের গায়ে হয়তো একটা দাগও লাগতে দেয়নি আজ মৃত্যুর পর সম্পূর্ন অচেনা দেশবাসী তার চরিত্রের অটোপসি করছে পা নাচাতে নাচাতে। রিয়েলি অসাম...!!

আর সেই রেপিস্ট .... সে হয়তো পাবলিক প্লেসে বসে আপনার পা নাচানো দেখছে, আপনার কথা শুনছে আর আর্মি ভার্সেস সাধারন মানুষের তথাকথিত মৌখিক যুদ্ধটার আগুনে ঘি ঢালছে আর বসে বসে মুচকি হাসি দিচ্ছে....কত্ত কিউট জাতি আমরা...!!

ছোটবেলায় একবার মায়ের সামনে একটা গালি মুখ থেকে বের হয়ে গেছিলো মা এমন এক থাপ্পর লাগাইছিলো পরবর্তীতে ওই কথা আর মুুখেও আসেনি আমার।ওইদিন ওই থাপ্পর না খেতাম আজ হয়তো রাগের মাথায় মা কে ও ওই গালিটাই দিতাম ...ছোটকালের ওই একটা থাপ্পর অনেক কাজ করেছিলো।

আমরা অনলাইনে অনেক চিৎকার করলাম কিন্তু থাপ্পর টা দিতে পারলাম না ঠিকমতো। মাঝখান থেকে কি হলো সেই পারভার্ট টা হয়তো প্রথম দুদিন পালায়ে ছিলো পরের ৫ দিন ভয়ে ছিলো এক সপ্তাহ পর যখন দেখলো বিচার তো বাদ অপরাধী ধরা পরাও দুরের কথা অপরাধীর সামান্য পরিচয় পর্যন্ত বের হলো না তখন সেও হয়ত দিনে হ্যাশ ট্যাগ দিয়ে যাস্টিস ফর তনু লিখে কিছু লাইক কামালো আর রাতে তনুর অসহ্য চিৎকার,চোখের পানি, কুকড়ে যাওয়া শরীর আর বেয়ে পড়া রক্তের কথা ভেবে গ্রাটিফিকেশন নিলো।আর মনে মনে কোন তনু হবে পরবর্তী শিকার তার ছক কষতে লাগলো।

এত পাবলিক ফোকাস পাওয়া একটা রেপ কেসের বিচার যদি না হয় তো কাল আরো হাজারো মেয়ের রেপড হওয়ার সম্ভাবনা ঘরে বসে আমরাই হয়তো বাড়িয়ে দিলাম।

অবশ্য আশাবাদী আমরা ধরে নিতে পারি ইলিশের দাম, আপুদের মাখা আটা ময়দা সুুজির হিসাবের আড়ালে হারিয়ে যাওয়া তনুর হত্যাকারী কাল হয়তো ধরা পড়বে।কাল বা পরশু বিচার ও হয়তো হবে কিন্তু এই যে মেয়ের মুত্যু দেখা বাবা,মা,ভাই বেচে থাকতে মেয়ের চরিত্র খারাপ কথা টা শুনে যে মানষিক কষ্ট পেলো তার কে বিচার করবে?

শেষ করি একটা রিকুয়েস্ট দিয়ে ....
কাল যদি আমার অপঘাতে মৃত্যু হয়( আল্লাহ মাফ করুন,এমন না করুন তিনি ...) তো কেউ বিচার চেয়েন না প্লিজ।অনলাইনে চিৎকার করে বিচার চেয়ে এদেশে বিচার হবে না মাঝখান থেকে মানুষ নিয়ে চরিত্র নিয়ে কথা বলবে।কেউ হাত তুলে দোয়া না করুক কেউ মুখ শিটকায়ে যা ছিলাম না তা বলবে আর বাবা মা সেই কথা শুনবে এটা তো মানা যায় না।বাবা মা সন্তানের অস্বাভাবিক মৃত্যুই মানতে পারে না আর তার উপর এই মানষিক কষ্ট আমরা না হয় নাই দিলাম।

দুদিন পর এ ঘটনার ১ মাস পূর্ণ হবে। অনলাইন সেলেব দের মত আসল হত্যাকারীও হয়তো ঠিক করে রাখছে ওইদিন কি স্ট্যাটাস পোস্ট হবে তার ওয়ালে।আমরা হয়তো না জেনেই পড়বো,লাইক দিবো,কমেন্ট করবো আর তনুর আত্না কষ্ট পাবে.... কি নিষ্ঠুর একটা ব্যাপার হবে ভেবে দেখেছেন একবারো!

হ্যাশ ট্যাগ দিয়ে জাস্টিস ফর তনু লিখতে চাই না...চাই শান্তি পাক মেয়েটার আত্না,ক্ষমা করুক আমাদেরকে.....
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ২:৪৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×