ছাত্রীর ছোট একটা ভাই আছে। মাদ্রাসায় পড়ে। ভীষন দুষ্ট। বয়স সাত কিংবা আট হবে। আমাকে তো একদম জ্বালাইয়া পোড়াইয়া মারে। তবে ছাত্র হিসেবে বেশ মেধাবী সে।
আজ ওদের ঘরে আমার দাওয়াত ছিল। গেলাম সেখানে। ছাত্রও স্কীন টাচ ফোন গুতাইতে গুতাইতে আমার কিনারে আসল। ছোট্ট হইলেও প্রায় আমাকে সে বোকা বানাইয়া ছাড়ে। তার মতিগতি ঠিক বুঝা আমার জন্য বড় দায়।
একবার তো আমার পিঠের উপর হাত দিয়া কইলোঃ ভাইয়া, আচ্ছা বলেন তো এটা কি?
আমি খুব স্বাভাবিকভাবে বললামঃ পিঠ ।
পিঠ বলামাত্রই আমার পিঠের উপর ধুম ধুম কইরা কয়েকটা তাল পড়ার মত শব্দ হইলো। ব্যাথা পাইলেও কি আর স্টুডেন্টের সামনে কাঁদার সুযোগ আছে!
পিডা শেষে হাসিমাখা মুখে বলে উঠলোঃ আপনিই তো বলেছেন আপনাকে পিটতে, তাই পিটলাম।
সেই থেকে আমি এই বালক হইতে ভীষন সাবধান আছি। কথার ভিতরে ভিতরে আমাকে প্রায়ই বোকা বানাতে চেষ্টা করে সে।
যাই হোক ফোন হাতে নিয়া আইসা আমার চেয়ারে শেয়ার হইলো।
কিছুক্ষন পরে কইলোঃ ভাইয়া, আপনি কি বোন (Bone) প্লেট খান?
তার কথার ধরনে বুঝে গেলাম আজও তার মতিগতি খারাপ আছে। এতগুলা মানুষের সামনে আজ আমারে বোকা বানাইয়া দেয়না কে জানে? কেমনে যে ফাঁসাইয়া দেয় তা আল্লাই ভালো জানে। ভয়ে ভয়ে এসব ভাবতেছিলাম।
কপাল কুচকাইয়া জবাব দিলামঃ না তো...
আবার প্রশ্ন ছুড়লঃ ভাইয়া, আপনি কি টিসু খান?
কিছুক্ষন ভাইবা টাইবা একইভাবে উত্তর দিলামঃ নাহ।
পুনরায় একই ধাচের প্রশ্নঃ আচ্ছা, তাহলে কি আপনি দস্তরখানা খান?
এবার বিরক্ত হয়ে উত্তর দিলামঃ না, তুমি খাও নাকি?
-যাহ, এগুলা কি কেউ খায় নাকি?
তার উত্তর শুনে বুঝলাম সে এ প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত ছিলনা।
এতক্ষন পরে মনে এবার সাহস আসল। আত্মবিশ্বাস নিয়ে বললামঃ সেটাই। এজন্যই তো আমি না বললাম।
কিন্তু ছাত্রের পাল্টা জবাবটা আমাকে ঠিকই বোকা বানাইয়া দিলঃ
আপনি ভাইয়া আসলেই একটা (টুট টুট)। এগুলো যে খাওয়ার জিনিস নয় তা তো আমিও জানি। আপনি এটা বলে দিলে তো ঝামেলা শেষ হয়ে যেত। আপনি এমনভাবে জবাব দিলেন যেন অনেকে এসব খেয়ে থাকে। হি হি..
কইয়ামাত্রই দৌড়।
ফিলিং : আইজও ইজ্জত পাইলাম না।