ফরিদপুর আমার শ্বশুরবাড়ির এলাকা। গোপালগঞ্জ মুকসুদপুর শ্বশুরবাড়ি। ফরিদপুর তাদের একাধিক আত্মীয়স্বজন থাকে। এবার অফিসের শত ব্যস্ততার মাঝেও ছুটি নিয়ে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে যেতে হলো ফরিদপুর। মূল শহরে নয়। শহর থেকে বাইরে যে রাস্তাটা মাগুরার দিকে গিয়েছে ওই জায়গাটার নাম মাঝকান্দি। মধুখালির ঠিক আগে। মাঝকান্দি হয়ে যে রাস্তা গোপালগঞ্জের দিকে গেল ওই রাস্তা ধরে একটু এগিয়ে গেলে বাগানের ভেতর বাড়িটা। খুব ছিমছাম। ঢাকা থেকে পরিবার পরিজন মানে শ্বাশুড়ি, বউ, শ্যালিকা, ভাইরা , আমার তিন কন্যাসহ সবাই একটা মাইক্রোবাস ভাড়া করে রওয়ানা করলাম। গাড়িতে ওঠার পর থেকেই সবাই যেন (আমি বাদে) বমির মহোৎসব শুরু করে দিল। আমার ছোটো দুই মেয়ে অবশ্য বাদ। দৌলতদিয়া ফেরিতে উঠে সেটা থামল। বাকি রাস্তা আল্লাহ আল্লাহ করে কাটিয়ে দিলাম।
নতুন শ্বশুরবাড়ি । তাই মিষ্টি কিনতে হবে। চলে এলাম মধুখালী বাজারে। বাগাটের মিষ্টি প্রায় পনের কেজি মতো কিনলাম। দোকানি ইয়া বড় রসগোল্লা খাওয়ালো। দুইটা খাওয়ার পর আমার দুপুরের ভাত খাওয়াই হলো না। রাতে খেলাম একবারে। ও হ্যাঁ, আসল কথা তো বলাই হয়নি। আমাদের বরণ করা হলো। কুলা, দুর্বা ঘাস, রঙিন হাড়ি এবং আরো কত কি যে ছিল। একটা বিষয় বুঝলাম, এই এলাকাতে প্রচুর খেজুর ও তাল গাছ। আছে বাগানের পর বাগান লিচু । এবং বাঁশঝাড়।
গ্রাম এলাকা। তবে ছিমছাম। মসজিদ একটু পরপর চোখে পড়ল দু একটা করে। যাই হোক পরদিন অনুষ্ঠান। যে কারণে ঢাকা থেকে যাওয়া।
বিনোদোন পর্ব: ঢাকা শহরেরর শত ব্যস্ততার মাঝে আমরা বিনোদন খুঁজতে টিভি রিমোট হাতড়ে মরি। কিন্তু বিজ্ঞাপনের অত্যাচারে সেখানেও অসহায়। কিন্তু গ্রামে যে বিজ্ঞাপন ছাড়াই এত বিনোদন জমা ছিল সেটা আপনারা কেউ না দেখলে বুঝবেন না। কয়েকটা উদাহরণ দিই। গিয়ে দেখি বিশাল ডেকসেট ভাড়া করা হয়েছে। কিন্তু কেউ গান বাজাচ্ছে না। আমি গিয়ে আমার অ্যান্ড্রুয়েড স্যামসাং মোবাইলে নতুন যতো হিন্দি গান আছে বাজানো শুরু করলাম। রাতে এল বিনোদনের ফেরিওয়ালারা। গ্রামের উঠতি তরুণ যুবকরা মিলে ব্রেকড্যান্স দিল। গানের তালে তালে। ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েরাও বাদ গেল না। এদের নাচের প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা নেই। কিন্তু যে রিদমে পায়ে পা মিলিয়ে দৃষ্টিনন্দন নাচল, আমি সত্যি অভিভূত। মানিব্যাগ বের করে সবাইকে টাকা দিতে শুরু করলাম।
এরপর এল কৌতুকাভিনয়। ব্যাপারটা এমন: মোবাইলে মীরাক্কেল বা অন্য কোনো স্থানীয় অভিনেতাদের কৌতুকের খন্ডাংশ বাজাল ওরা। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে মেকাপ, গেটাপ তো আছেই। এবং ডাবিংয়ের মতো সংলাপ। এদের সৃষ্টিশীলতা দেখে আমি তো অবাক! আর ওদের অভিনয় দেখে সবাই হেসে গড়াগড়ি যাওয়ার জোগাড়। রাত ২টা পর্যন্ত গান, নাচ ও অভিনয় চলল।
পরদিন অনুষ্ঠান। একদিন পর শ্বশুরবাড়িতে বাজার করতে হবে। এটাই নাকি ওখানকার নিয়ম। নতুন শ্ব্বশুর বাড়ি বলে কথা। আসলে তো গেলাম বিয়ের ১০ বছর পর। সে যাই হোক ওখানে কাছাকাছি বাজারে নাকি মাছ নেই, এজন্য ঠিক হলো অনেক দূরে নকুলহাটি যেতে হবে। বোয়ালমারি, চাঁদপুর, সালথা (সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর পৈতৃক ভিটা), জয়কালী, এরপর নকুলহাটি। রাস্তা নির্জন। পিচঢালা পথ। স্কুলের মেয়েরা বাড়ির পথ ধরছে। অসাধারণ লাগছিল। এক পর্যায়ে হাটে পৌঁছালাম। মোটামুটি মানের থানা পর্যায়ের হাট হবে হয়তো । কিন্তু আমরা হাট শুরুর এত আগে পৌঁছে গেছি যে ওই দুপুরে খাঁ খাঁ রোদের মধ্যে বাজারে বসে থাকতে হল। আমি একটা সেলুনে ঢুকে সেভ করলাম ওই ফাঁকে। সেভ করার পর দিলাম লম্বা ঘুম। বাজারে সবার মুখে একটাই দেখি আলোচনা@ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা কেন এভাবে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারল। (আগেরদিন ছিল ওই সেমিফাইনাল)। কিভাবে কাঁদল মরনে মরকেল আর ডি ভিলিয়ার্সরা।
অবশেষে বেলা ৩টার দিকে ছাগল ও গরু আসা শুরু হলো। একজন ব্যাপারী ধরে আমার শ্বশুর এবং মামা শ্বশুর বেছে বেছে ছাগল একটা কিনল। ৬ হাজার ৪ শ দিয়ে। সিঙাড়া আর কলা কিনলাম দুই ফানা। পানির বোতল ছিলই। এরপর আসার পথে মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেখতে বাড়ির পথ ধরলাম। কাছাকাছি একটা বাজার নামটা সম্ভবত চাঁদপুর বাজার, বোয়ালমারির মধ্যে পড়েছে। বটগাছ আছে বাজারেরর পাশে। সেখান থেকে পানসুপারি কেনা হলো। ও হ্যাঁ। আমরা গিয়েছিলাম ব্যাটারি চালিত ভ্যানগাড়িতে। পথে সেটা একবার নষ্টও হলো। একপর্যায়ে ভালো হলো অটোমেটিক। এজন্যই বোধহয় স্থানীয় লোকে এই গাড়িকে অটো বলে!
বাজার শেষ করে যখন বাড়ি ফিরলাম সকালের সূর্য বিকেলে দূর দিগন্তে হেলে পড়েছে।
আলোচিত ব্লগ
Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।
কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন
কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...
হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?
হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?
হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।