somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের দুই ধারাভাষ্যকারের গল্প

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

* আমার এই লেখাটা প্রথম আলোর খেলার পাতায় ২৪ জানুয়ারি ছাপা হয়েছে।

কীসের টানে বাংলাদেশে তাঁরা?
বদিউজ্জামান, ঢাকা
ধারাভাষ্যে টের পাওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু কাল বুরুন্ডির বিপক্ষে বাংলাদেশের বাতিল হওয়া গোলের সময় হতাশা লুকাতে পারেননি দুজনই। শেহজাদ ও সাইমন—দুজনেরই যে বাজির ঘোড়া ছিল বাংলাদেশ । বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে স্বাগতিক দলের জেতার সম্ভাবনা নিয়ে বেশ স্বপ্নও দেখছিলেন তাঁরা। সেমিফাইনালে দুরন্ত বুরুন্ডি সেটা হতে দেয়নি। এতে মন খারাপ হওয়ার কথা তাঁদের। শেহজাদ হকের তো হৃদয়ের অনেকটা জায়গাজুড়ে বাংলাদেশ। আর সাইমন ম্যাকমেনেমির কাছেও বাংলাদেশ বিশেষ হয়ে থাকবে একটি কারণে।
সিঙ্গাপুরের শেহজাদ পুরোদস্তুর পেশাদার ধারাভাষ্যকার। ঢাকায় এসেছেন বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ধারাভাষ্য দিতে। ১৩ বছর ধরে টেলিভিশনে ফুটবল ধারাভাষ্য দিচ্ছেন, মাঝেমধ্যে ক্রীড়াবিষয়ক অনুষ্ঠানও উপস্থাপনা করেন। এর বাইরে টেনিস, হকি, অ্যাথলেটিকস, ব্যাডমিন্টন, রাগবিরও ধারাভাষ্য দেন। ধারাভাষ্য দিয়েছেন এশিয়ান ও যুব অলিম্পিকস গেমসে। এ বছর টোকিও অলিম্পিকেও ধারাভাষ্যকার হিসেবে দেখা যাবে শেহজাদকে। আর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্ট দিয়ে টেলিভিশন ধারাভাষ্যে অভিষেক হলো স্কটিশ সাইমনের।
শেহজাদের দাদার বাড়ি সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে। কিন্তু শেহজাদের বাবার জন্ম সিঙ্গাপুরে। সিঙ্গাপুরের নাগরিক শেহজাদ ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে ধারাভাষ্য দিতে প্রথমবার সিলেটে গিয়েছিলেন। ধারাভাষ্য দিয়েছেন কক্সবাজার ও ঢাকায়ও। গত বছর বঙ্গমাতা আন্তর্জাতিক অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল টুর্নামেন্টেও ঢাকায় এসেছিলেন। তৃতীয়বারের মতো ঢাকায় এসে খুবই রোমাঞ্চিত শেহজাদ, ‘এখানে যতবার আসি ততবারই ভালো লাগে । শিকড়ের কাছে ফিরে আসতে অন্য রকম আনন্দ। আমি এর আগে কয়েকবার ফেঞ্চুগঞ্জে গিয়েছি। আমার আত্মীয়স্বজন উষ্ণ আতিথেয়তা দিয়েছে। মাছ, মাংস, পিঠা খাইয়েছে। এ এক অন্য রকম ভালো লাগা।’ ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে সেটা প্রকাশও করে দেন, ‘ম্যাচের সময় নিরপেক্ষভাবে ধারাভাষ্য দেওয়ার চেষ্টা করি । মাথা বলে নিরপেক্ষ থাকো কিন্তু মন বলে বাংলাদেশের পক্ষে।’
সাইমন পেশাদার ফুটবল কোচ । ফিলিপাইন জাতীয় দলের দায়িত্ব পান ২০১০ সালে। প্রথমবারের মতো এএফএফ সুজুকি কাপে ফিলিপাইনকে নকআউট পর্বে তুলে ইতিহাস গড়েন সাইমন। এরপর ধারাবাহিকভাবে ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপের বিভিন্ন ক্লাব পর্যায়ে কোচিং করিয়েছেন। নতুন অভিজ্ঞতা নিতেই ধারাভাষ্যের প্রস্তাব বেছে নেওয়া। টুর্নামেন্টের সম্প্রচার স্বত্ব পাওয়া প্রতিষ্ঠান কে স্পোর্টস একজন ফুটবল বিশ্লেষককে ধারাভাষ্যকার হিসেবে এনে সম্প্রচারের মানটা নিয়ে গেছে আরও এক ধাপ ওপরে। ম্যাচগুলোতে সাইমনের ফুটবলমস্তিষ্কের বিশ্লেষণ ধারাভাষ্যে যোগ করছে ভিন্নমাত্রা।
ধারাভাষ্য না ফুটবল কোচিং—কোনটা বেশি উপভোগ করেন? হেসে উত্তর দিলেন সাইমন, ‘আমার প্রথম ভালোবাসা ফুটবল কোচিং । ডাগআউটে দাঁড়িয়ে ফুটবলারদের নির্দেশনা দিতেই ভালো লাগে। তবে ধারাভাষ্যটাও দারুণ উপভোগ করছি। এটা খুব মজার ব্যাপার। নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে। কোচ বলেই ধারাভাষ্যটা সেভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে দেওয়ার চেষ্টা করি। মাঠে ফুটবলাররা কীভাবে খেলছে, সাইড বেঞ্চে কী হচ্ছে, সব ভালোভাবে বুঝতে পারি।’
এরই মধ্যে বাংলাদেশের দুটো ম্যাচ খুব কাছে থেকে দেখেছেন । তবে এর বাইরেও বাংলাদেশের ফুটবলারদের সম্পর্কে ভালো ধারণা আছে সাইমনের। সাইফ স্পোর্টিংয়ের কোচ দ্রাগো মামিচের বিপক্ষে ডাগআউটে ছিলেন ইন্দোনেশিয়ান লিগে। মালদ্বীপের নিউ রেডিয়েন্টের হয়ে কাজ করেছেন, একসময় যে দলের কোচ ছিলেন বসুন্ধরা কিংসের অস্কার ব্রুজোন। অস্কারের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ আছে। আর জাতীয় দলের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডের সঙ্গে ঢাকায় এসেই কথা বলেছেন। ফুটবলারদের অনুশীলন দেখেছেন। এবারের বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে দেখেই সাইমন টের পেয়েছেন বাংলাদেশের ঘাটতিটা, ‘এই বাংলাদেশ দলের একটাই সমস্যা, সহজাত স্ট্রাইকার নেই । তবে মতিন প্রতিভাবান ফুটবলার। ওর দুটো গোলই দুর্দান্ত ছিল।’ সে সমস্যাটাই বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে বাংলাদেশকে অতিথি বানিয়ে দিল আরেকটি ফাইনালে ।

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৪৫
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×