হিট ক্র্যাম্প # হিট অ্যাগজশন # হিটস্ট্রোক
ডা. সাঈদ হায়দার, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
তাপজনিত তিনটি বিপত্তি হচ্ছেÑ
তাপে পেশিতে খিল ধরায়। এ ক্র্যাম্প প্রধানত লক্ষ্য করা যায় পায়ের মাংসপেশিতে এবং প্রায়ই গরম পরিবেশে ব্যায়াম গ্রহণের পর। এর কারণ দেহকোষের বাইরের সোডিয়াম কমে যাওয়া। ঘাম হওয়ার সময় শুধু পানি নয় সেই সঙ্গে লবণ খেতে দিলেই এ অবস্থার দ্রুত নিরাময় হয়।
তাপ অবসাদ বা হিট অ্যাগজশন। এই বিপত্তিটা সাধারণত দেখা যায় তাদের, যারা উত্তপ্ত পরিবেশে প্রথম অবারিত হয়েছেন এবং পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে পারেননি। টেক্সটাইল বা জুট মিলের শ্রমিকদের মধ্যে এবং ফারনেসের কাছে কার্যরত শ্রমিকদের মধ্যে এমনটা ঘটে। ঘামে শরীরে পানি ঘাটতির জন্য অথবা পানি ও লবণ উভয়ের ঘাটতির জন্য এমন বিপত্তি ঘটে। এই তপ্ত পরিবেশে দেহ থেকে চার-পাঁচ লিটার পানি এবং ২০ গ্রাম লবণের ঘাটতি হওয়া অসম্ভব নয়। মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, অবসাদ এবং মূর্ছা যাওয়া প্রভৃতি এই বিপত্তির লক্ষণ হতে পারে। রক্তচাপ কমে যেতে পারে, রোগী প্রলাপ বকতে পারে। সজ্ঞান রোগীকে ঠাণ্ডা পরিবেশে খাবার স্যালাইন খেতে দিতে হবে। রোগীর জ্ঞান না থাকলে স্যালাইন দিয়ে পানির ঘাটতি মেটাতে হবে। ঠাণ্ডা স্পঞ্জিং প্রয়োজন।
হিটস্ট্রোকে। এ অবস্থা জীবনের প্রতি হুমকিস্বরূপ। মাথাধরা বমনেচ্ছা, বমন, দুর্বলতা প্রভৃতি লক্ষণ দিয়ে শুরু। রোগীর উচ্চমাত্রায় জ্বর এবং ত্বক প্রায়ই শুকনো থাকে। এর পর রোগীর চারদিকে ঘোলাটে মনে হয়, ভুল বকতে পারে এবং তারপর দেহ বহু সময় ধরে তাপ ও আর্দ্র পরিবেশে অবারিত থাকার ফলেই ‘হিটস্ট্রোক হয়।
রোগীকে দ্রুত ঠাণ্ডা স্থানে সরিয়ে নিতে হবে এবং শরীর স্পঞ্জ করে এবং বরফ পানি ব্যবহারে ঠাণ্ডা করতে চেষ্টা করতে হয়। ত্বরিত চিকিৎসাই রোগীকে বাঁচাতে পারে এবং প্রয়োজনে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা উচিত।