somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুক্তমতের প্রয়োজনীয়তা।।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্বাধীন চিন্তাই মানুষকে আদিম থেকে আধুনিক রূপ দিয়েছে।যে কোন সংকটেই দশটি স্বাধীন মতের মধ্য হতে অধিকতর ভাল মতটি প্রতিষ্ঠীত হয়েছে! কখনো কখনো একাধিক মত গৃহীত হয়েছে একাধিক দল উপদলে বিভক্ত হয়ে। রাজনীতি -ধর্ম- দর্শন- ভাষায় এই ভিন্নমতের কারনেই বিচিত্ররুপে বিকশিত হয়েছে। সব ভৌগোলিক-অর্থনৈতিক মানব গোষ্ঠীর জন্য সব তত্ত্ব উপযোগি নয় বলেই পৃথিবীর একেক প্রান্তে বিকাশ একেক রূপে ঘটেছে।
ধর্ম ও দর্শনের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয় নি। বস্তুত প্রত্যেকটা সুসংহত সমাজের অতীতের সাথে বর্তমানের রয়েছে ঐতিহাসিক সেতুবন্ধন, অবিচ্ছিন্ন যোগ। অতীতের কোন সংকট থেকে উত্তরণের পথই একেকটা গোষ্ঠীর জন্মদিয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক মত, অর্থনৈতিক তত্ত্ব, ধর্মের উত্থান, ভাষার বিকাশ লক্ষ করলেই এর প্রমান পাওয়া যায়।

যখনি কোন বিষয়কে শ্রেষ্ঠ ধরে নিয়ে এটাকে টিকিয়ে রাখার জন্য বাধ্যতামুলক নীতি প্রয়ীগ করা হয়েছে তখনই তার বিকাশ রুদ্ধ হয়েছে। শুধুমাত্র আরো উন্নত বিকাশ থেকেই বঞ্চিত হয় নি, ধ্বংস হয়ে গেছে! একটা নীতি বা তত্ত্ব যতই কার্যকরি বা শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠীত হোক না কেন সময়ের প্রয়োজনে এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাকে খাপ খাওয়ার স্বাধীনতা না দিলে তার ধ্বংস অনিবার্য। রাজনীতি, ধর্ম ও দর্শনের মত নিয়ত পরিবর্তিনশীল বিষয়ের ক্ষেত্রে এর প্রযোজ্যতা শত ভাগ।

কম্যুনিজম, স্যোশালিজম, ফ্যাসিবাদ, নাৎসিবাদ, মাও বাদ ইত্যাদি রাজনৈতিক মতের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ব্যপক জনসমর্থন, অর্থনৈতিক, সামাজিক কাঠামোর প্রেক্ষিতে। লাখ লাখ মানুষ জাতীয়তাবাদ বা অন্য কোন আদর্শে অনুপ্রানীত হয়ে হয়ে জীবন দিয়ে আদ্র্শ প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু সময়ের সাথে মানুষের মনোজগত ও বাহ্যিক কাঠামোর যে পরিবর্তন সূচিত হয়েছিল তার সাথে তত্ত্বের বিরোধের কারনেই মানুষ বিদ্রোহী হয়ে উঠে।যখনই বুঝিতে পারে যে এই রাষ্ট্রব্যবস্থায় তাকে বাধ্য করা হচ্ছে তখনই আবার প্রান দিয়ে সেই মত বাতিল করার জন্য আবার প্রান দিতে প্রস্তুত হয়। করাকরি আরোপ না করে যদি সময়ের প্রয়োজনে সংশোধনের সুযোগ রাখা হত তাহলে হয়তো এত তারাতারি তুমুল জনপ্রিয় এই ব্যবস্থাগুলো ধ্বংস হয়ে যেত না। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় এখন উদার গণতন্ত্র এবং অর্থ ব্যবস্থা জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে; ধারনা করি বিশ্ব বানিজ্য কেন্দ্র, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এর দৌরাত্মেই এর বিনাশ হবে।

ধর্ম কিংবা দর্শনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। দর্শনে আকৃষ্ট হয়ে আত্মীক সংকটে থাকা লাখ লাখ মানুষ মুক্তির আশায় পতঙ্গের মত ঝাপ দিয়ে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু ধর্মকে যখনই নিয়ম নীতির শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হয়েছে, রীতি নীতি পালন বাধ্যতামুলক করা হয়েছে তখনই ধর্ম তার স্পিরিচুয়াল বৈশিষ্ট হারিয়ে হয়ে গেছে সামাজিক রীতি বা আচারের উৎস। তখন দলে মানুষ ধর্মত্যাগি হয়েছে; বাকিরা ধর্ম সম্পর্কে উদাসীন হয়ে গেছে। এখন আত্মীক উন্নতির মাধ্যম হিসাবে কেউ আর ধর্মের বশ্যতা স্বীকারে করে না।

মুক্তমত বা তত্ত্ব ভৌগোলিক, রাজনীতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলেই সেটা মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্যতা পায়। বাস্তব অবস্থার সাথে অসঙ্গতি পূর্ণ তত্ত্বের প্রতিষ্ঠা কোন প্রকারেই সম্ভব নয়। এই উপমহাদেশের অর্থনৈতিক -রাজনৈতিক বিভিন্ন উত্থান -পতনে সমাজতন্ত্রের মত কার্যকরি ব্যবস্থাও কিছুটা সফলতা লাভ করলেও প্রতিষ্ঠা পায় নি; প্রতিষ্ঠা পায় নি বাস্তবতার কারনে। রাশিয়ার মত শিল্পোন্নত দেশের জন্য প্রবর্তিত ব্যাবস্থা এখনে কাজ করবে না এটাই স্বাভাবিক। বাস্তবতার প্রেক্ষিতে নেতারা এই তত্ত্ব সংশোধনের উদ্যোগ না নিয়ে যার যার তত্ত্বের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে লড়াই করে জীবন যৌবন পার করে দিলেন! প্রতিষ্ঠা তো পানই নি যেটুকু জনপ্রিয়তা ছিল সেটুকুও হারিয়েছে।

মুক্ত মত প্রকাশের সুযোগ দিলেই কেবল কোন ব্যবস্থা সার্বজনীন কল্যানের দিকে এগিয়ে যাবে। মানুষ প্রয়োজনীয় ভালটুকু রাখে অপ্রয়োজনীয় অংশটুকু ত্যাগ করবে। আর জুলুম করে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করলেই পথ না পেয়ে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে।

ইতিহাস আমাদের এই শিক্ষাই দেয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৫৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×