মেডিয়েভাল পিরিয়ডে ব্রিটিশরা ইউরোপের কোন
একটি অঞ্চল দখল করলে primae noctis নামক
একটি আইন দ্বারা দখলকৃত অঞ্চলের নারীদের
বাধ্য করতো বিয়ের প্রথম রাতে সেই অঞ্চলের
ব্রিটিশ শাসকের সাথে রাত্রি যাপন করতে।
উদ্দেশ্য ছিল এ থেকে এমন সন্তান জন্ম
দেওয়া যারা না ব্রিটিশ না নেটিভ। এক
বেজন্মা বাস্টার্ড শ্রেণী, যাদের জীবনের
উদ্দেশ্যই ছিল যেকোন মূল্যে ব্রিটিশ শাসকের
স্বার্থ রক্ষা। বৃটিশ কলোনীর স্থায়িত্ব
রক্ষায় এই নতুন প্রজন্ম ব্যাপক সহায়ক হত।
** ** **
কলোনাইজেশনের যুগ আর নেই। সেদিনের প্রভু
ব্রিটেনের ভূমিকায় আজ আমেরিকা। তাদের নীতিও
অভিন্ন। বিশ্বব্যাপী একটা ব্রেইনওয়াশড
প্রজন্ম তৈরি করা। যাদের কাজ হবে আমেরিকার
গীত গাওয়া। আমেরিকাকে সভ্যতার মানদণ্ড
হিসেবে গ্রহণ করা।
৯/১১ পরবর্তী সময়ে উপযুক্ত ইস্যু
পেয়ে আমেরিকা আইডিওলজিকাল
ক্ল্যাশে একটা টেম্পো পাওয়া জ্ঞান করল।
ইস্যুটা হল "জঙ্গি ইস্যু।" তারা বিলিয়ন
বিলিয়ন ডলার খরচ করল বিশ্বব্যাপী,
একটা মুসলিম তরুণ প্রজন্ম গড়ে তুলতে।
ইসলামের প্রচার ঘটাতে।
হ্যাঁ, খ্রিস্টধর্ম প্রচারে না, ইসলাম
প্রচারেই। বাতিল আদর্শ অস্ত্রের
জোরে প্রতিষ্ঠা করা যায় না,
তা তারা বুঝেছিল ভালোমতই। তাই নিজেদের
দ্বীন প্রচারে এই বিনিয়োগ করেনি, করেছিল ইসলাম
প্রচারে। এই ইসলামের নাম "পপুলার ইসলাম।" এই
ইসলামের অনুসারীদের নাম "মডারেট মুসলিম।"
ইমাম আওলাকি এদের বলেছেন র্যান্ড মুসলিম।
কারণ মডারেট মুসলিমের সংজ্ঞাটা নির্ধারণ
করেছিল ইউ এস ফোর্সের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক
র্যান্ড (RAND) আর পেন্টাগনের প্রকাশিত
প্রবন্ধ।
এই মডারেট মুসলিমরাই হল মার্কিন
স্বার্থোদ্ধারের হাতিয়ার। র্যান্ডের
সংজ্ঞায়িত মডারেট ইসলামের
মধ্যে আছে গণতন্ত্রকে সমর্থন,
ধর্মনিরপেক্ষতা, শরীয়াহ আইনের
অপ্রয়োজনীয়তা, জিহাদ-বহুবিবাহের মত
ইস্যুগুলোতে শিথিলতা, আর সবচেয়ে বড়
বৈশিষ্ট্য, মুজাহিদীনদের তাচ্ছিল্য করা,
তাদের বিপক্ষে বলা। এই ইসলামের
দা'ঈরা কুফফারদের শিখিয়ে দেওয়া ইসলাম প্রচার
করবে।
আজকে আমরা দেখি পপুলার ইসলামের
ঝাণ্ডাবর্দারদের। কেউ মুজাহিদীনদের
বলে অশিক্ষিত, কেউ বলে ইসলামী রাষ্ট্র
প্রতিষ্ঠা ফ্যান্টাসি, কেউ বলে পশ্চিমাদের
অনুসরণ করেই মুসলিমদের উন্নত হতে হবে, কেউ
বলে জিহাদের আয়াতগুলো ১৪০০ বছর আগের জন্য;
এখন সময় বদলে গেছে।
** ** **
মোটা দাগে পৃথিবীর আ'লিমরা দুইটি দলে বিভক্ত।
একটি দল এমনভাবে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে চায়
যেন তাঁরা আল্লাহ্র ওপর এবং আল্লাহ
তাঁদের ওপর সন্তুষ্ট।
আরেকটি দল দুনিয়ায় এমনভাবে বেঁচে থাকতে চায়
যেন তারা কাফিরদের ওপর এবং কাফিররা তাদের
ওপর সন্তুষ্ট।
দল দুটি সমান না। কস্মিনকালেও না।