কিছুদিন আগেই রেকর্ড গড়ার
কাঁচা মুলো ঝুলিয়ে কোটি কোটি টাকা অমুক
ভাই তমুক ভাই-এর
সিন্দুকে পুরে চেতনার রিটেইলারগণ
জাতিকে ঠেলে ঠুলে জমায়েত
করলো প্যারেড গ্রাউন্ডে।
সেখানে তেঁতুল
বরবটি বা করলা মোসাম্বির
মধ্যে কোনরূপ বাধা ছিলনা। ফলাফল,
জাতিকে টক সালাদের এক জঘন্য আইটেম
আস্বাদন করতে হল।
আপুদের সেদিন সে কী রাগ! আমাদের
জোর করে নিয়ে গেছে, মাথায়
তুলে নিয়ে গেছে, নাইলনের
রশি দিয়ে বেঁধে নিয়ে গেছে,
আমাদের ভাইয়ারা রেস্পেক্ট দেয়নাই,
আঙ্কেলরা প্রটেক্ট করে নাই, বক বক বক,
পক পক পক ইত্যাদি। তো, হুজুররা যখন
ফ্রী মিক্সিং নিয়ে নসিহত করতো, তখন
খুবই তিতা লাগতো। আর যখন সালাদ
বানানোর মেশিনে গিয়ে পড়তে হল, তখন
আক্কেল জায়গা বরাবর
এসে বাড়ি খেতে লাগলো।
তবে ওই ন্যাড়ার কথা যা বলছিলাম আর
কি। আগামী পরশু বর্ষবরণের
অনুষ্ঠানে ঘুরে ফিরে এইসব আপুরাই
চেতনার এক্সিবিশান দিতে যাবেন।
তাও নাকে মুখে প্লাস্টার মেখে,
‘ট্রেডিশনাল’ টাইটেলের অদ্ভুত
পোশাকে আবৃত হয়ে তারা আকর্ণ
হাসি বিস্তৃত করে ঐ
বরবটি মোসাম্বিদের মাঝেই
গিয়ে হাজির হবেন আর কতক্ষণ এদিক
হেলবেন তো কতক্ষণ ওদিক দুলবেন। ‘ইউ
নো, আজখেই পান্ঠা ইলিশ খেটে হবে’
বলে নারী পুরুষ
নির্বিশেষে ব্রয়লার মুরগীর ঘরের মত
দম বন্ধ পরিবেশে পান্তা-ইলিশ
গিলবেন। কতক
বরবটি যদি গায়ে গতরে হাতও দিয়ে যায়,
তাতে চেতনার সংবিধানে বিশেষ কোন
সংশোধন আসবেনা, কারণ তখন
স্টেজে চলছে “বখাটে ছেলের
ভিড়ে ললনাদের রেহাই নাই”, যার
তালে তালে মাতাল হয়ে একে অন্যের
মাথায় তাল ভাঙছেন আপু আর
ভাইয়া শ্রেণী।
তো প্যারেড গ্রাউন্ডের সালাদ আর
রমনা বটমূল কিংবা ডিসি হিলের
সালাদের মৌলিক পার্থক্য হল এক
জায়গায় তাদের নাইলনের
দড়ি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়েছে,
আর আরেক জায়গায় যাওয়ার জন্য
তারা সেচ্ছায় আগের রাত
থেকে মুখে শসা টমেটো মেখে থাকেন।
দোষ
বরবটি মোসাম্বি কিংবা পেঁপে তরমুজদের
দিয়ে লাভ নেই। নিজের
কলবটা পরিষ্কার করুন। নিজের
অন্তরকে প্রশ্ন করুন, এই ডাবল ফেইস আর
কতদিন জিইয়ে রাখবেন। যদ্দিন
না নিজের নফসের পূজা ছেড়ে আপনার
রব্ব এর ইবাদত করবেন, তদ্দিন এইসব
সালাদের আইটেমই টেস্ট করতে হবে।
সেটা কোমরের দেড় হাত নিচে প্যান্ট
পরা ভাইয়াই হোন, আর পোষাক
পরিহিতা নগ্ন আপুই হোন।
নিজেকে নিজেই ধোঁকা দেয়া ছাড়ুন।
দেখবেন চারপাশটা কেমন
গোড়া থেকে বদলে যায়।