শাহবাগের গণজাগরণের বিপক্ষে নানা জনের নানান যুক্তি। বিভিন্ন প্রোফাইল ঘেটে নানামুনির স্ট্যাটাস থেকে সংগ্রহ করেছি বেশ কিছু 'কথামালা'। সেগুলোর সারমর্ম করলে দাঁড়ায় এরকম।
১. জনৈক আওয়ামী কর্মীর বয়ান : 'বেহুদা আন্দোলন। এই আন্দোলন আরো আগে করলে বিচারের রায় অন্যরকম হইতে পারত। এখন আমাদের নেতাদের ইট পাটকেল মেরে কোন লাভ নাই।'
২. জনৈক দ্বিধাবিভক্ত বিএনপি কর্মীর বয়ান : 'এই আন্দোলনের ফল আওয়ামীলীগের ঘরেই যাবে। তাই এই আন্দোলনে আমরা নাই। আমরা নজর রাখছি। সময় মতো দেখেশুনে আমরা একাত্মতা ঘোষণা করব।'
৩. জনৈক মৌলবাদীর বয়ান : 'এখানে যারা গেছে, এরা কেউ নামাজ পড়ে না। নাচা-গানা করে। এদের উদ্দেশ্যও কুফরি।'
৪. জনৈক শিবিরকর্মীর বয়ান : 'আল্লাহ তার প্রিয় বান্দা কাদের মোল্লাসহ সব নিরপরাধ কয়েদিকে এই দুস্কৃতিকারী আন্দোলনকারীদের হাত থেকে রক্ষা করবেন। আমিন।'
৫. জনৈক আস্তিকের বয়ান : 'জাফর ইকবালসহ দুই তিনজন নাস্তিক আছে শাহবাগে। এটা নাস্তিকদের আন্দোলন। নাউজুবিল্লাহ।'
৬. জনৈক স্বঘোষিত আম জনতার উক্তি : 'শাক-সবজির দাম যে হারে বাড়ছে। তা নিয়ে আন্দোলন না করে ৪২ বছর আগের ঘটনা নিয়ে আন্দোলন করার কি যুক্তি থাকতে পারে।'
৭. টক শোতে জনৈক এরশাদপ্রিয় আইনজীবির বয়ান : 'বিচারের রায়কে প্রভাবিত করার চেষ্টা এক ধরনের অপরাধ। শাহবাগের এরা বুঝে না কেন। আমি তো ৭২ সালের রাজাকারের লিস্টে কাদের মোল্লার নাম দেখি নাই। এখন রাজনৈতিক কারণে এদের বিচার হচ্ছে।'
৮. জনৈক অ্যানালগ নাগরিকের বয়ান : 'ব্লগ, ফেসবুক আবার কি জিনিস? এরা কেমনে আন্দোলন করে? নিশ্চয়ই আওয়ামীলীগের রাজনীতি আছে এখানে।'
...........
এই হাস্যকর অভিযোগগুলোর যুক্তি খণ্ডন করছি আমি আমার মতো করে। আপনারাও আপনাদের মত শেয়ার করতে পারেন।
১. আচ্ছা তাই নাকি! তার মানে স্বীকার করেই নিলেন, আপনারা জামায়াতের হুংকারে ভয় পেয়েছিলেন। শোনেন ভ্রাতা, হুকুমে কিন্তু হাকিমও নড়ে। এতটা বোকা ভাববেন না।
২. তোমরা সারাজীবন এইভাবেই রাজনীতি করেছো। সাধারণ মানুষের 'পালস' তোমরা কখনোই ভালো অর্থে বুঝতে পারো নাই। তোমাদের একাত্ম হওয়ার ঘোষণার অপেক্ষায় কেউ বসে নাই। যত্তসব।
৩. হ। আমরা নামাজ রোজা করা মেশিনবাজ সাঈদীকেও দেখেছি। আর কিছু বলার নাই।
৪. এরা যে আল্লাহর প্রিয় বান্দা। এমন কোনো আয়াত তো নাই কোরানে। তাইলে কেমনে বুঝলেন এরা আল্লাহর প্রিয় বান্দা?
৫. ঐখানে তো আমি দাড়ি-টুপি পরা লোককে নামাজ পড়তেও দেখেছি। পৈতা ছাড়া হিন্দুও আছে। দুই তিনজন নাস্তিকের কারণে....। আসলে অজুহাতের কোনো মা-বাপ নাই।
৬. আমি জানি তোমার নেতারা এইসব কথা তোমার মুখে তুলে দিয়েছে, নিজেদের বাচানোর জন্য। এক কাজ করেন, শাক সবজির দাম বাড়ার কারণে আপনিই আন্দোলনে নেমে পড়েন। আমরাও থাকব সেখানে। আরে বোকা, এই দুইটা বিষয় কি এক হইলো। এটা আমাদের অস্তিত্বের লড়াই।
৭. ইনি হচ্ছেন ব্যরিস্টার রফিকুল হক। উত্তর দেওয়ার দরকার নাই। কারণ, গতকালই আবার তাকে দেখলাম কিভাবে কাদের মোল্লাকে ফাসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া যায়, তার পথ বাতলে দিচ্ছেন। মেরুদণ্ডহীন কাপুরুষ আর কারে বলে!
৮. দয়া করে এরে কেউ একজন ফেসবুকে আর সামুতে একটা অ্যাকাউন্ট খুইলা দেন। ও নিজেই বুঝে যাবে। ডিজিটাল যুগের অ্যানালগ বলদ কোথাকার!