somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“তোরা তোদের জন্মদাতা-দাত্রীদের সাথে যে আচরণ করলি, তোদের সন্তানেওরা যেন ঠিক একই আচরন করে”

০৩ রা অক্টোবর, ২০১০ সকাল ৮:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
স্বামীর কবরের পাশে বাস করতে চেয়েছিলেন রাবেয়া


গত কয়েকদিন থেকে ইত্তেফাকে ধারাবাহিক ভাবে সমাজে নিজ নিজ আপনজনদের দ্বারা চরম নিগৃহীত প্রবীণদের মর্মস্পর্শী সত্য ঘটনা তুলে ধরা হচ্ছে। সাংবাদিক আবুল খায়ের তাঁর লেখনীর মেধাতে সেই সব সত্য ঘটনাকে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন যা পড়ে বিবেকবান যে কোন মানুষেরই চোখের অশ্রু সংবরণ করা নিতান্তই কষ্টকর হয়ে পড়ে। প্রতিটি পর্ব পড়ছি আর অবাক বিষ্ময়ে হতবাক হচ্ছি কি ভাবে একজন সন্তান সম্পত্তির লোভে, স্বামী/স্ত্রী-র প্ররোচনায় কিংবা অন্য কোন কারণে নিজের জন্ম দাতা-দাত্রীদের সাথে এই রকম অমানবিক আচরণ করতে পারে!!!!
মনে পড়ে বেশ কয়েক বছর আগে সাপ্তাহিক "যায় যায় দিনে"র বিশেষ সংখ্যা 'মা'-র এক লেখায় পড়েছিলাম, যেখানে 'মা' নিজের বাড়ীতে অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় কয়েকদিন পড়ে থাকার পরেও ব্যাস্ত পেশাজীবি সন্তানদের সময় হয় না মা-র পাশে দু মিনিট বসে মায়ের মাথায় হাত বুলিয়ে সামান্য একটু ভাল-মন্দের খোঁজ নেবার। সে সময় এক বাড়ীতে থেকেও চরম একাকীত্বে ভোগা অসুস্থ শয্যাশায়ী মা-র সংগী হয় গ্রাম থেকে নিয়ে আসা ১২ কিংবা ১৪ বছরের বাসার 'কাজের মেয়ে' শেফালী (বয়স ও নামটা ঠিক মনে করতে পারছি না)। শেফালীর অকৃত্রিম ভালবাসা ও সেবা শশ্রুসায় এই বৃদ্বা মা অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেন আর স্বাভাবিক ভাবেই এই অসহায় মা-এর দুর্বলতা ও সমস্ত ভালাবাসা এই গরীব মেয়েটিকেই ঘিরে আবর্তিত হতে থাকে। বাংলাদেশে বাসার কাজের মেয়ে/বুয়াদের সাথে সাধারনত: যেভাবে অন্যায় আচরণ করা হয় তার থেকে শেফালী ব্যতিক্রম ছিল না। কিন্তু বৃদ্বা মা-এর শেফালীর প্রতি দুর্বলতা আর ভালবাসা দেখে সন্তানেরা ভেবে বসে তাদের মা- বুঝি সহায়-সম্পত্তি এই শেফালীকেই দিয়ে দিবে। আর এই সন্দেহ থেকেই তারা শেফালীকে পরিকল্পিতভাবে চোর বানিয়ে চরম অপমান ও নির্যাতন করে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয় (তবু ভালো গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাকা দেয় নি)। এই অপমান আর কষ্টের বোঝা এই বৃদ্বা মা আর শেফালী দুজনের কেউই সহ্য করতে পারে নি। একজন প্রচন্ড মনোকষ্টে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে আর আরেকজন ক্ষোভে, দু:খে আর অপমানে গলার ভিতর দিয়ে কীটনাশক ঢেলে দিয়ে এই সুন্দর(!) পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়।

উপরের ঘটনাটা গল্প কিংবা জীবন থেকে নেয়া সত্য কাহিনী যাই হোক না কেন, এটাই এখন যুগের সাথে পরিবর্তিত অসহিণ্চু লোভী বাংগালী সমাজের পুরোপুরি না হলেও আংশিক দর্পণ, যার আবার বেশীর ভাগই অপ্রকাশিত থেকে যায়। পাশ্চাত্যের সমাজ ব্যাবস্থায় বয়স্কদের একাকীত্ব থেকে মুক্তি লাভের নানা সুযোগ-সুবিধা থাকার পাশাপাশি শেষ বয়সের আর্থিক আর মানসিক সচ্ছলতায় এই সুন্দর দুনিয়া থেকে বিদায় নেবার অনেক উপকরণ বিদ্যমান। অন্যদিকে বাংলাদেশে বেসরকারী আর সরকারীভাবে সমন্বিত উদ্যোগ আর গাজীপুর বৃদ্বাআশ্রমের খতিব আব্দুল মজিদ মুকুলের মতো বিশাল হৃদয়ের মানুষ এগিয়ে না আসলে ১০২ বছর বয়সের বৃদ্বা রাবেয়া খাতুনের মতো আরো অনকের ঠিকানা হবে ঐ আজিমপুর কলোনীর সিড়ির চিলেকোঠা কিংবা ডাষ্টবিনের পাশে ময়লা কোন ফুটপাত...........
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০১০ সকাল ৮:৩৮
৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×