somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেম করার কথা ভাবছেন? তবে জেনে নিন আপনার সামনে কী কী ঘটতে যাচ্ছে!!

২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"কথায় বলে, মেয়েরা একটা ছেলের কাছে পৃথিবীর সব কিছু আশা করে, আর ছেলেরা পৃথিবীর সব মেয়ের কাছে একটা জিনিসই আশা করে। " কথা এটা না, আসল কথা হল, এই চাওয়া পাওয়ার উপরে ভিত্তি করেই প্রেম-পিরিতি চলছে। ব্রেকআপএর পরেই সে হয়ে যায় দার্শনিক। "প্রেম বলে কিছুই নেই...... সবই সাময়িক আবেগ... প্রেম করা মানে- ভালো পাছা চুলকিয়ে ঘা বানানো.... সব মেয়েরা ছলনাময়ী/ সব ছেলেরাই লুইচ্চা...... প্রেম করার চেয়ে মুরগী পালা ভালো... জাতীয় বয়ান আউড়াইতে থাকে। পরবর্তীতে 'টয়লেট' থিওরীকে সত্য প্রমাণ করে আবার অন্য আরেকজনের সাথে রিলেশন শুরু করে দেয়। খুঁজতে থাকে নতুনত্ব। কিন্তু কয়েকমাস পর আর কোন নতুনত্ব খুঁজে না পেয়ে সেই প্রেমেরও ইতি টেনে আনে। প্রতিটি প্রেমের প্যাটার্ন বা স্টেপ এক রকম। কেন মানুষ বারেবারে প্রেমে পড়েও ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে, এই কারণ বের করতে আমি আজকে প্রেমের পর্যায়গুলো একটু তুলে ধরবো-

প্রাথমিক পর্যায়ঃ প্রেমের শুরুর দিকে দুজন দুজনকে ইমপ্রেস করার চিন্তায় মগ্ন থাকে। ছেলেটি তার সারাজীবনে যত গুণ সঞ্চয় করতে পেরেছে তার বর্ণনায় ব্যস্ত। মেয়ের সামনে নিজেকে নায়ক হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করতে থাকে। হয়তোবা বাসের কন্ডাকটরকে ২ টাকা কম দিয়েছে, এই ঘটনা এমন ভাবে বর্ণনা করে যেন সে একজন ভিআইপি, তাই কন্ডাক্টর তার কাছে ভয়েই টাকা চায় নি। ছেলেটি তার সারাজীবনের বীরত্বের কথা, জয়ের কথা, সাহসের কথা, নায়কত্বের কথা বলে মেয়েকে ইমপ্রেস করাতে ব্যস্ত থাকে। গার্লফ্রেন্ড শুনলে রেগে যাবে, বা পছন্দ করে না এমন কাজ ও কথা কখনোই করবে না। এছাড়াও মেয়ের চেহারার প্রশংসা তো আছেই। "ইশশ.... তুমি কত সুন্দর করে নাক খুটাও, আমার এত্তো ভালো লাগে!! মনে হয় খেয়ে ফেলি"- জাতীয় কথাও হয়ে থাকে। অন্যদিকে, মেয়েটি এই পর্যায়ে ব্যস্ত থাকে তার সমস্ত সৌন্দর্য প্রদর্শন করে ছেলেটির সামনে পরী হয়ে থাকতে। আর হ্যা, মাঝে মাঝে ভাব নিতে একদম ভুল করে না। "তুমিই আমার জীবনের প্রথম পুরুষ" জাতীয় কথা বলে ছেলেকে মুগ্ধ করতে চায়। সেই সাথে ছেলের মুখ থেকে তার রূপের প্রশংসা শুনতে সর্বদা মুখিয়ে থাকে। মোট কথা এই পর্যায়ে কারো কোন ভুল/দোষ চোখে পড়ে না। অথবা দোষ থাকলেও সবাই তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতেই মেনে নেয়। রাগ করলেই যদি পাখি উড়ে যায়, বা আমাকে খারাপ ভেবে নেয়"- এই চিন্তাটাই তাদেরকে রাগ না করতে সহায়তা করে। এক কথায় এটাকে 'জাহির করার পর্যায়' বলেই বিবেচনা করা হয়।

রোমান্সের সর্বোচ্চ পর্যায়ঃ এ পর্যায়ে দুজনই আবেগে আপ্লুত হয়ে থাকে। একে অন্যের সাথে এক মূহুর্তের জন্যও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখতে পারে না। কখা না বলতে পারলেও ম্যাসেজিং চলতে থাকে। সেই সাথে দৈনিক বিকালে দেখা করা তো আছেই। দেখা করতে না পারলে ভিডিও কলের মাধ্যমে দুজন দুজনকে লাইভ না দেখলে রাতের ঘুম হারাম। দিনের প্রতিটি পদক্ষেপের ঘটনা একে অন্যের সাথে শেয়ার করে। "জানো জান, আজকে আমি অফিসে যাওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম, একটা ইয়া বড় লাল পিপড়া এত্তো জোরে কামড় দিছে আর আমি এত্তো ব্যাথা পাইছি, তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না। অনেকটা ফুলে গেছে।" তুমি এখন পাশে থাকলে কত ভালো হইতো, আমার ফোলা জায়গায় মালিশ করে দিতে পারতা।" এছাড়াও, বেশিরভাগ ফ্যামিলি প্ল্যানিংগুলো রিলেশনের এই পর্যায়েই হয়ে থাকে। কতগুলো সন্তান নিবো, কিভাবে নিবো, বেড সিটের কালার কী হবে, কোন দিকে দরজা হবে, জানালা হবে, সব কিছুর পরিকল্পনা এই সময়টাতেই হয়ে থাকে। অনেকে আবার বেশি ফাস্ট, বাচ্চার জন্য স্কুলের ফর্মও কিনে রেখে দেয়। বলে রাখা ভালো, এই সময়টাতেই হাতে হাত রাখা, ঠোটে ঠোট রাখা, বুকে বুক রাখা, কাঁধে মাথা রাখার মত রোমাঞ্চকর ব্যাপারগুলোর অভিষেক ঘটে।

টুকটাক কথা কাটাকাটিঃ রোমান্সের ঠিক পরপরেই টুকটাক একে অন্যের দোষ চোখে পড়তে থাকে। একচুয়ালি, দোষগুলো বলার সাহসটা বেড়ে যায়। তুমি এটা করছো কেন, তুমি এটা করো নায় কেন, তুমি এই কথা বলছো কেন, ওভাবে তাকাইছো কেন- ইত্যাদি নানান কেনো'র উত্তর দিতে দিতেই কথা কাটাকাটি শুরু হয়। তোমার এই অভ্যাসটা চেঞ্জ করা দরকার, এই কথাটা ভালো লাগে না এই নিয়েই লেগে যায় দ্বন্দ্ব। তার কিছুক্ষণ পরেই আবার দুজন দুজনের ভুল বুঝতে পেরে জুমিয়ে প্রেম শুরু করে।

কথা বললেই ঝগড়া, না বলেও থাকা যায় না পর্যায়ঃ এইটা মারাত্মক একটা স্টেপ। এখানে যতক্ষণ তারা কথা বলে ততক্ষণই ঝগড়া করে। দিনে দুই তিনবার ব্রেকআপ তো হয়ই, তবুও দুজন দুজনকে ছেড়ে থাকতে পারে না। আবার প্রেমের জোড়া লাগে, আবার ঝগড়া শুরু হয়। এভাবেই চলতে থাকে।

ব্রেকআপ/বিয়েঃ সর্বশেষ পর্যায় হিসেবে ব্রেকআপ/বিয়েকে ধরা হয়। ব্রেক আপ হওয়ার পর ছেলে/মেয়ের প্রথম দায়িত্ব থাকে গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ডের নামে খারাপ কথা রটানো। 'আমিই ছেড়ে দিছি..... মনের মিল হচ্ছিল না.....অমানুষ একটা...... খা***কি একটা....... লুইচ্চা একটা..... বাটবার... ইত্যাদি প্রচার করে বেড়ানো তাদের নৈতিকক দায়িত্ব। এর পরে তারা আবার দার্শনিক হয়ে যায়। অন্যদিকে এতোগুলো পর্যায় পার করে যদি বিয়ে হয়ও, তাহলে বাসর রাত থেকে শুরু হয় টম এন্ড জেরি যুদ্ধ।

এগুলো জানার পরেও আমাদের মনটা প্রেম করার জন্য আনচান আনচান করতে থাকে। এমন কারো অপেক্ষায় থাকি যার সাথে এতো ঝামেলার মাঝেও সারা জীবন চোখ বন্ধ করে কাটিয়ে দিতে পারবো। যার ভালোবাসার স্পর্শে প্রতিদিন জেগে উঠবো নতুন করে, যার প্রতিটি রাগের মধ্যে লুকিয়ে থাকবে আমার প্রতি ভালোবাসা। সাধারণের মাঝেই অসাধারণ ভালোবাসা তৈরি করে নেবো আমি। সিরিয়াস হইয়া গেলাম নাকি!!! ধুরু!!! ঝগড়া হইবো দেইখা প্রেম করা বাদ দিমু নাকি??? তাইলে তো টয়লেটে যাওয়ার ভয়ে খাওয়াও বাদ দিয়া দিতে হইবো।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:২৩
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×