somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হঠাৎ ঘটে গেল বিকট বিস্ফোরণ… :-/:-/:-/

০৬ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


হঠাৎ ঘটে গেল বিকট বিস্ফোরণ…

বিস্ফোরণের তীব্রতায় রীতিমতন হকচকিয়ে গেলেন দুই বিজ্ঞানী আস্কানি সোব্রেরো:-/
পরক্ষণেই অবশ্য তাদের বিমূঢ়ভাব কেটে যায়। আসলে এই দুজন বহু বছর যাবৎ চেষ্টা করছিলেন মারাত্মক একটি বিস্ফোরক তৈরী করতে যার ধ্বংস করবার তাৎক্ষণিক ক্ষমতা হবে সর্বাধিক। তারপর একদিন আচমকাই তারা কয়েকটি সাধারন জিনিসের মিশ্রণ ঘটিয়ে তৈরী করে ফেললেন এক দারুণ বিস্ফোরক বস্তু। জিনিসগুলি হল অল্প পরিমাণ গ্লিসারিন, কিছুটা নাইট্রিক এসিড এবং একমুঠো চিনি। এগুলো একটি পাত্রে রেখে সেখানে জোরে আঘাত করতেই ঘটে গেল সশব্দ বিস্ফোরণ।

এই আবিষ্কারের খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল। বিস্ফোরকটির নাম দেওয়া হল নাইট্রোগ্লিসারিন
অতঃপর বিজ্ঞানীরা উঠে-পড়ে লাগলেন আরো শক্তিশালী বিস্ফোরক আবিষ্কারে। স্বভাবতই তারা কাজ শুরু করলেন নাইট্রোগ্লিসারিন দিয়ে। অনেকেই গবেষণারে প্রাণ হারালেন। আহত হলেন প্রচুর।

একজন কিন্তু সবসময় এগিয়েই থাকে… ;)
আপন প্রতিভা, অনুশীলন ও ধৈর্যবলে আবিষ্কারের দুনিয়ায় সকলকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলেন আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩-১৮৯৬)। সুইজারল্যান্ডের বিজ্ঞানী তিনি।



নোবেল চেয়েছিলেন এমন বিস্ফোরক দ্রব্য আবিষ্কার করতে যার বিস্ফোরণ ক্ষমতা ভয়াবহ হলেও ব্যবহারকারী নিরাপদেই তা ব্যবহার করতে পারবে।
নেহাৎই দৈবক্রমে এক আবিষ্কার ফেললেন নোবেল। গবেষণাগারে কাজ করার সময় তার একটা আঙ্গুল কাঁচে সামান্য কেটে যায়। নোবেল তখন কাটা আঙ্গুলে সামান্য কলয়ডিয়ন লাগিয়ে নেন। ইথার এবং অ্যালকোহলের মিশ্রণে তৈরী হয় এই কলয়ডিয়ন। আঙ্গুলে কলয়ডিয়ন লাগিয়ে নাইট্রোগ্লিসারিনসহ আরও কিছু রাসায়নিক বস্তু নিয়ে পরীক্ষা করতে গিয়ে ভীষণ চমকে উঠলেন নোবেল। খুবই ক্ষিপ্রতার সঙ্গে সেই হাতটা সরিয়ে নেয়ায় বিরাট দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পেলেন তিনি। সেই সঙ্গে এটাও বুঝতে পারলেন, অবশেষে তিনি সেসময়ে দুনিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী বিস্ফোরক দ্রব্যটি আবিষ্কার করতে পেরেছেন।
তৈরী হলো “ডায়নামাইট”।



নোবেল লক্ষ্য করেছিলেন যে, কাইজেলগার নামক একরকম মাটি নাইট্রোগ্লিসারিনকে অনেকটা সংযত রাখতে পারে। তিনি এই মাটির সাহায্যে যে ডায়নামাইটটি প্রস্তুত করলেন তার নাম দিলেন “গার ডায়নামাইট”।



এরপর তৈরী হলো “অ্যামোনিয়া ডায়নামাইট” এবং তারপর সর্বোত্তম ডায়নামাইট “জিনেটিন”।
জিনেটিন ডায়নামাইট”-এর বিধ্বংসীশক্তি অভাবনীয়, বিস্ফোরণ ক্ষমতা সর্বাধিক। পাহাড় উড়িয়ে দিতে, বাড়ি ভেঙ্গে ফেলতে, নদীর গতিপথ বদলে দিতে এর তুলনা হয় না। কিন্তু এটা ব্যবহার করা তখনকার অন্য সব বিস্ফোরকের চেয়ে নিরাপদ ছিল। সবদিক থেকেই এটা নোবেলের সেরা আবিষ্কার।

এটি সাধারণত ২০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২.৫ সেন্টিমিটার ব্যাসার্ধের কাঠি আকারে কিনতে পাওয়া যায়। এটিকে উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি টি.এন.টি এর চেয়েও ৬০ ভাগ বেশি শক্তিশালী

নোবেল ১৮৬৭ সালের ৭ মে ইংল্যান্ডে, ১৮৬৭ সালের ১৯ অক্টোবর সুইডেনে ডায়নামাইটের প্যাটেন্ট করান।



তিনি ডায়নামাইট বিক্রি করতেন “নোবেলের বিস্ফোরক গুড়া” নামে। আবিষ্কারের অল্প কিছু দিনের মধ্যেই এর চাহিদা বাড়তে থাকে। নোবেল তাঁর প্যাটেন্ট কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতেন। কেউ অবৈধ ভাবে ডায়নামাইট উৎপাদন করলে দ্রুত তা বন্ধ করার ব্যবস্থা করতেন। এরপরেও যুক্তরাষ্ট্রে কিছু ব্যবসায়ী কিছুটা ভিন্ন উপায়ে ডায়নামাইট উৎপাদন করে তার প্যাটেন্ট নিয়েছিল।

আলফ্রেড নোবেল তার আবিষ্কারের মাধ্যমে প্রচুর আয় হয়, আর এই আয়ের অর্থ দ্বারাই তিনি পুরস্কার প্রদানের কথা বলে যান। জীবদ্দশায় নোবেল অনেকগুলো উইল লিখেছিলেন, এর মধ্যে সর্বশেষটি লিখেছিলেন তার মৃত্যুর মাত্র এক বছর আগে নভেম্বর ২৭, ১৮৯৫ তারিখে। নোবেলের উদ্ভাবনটি ছিল অনেকাংশেই একটি বিস্ফোরক যা প্রভূত ক্ষতির কারণ হতে পারত। তাই যুদ্ধক্ষেত্রে এই ডিনামাইটের ব্যবহার তাকে শঙ্কিত করে তোলে। নোবেল পাঁচটি ক্ষেত্রে পুরস্কার দেয়ার জন্য তার মোট সম্পত্তির শতকরা ৯৪ ভাগ দান করে যান। এর মোট পরিমাণ তখনকার সময়ে ৪.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার:)



ধন্যবাদ সবাইকে…
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×