সমুদ্র অর্থনিতিতে (Blue Economy) অপার সম্ভাবনা –অফুরন্ত সম্পদের ভান্ডার বঙ্গোপসাগর –
২০১২ খৃস্টাব্দের ১৪ মার্চ আন্তর্জাতিক শালিস আদালতের (পি.সি.এ) রায়ের মাধ্যমে মিয়ানমারের সঙ্গে মামলায় বাংলাদেশ প্রায় ০১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি সমুদ্র এলাকার দখল পায় –
২০১৪ খৃস্টাব্দের ০৮ জুলাই বাংলাদেশ ও ভারতের ম্যধকার বিরোধপুর্ণ সমুদ্রসিমার আনুমানিক ২৫ হাজার ৬০২ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটারের সমুদ্র এলাকার অধিকার পায় বাংলাদেশ –
২০১৩ খৃস্টাব্দে Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman Maritime University প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশ –
২০১৪ খৃস্টাব্দে প্রধানমন্ত্রির কার্যালয়ের মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে ২৫ সদস্যের একটি সমন্বয় কমিটি করা হয় –
২০১৫ খৃস্টাব্দে সমুদ্র গবেষণার জন্যে কক্সবাজারে প্রতিষ্ঠা করা হয় Bangladesh Oceanographic Recherche Institute –
২০১৭ খৃস্টাব্দে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের অধিন গঠন করা হয় Blue Economy Cell –
২০১৮ খৃস্টাব্দে নৌবাহিনির সদর দপ্তরের সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত হয় Bangladesh Institute of Maritime Research & Development (BIMRD) –
বাংলাদেশ ব-দ্বিপ পরিকল্পনা বা ডেল্টা প্লানে (Delta Plan) সমুদ্র অর্থনিতিকে (Blue Economy) অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে –
গত ১০ বছরে সমুদ্র সম্পদকে নিয়ে কিছু গবেষণা হোয়েছে –
এ বিষয়ে কিছু সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ছাড়া সম্পদ আহরণে তেমন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি –
(০১) সিঙ্গাপুরের জি.ডি.পি.র ৪০ ভাগ সমুদ্রনির্ভর –
(০২) ইন্দোনেশিয়া The Lombok Blue Economy Implementation Program এর সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে ৭৫ মানুষের নতুন কর্মসংস্থান সহ প্রতি বছর ১১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের কর্মসুচি হাতে নিয়েছে –
(০৩) অস্টেলিয়া সমুদ্র সম্পদের উৎকর্ষ সাধন ও পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে বছরে আয় করছে প্রায় ৪৭.২ বিলিয়ন অস্টেলিয়ান ডলার- যা তাদের জি.ডি.পি.র ৩% এর বেশি – ১০ বছর মেয়াদি পিরকল্পনা অনুযায়ি ২০২৫ খৃস্টাব্দের মধ্যে দেশটির অর্থনিতিতে Blue Economy র অবদান হবে ১০০ বিলিয়ন অস্টেলিয়ান ডলার-
(০৪) চিন দেশ গত ০৫ বছরে অর্থনিতিতে ১.২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের মেরিটাইম ইন্ডাস্ট্রি বৃদ্ধি পেয়েছে – যা দেশের জি.ডি.পি.র ১০% - এ ছাড়া দেশটি Blue Economy কেন্দ্রিক যে পরিকল্পনা নিয়েছে তা বাস্তবায়ন হোলে ২০৩৫ খৃস্টাব্দে চিন দেশের জি.ডি.পি.তে মেরিন সেক্টরের অবদান হবে ১৫% -
(০৫) ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন Blue Economy হতে বার্ষিক গ্রস মুল্য সংযোজান ৫০০ বিলিয়র ই্ওরো এবং ০৫ মিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে –
বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশে সঠিক পরিকল্পনা করে সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগাতে পারলে আমাদের দেশের জি.ডি.পি. ১০ এর ঘরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব –
১৯৭৪ খৃস্টাব্দে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান The Territorial Waters & Maritimes Zone Act করেছিলেন –
বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশনের তথ্য মতে, বাংলাদেশের সমুদ্রসিমা থেকে প্রায় ১০ লাখ টন খনিজ বালু উত্তোলন সম্ভব – বঙ্গোপসাগরের তলদেশে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ নডিউল, ফসফরাস ডেপোজিট, পলিমেটালিক সালফাইড, অ্যাডাপোরাইট ও ক্লেসার ডেপোজি নামক আকরিক – এ সব আকরিক পরিশোধনের মাধ্যমে পাওয়া যাবে মলিবডেনাম, কোবাল্ট, কপার, জিংক, লেড সহ অনেক দুর্লভ ধাতু যা জাহাজ নির্মান ও রাসায়নিক কারখানায় ব্যবহার করা যাবে -
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের তথ্য মতে, অগভির সমুদ্র তলদেশে ভ্যানাডিয়াম, প্লাটিনাম, কোবাল্ট, মলিবডেনাম, ম্যঙ্গানিজ ক্রাস্ট, তামা, সিসা, জিংক, এবং কিছু পরিমান সোনা ও রূপা দিয়ে গঠিত সালফাইডের অস্তিত্ব রয়েছে –
বঙ্গোপসাগরের ৩০ থেকে ৮০ মিটার গভিরে সিমেন্ট শিল্পের কাচামাল ‘ক্লে’ র বিশাল ভান্ডারের সন্ধান পাওয়া গেছে –
বঙ্গোপসাগরের তলদেশে মহামুল্যবান ধাতু ইউরেনিয়াম ও থোরিয়ামের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে –
বঙ্গোপসাগর হতে বছরে ৮০ লাখ টন মাছ ধরা হয় – বাংলাদেশ মাত্র ০৭ লাখ টন মাছ ধরছে – আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে আহরন বাড়ানো সম্ভব –
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ‘সমুদ্র পর্যটনের’ মাধ্যমে বিপুল অর্থ আয় করলেও বাংলাদেশ পরিকল্পনার অভাবে তা করতে পারছে না –
অর্থনিতিবিদদের মতে, টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে আগালে ২০৩০ খৃস্টাব্দ নাগাদ বাংলাদেশের প্রতি বছর আড়াই লাখ কোটি ডলার আয় করা সম্ভব – অথচ বাংলাদেশ মাত্র ৯৬০ কোটি ডলার আহরণ করতে পারছে -
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৫৩