৫২র ভাষা আন্দোলন, ৬৯ এর গনুবভ্যুত্থান কিংবা ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমার জন্ম হয়নি, আর ৯০ এর শৈরাচার বিরোধী আন্দলনে আমি তখন অনেক ছোট। স্বাধীনতার পর গত ৪২ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধাদের যে ঋন বয়ে বেড়াচ্ছিল বাঙ্গালী জাতি তার কিছুটা হলেও শোধ করার প্রত্যয় নিয়ে কিবোর্ডে ঝড় তুলেছিল সারা বিশ্বের কয়েক লক্ষ বাঙ্গালী তরুন ব্লগার আর অনলাইন এক্টিভিস্টরা, সেই ঝড় আছড়ে পড়েছে শাহবাগে, জনতার ঢল জন্ম দিয়েছে "প্রজন্ম চত্ত্বর", প্রজন্ম চত্ত্বর জন্ম দিয়েছে "বিপ্লবী বাংলা"। বাংলাদেশে থাকলে আমার মা'ও আমার হাত ধরে শাহবাগে আসত। মা'র হাত ধরে আমি শাহবাগে যেতে পারছিনা তাতে কি হয়েছে? আমার মা এর মত অসংখ্য মা তাদের সন্তানের হাত ধরে শাহবাগে আসছে, আমি বহু দূরে বসে সেই অনুভুতিগুলো হৃদয়ে ধারন করছি, আমি এতেই খুশী। ইতিহাস এভাবেই রচিত হয়।
স্বাধীনতার পর ৪২ বছরে আমার মত যারা গনবিপ্লবে অংশ নিতে পারে নি, তাদের সামনে এসেছে ইতিহাস গড়ার সুযোগ। এই ইতিহাস জাতিকে কলঙ্ক মুক্ত করার ইতিহাস। স্বাধীনতার পর যত আন্দোলন হয়েছে তার অধীকাংশই ছিল রাজনৈতিক আন্দোলন। বাংলার জিবন্ত কিংবা শহীদ কিংবদন্তি (মুক্তিযোদ্ধা) দের ঋন পরিশোধের নৈতিক দাবী নিয়ে এত বড় আন্দোলন আগে কখনো দেখেনি বাংলার মানুষ। সেই ইতিহাস ইতিমধ্যেই অনেকটা লেখাও হয়ে গেছে। বাকি আছে শুধু তার স্বিকৃতি।
প্রিয় তরুন সহযোদ্ধা,
প্রজন্ম চত্ত্বরে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে ইতিহাস। অতিতের বিপ্লবী বাঙ্গালীদের মত করে আরো একবার নিজেদেরকে সফল বিপ্লবী জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার সুবর্ন সুযোগ। আমাদের পুর্ব পুরুষরা যা করে দেখিয়েছে তারই ধারাবাহিকতায় রাজাকার, দেশদ্রোহী আর জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার হাতছানি। এটা আমাদের ইতিহাস। আমাদের পুর্ব পুরুষরা যেমন করে আমাদেরকে তাদের অর্জনের গল্প শুনিয়েছে, আমিও আমার সন্তানকে আমাদের অর্জনের গল্প শুনাব। এসো জাতিকে কলঙ্ক মুক্ত করি। জীবনের বাকি সময়টুকু থাকবে শুধুই আমাদের গৌরব আর সাফল্যের গল্প। শহীদ মিনার কিংবা স্মৃতিসৌধে আমরা মাথা উচু করে ফুল দিতে যাব। মশাল হাতে একবুক গর্ব নিয়ে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন জাতিরপিতা আর তার ৩০ লক্ষ শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। আনন্দে তাদের চোখ চিক চিক করছে।
ফাইটার্স, ইটার্নিটি ইজ ওয়েটিং ফর আস, টেইক ইট।
Ullah Enayet
Lund university, Sweden
February 10, 2013
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:৪৯