somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১২:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১। ভাষা আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক সুচনা হয় ১৯৪৭ সালের ১৫
সেপ্টেম্বর “ পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু” শীর্ষক
পুস্তিকা প্রকাশের মাধ্যমে।

২। ১৯৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ
বিজ্ঞানের অধ্যাপক আবুল কাসেম, সৈয়দ নজরুল ইসলাম,
জনাব শামসুল আলম প্রমুখের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়
সাংস্কৃতিক সংস্থা তমদ্দুন মজলিস। এই তমদ্দুন মজলিস ছিল
ভাষা আন্দোলনের স্থপতি সংগঠন।

৩। ভাষা আন্দোলনের “পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু”
শীর্ষক প্রথম পুস্তিকায় যে তিনটি নিবন্ধ স্থান পায় তার লেখক
ছিলেন খ্যাতনামা শিাবিদ-সাহিত্যিক অধ্যাপক কাজী
মোতাহার হোসেন, বিশিষ্ট সাংবাদিক-সাহিত্যিক আবুল মনসুর
আহমেদ ও অধ্যাপক আবুল কাসেম।

৪। উপরে উল্লিখিত পুস্তিকায় অধ্যাপক আবুল কাসেমের নিবন্ধে
তমদ্দুন মজলিসের প থেকে দাবী তোলা হয় যে,
(এক) পুর্ব পাকিস্তানের অফিস-আদালতের ভাষা ও শিক্ষার
মাধ্যম হতে হবে বাংলা
(দুই) পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হতে হবে বাংলা ও উর্দু। ঐ নিবন্ধে
দেশের সর্বত্র উপরোক্ত দাবীর ভিত্তিতে আন্দোলন গড়ে
তোলার আহবান জানানো হয়।

৫। ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্যায়ে ১৯৪৭ সালে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে আলোচনা সভা, বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যাম্পাসে ছাত্র সমাবেশ এবং সরকারের কাছে বিশিষ্ট
ব্যক্তিদের স্বাক্ষর সহ স্মারকলিপি
পেশের মাধ্যমে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার দাবী তুলে ধরা হয়।

৬। ১৯৪৭ সালেই প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক নূরুল হক ভূঁইয়া
ছিলেন এর আহবায়ক।

৭। ১৯৪৭ সালের আগষ্ট মাসে উপমহাদেশের বৃটিশ শাসনের
অবসানে পাকিস্তান ও ভারত নামে দু'টি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব
হয়। স্বাধীন ভারতে হিন্দী যে রাষ্ট্রভাষা হবে তা আগেই সিদ্ধান্ত
নেয়া হয়। কিন্তু পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কি হবে সে সম্বন্ধে কোন
সিদ্ধান্ত হওয়ার আগেই উচ্চ পদস্থ উর্দুভাষী আমলাদের বিশাল
প্রভাবের কারণে গোপনে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা
করার চেষ্টা করা হয় এবং নতুন রাষ্ট্রের পোস্টকার্ড, এনভেলপ,
মানি অর্ডার ফরমে ইংরেজীর পাশাপাশি শুধু উর্দু ভাষা ব্যবহার
শুরু করা হয়। অথচ তখন পাকিস্তানের জনংখ্যার শতকরা ৫৬
জনই ছিল বাংলা ভাষী। এই পটভূমিতেই ভাষা আন্দোলনের
সূচনা হয়।

৮। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারী পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ
নামে যে ছাত্রসংস্থা গঠিত হয়, সে সংগঠন গোড়া থেকেই ভাষা
আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে । ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনের
যে দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় তার আহবায়ক
হন তমদ্দুন মজলিস ও পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের
যুগপৎ সদস্য শামসুল আলম।

৯। পাকিস্তান গণপরিষদের কংগ্রেস দলীয় সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত
১৯৪৮ সালের জানুয়ারী মাসে ইংরেজী ও উর্দুর পাশাপাশি
গণপরিষদে বাংলা ভাষায় কথা বলার দাবী জানালে সে দাবী
প্রত্যাখ্যাত হয়। এর প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে
অধ্যাপক আবুল কাসেমের সভাপতিত্বে ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ১১মার্চ সমগ্র
প্রদেশে প্রতিবাদ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

১০। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে সমগ্র পূর্ব
পাকিস্তানে প্রথম সফল হরতাল পালিত হয়। সেক্রেটারিয়েট
গেটে পিকেটিং করার অপরাধে কাজী গোলাম মাহবুব, শেখ
মুজিবুর রহমান, অলি আহাদ প্রমুখ কে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের লাঠিচার্জে অধ্যাপক আবুল কাসেম সহ অনেকে আহত হন। ছাত্র-জনতার উপর পুলিশের লাঠিচার্জের খবর
চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে সেক্রেটারীয়েট এলাকা বিক্ষুদ্ধ
জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এ অবস্থা ১২,১৩,১৪ মার্চ পর্যন্ত চলতে
থাকে।

১১। প্রাদেশিক প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে
১৫ মার্চ তারিখে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সকল দাবী-
দাওয়া মেনে নিয়ে সংগ্রাম পরিষদের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
চুক্তির শর্ত অনুসারে ১৫ মার্চেই বন্দীদের মুক্তি দেয়া হয়।
ফলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

১২। ১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম গভর্ণর
জেনারেল কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকা
আসেন। তিনি ২১ তারিখ রমনা রেসকোর্স ময়দানে এক
জনসভায় এবং ২৪ মার্চ কার্জন হলে বিশেষ সমাবর্তনে ভাষণ
দান করতে গিয়ে একমাত্র উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার সংকল্প ব্যক্ত করেন। ছাত্ররা এর প্রতিবাদ করলেও সেসময়ে
জিন্নাহ সাহেবের বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে সেই মুহুর্তে নতুন
করে ভাষা আন্দোলনকে চাঙ্গা করে তোলা সম্ভব হয়নি।

১৩। ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ১১ মার্চ
রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে প্রথম সফল গণবিস্ফোরণের স্মৃতি
উজ্জল করে ধরে রাখার লক্ষ্যে “রাষ্ট্রভাষা দিবস” পালিত হয়।

১৪। ১৯৪৯ সালে তদানীন্তন সরকার উর্দু হরফে বাংলা লেখার
প্রকল্প গ্রহণ করলে তমদ্দুন মজলিস ও ছাত্রলীগ সহ বিভিন্ন
সংস্থার প্রবল প্রতিবাদের মুখে সরকার এ প্রচেষ্টা থেকে পিছুটান
দিতে বাধ্য হয়।

১৫। ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারী পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী
খাজা নাজিমুদ্দিন ঢাকা সফরে এসে পল্টনের এক জনসভায়
বক্তৃতা দানের এক পর্যায়ে ঘোষণা করেন, উর্দুই হবে
পাকিস্তানে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। যে খাজা নাজিমুদ্দিন ১৯৪৮
সালের ১৫ মার্চ রাষ্ট্রভাষা বাংলার সব দাবী দাওয়া মেনে নিয়ে
সংগ্রাম পরিষদের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন, তার এ
বিশ্বাসঘাতকতামূলক বক্তব্যে ছাত্র জনতা বিক্ষোভে ফেটে
পড়ে। তমদ্দুন মজলিস, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ প্রভৃতি
প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র প্রতিনিধিসহ নতুন
করে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় মুসলিম
ছাত্রলীগের অন্যতম নেতা কাজী গোলাম মাহবুব কে কনভেনর
করা হয়। এই সংগ্রাম পরিষদ ২১ ফেব্রুয়ারী তারিখে প্রতিবাদ
দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

১৬। সরকার ২০ ফেব্রুয়ারী ১৪৪ ধারা জারি করে। তবে
বিশ্ববিদ্যালয় সমবেত ছাত্ররা ২১ ফেব্রুয়ারী ১৪৪ ধারা ভঙ্গ
করে। পুলিশ ভাষা সৈনিকদের উপর গুলি বর্ষণ করলে ভাষা
শহীদদের তপ্ত রক্তে সিক্ত হয় ঢাকার মাটি। ২১ ও ২২
ফেব্রুয়ারী পুলিশের গুলিবর্ষণে যারা শহীদ হন তাদের মধ্যে
ছিলেন সালাম, বরকত, রফিক, শফিক, জব্বার প্রমুখ। ভাষা
সৈনিকদের অনেকে গ্রেফতার হন। অনেকে গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপন করেন।

১৭। ১৯৫৪ সালে মুসলিম লীগ বিরোধী বিভিন্ন দল ২১ দফা
দাবীতে যুক্তফ্রন্টের ব্যানারে নির্বাচনে বিপুল বিজয় লাভ
করে। ইতিমধ্যে পাকিস্তানের গভর্ণর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ
গনপরিষদ বাতিল করে দিলে নবনির্বাচিত প্রাদেশিক সরকারের
সদস্যদের ভোটে নতুন গণপরিষদের সদস্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

১৮। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের এই দ্বিতীয় গণপরিষদে পাকিস্তানের
প্রথম সংবিধান প্রনীত হয়। সংবিধানে বাংলা পাকিস্তানের
অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে।

১৯। বাংলা রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি লাভের পরও শিক্ষার মাধ্যম
হিসাবে বাংলার প্রচলনে অনেকের অনীহার প্রোপটে অধ্যাপক
আবুল কাসেম ১৯৬২ সালে দেশে বাংলা মাধ্যমে প্রথম ‘বাংলা
কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন।

২০। ভাষা আন্দোলনের মর্মবাণীর আলোকে দেশে স্বায়ত্বশাসন ও
স্বাধীকার আন্দোলন গড়ে উঠে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী পশু শক্তি বলে স্বাধিকার চেতনা ধ্বংস
করে দেয়ার চেষ্টা করলে দেশের সমগ্র জনগন মুক্তিযুদ্ধে
ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৭২ সালের মধ্যেই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের যে সংবিধান রচিত হয় তাতে বাংলা একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×