somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রলাপ

১৯ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বয়স তো কম হল না। জীবনের অর্ধেক তো পার করে দিলাম। “অর্ধেক জীবন” নাম দিয়ে একটা বই লেখার সময় হয়ে গেছে। এই সময়ে অনেক কয়টা সরকার আসলো গেল। যদিও খুচরা বাদ দিলে ঘুরেফিরে দল দুইটাই। স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনের সময়ে অনেক ছোট ছিলাম। কিছু না বুঝেই ধানের শীষ বলে স্লোগান দিতাম। অবশ্য তখন থাকতাম ও বি চৌধুরীর এলাকা মুন্সিগঞ্জে। তাই সেটাই স্বাভাবিক ছিল।
তাছাড়াও আমার পরিবারে বি এন পি ঘেঁষা ভাব ছিল। আমার চাচা বি এন পির উপজেলা চেয়ারম্যান তাই বাবার দিকের সবাই বি এন পি ছাড়া কিছু বুঝত না। আর মার দিকের মামা, খালা থেকে শুরু করে কাজিনরা সবাই কট্টর বি এন পি সমর্থক। শুধু আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা হয়েও বি এন পি সমর্থন করতেন মেজর জিয়ার খাল কাটার কারণে আমার দাদার বাড়ীর এলাকাটা বেশ উন্নতি করে তাই।

আর তিনি সবসময় জিয়া, মুজিব দুইজনের ই ব্যাক্তিত্ব নিয়ে অনেক প্রশংসা করতেন। কিন্তু বাকশালি সময়ে অনেক খারাপ কিছু স্মৃতির কারণে আওয়ামীলীগ থেকে দূরে থাকতেন। আমিও বি এন পি পন্থি হিসেবেই বড় হই। যদিও ২০০১ এ জামাত কে কোলে বসানোতে একটু কনফিউসড হয়ে যাই। আর ২০০১-২০০৭ এর সময়ে পিরীতি সম্পূর্ণ চলে যায়। তাই আমার প্রথম ভোটটা ২০০৯ এ লীগকেই দেই। এক কথায় অনেক গুলো শাসনামল দেখলাম।

এত বড় ভূমিকার কারণ হল আজকে একজন জিয়ার সৈনিক আওয়ামীলীগ সরকারের সফলতা- ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল। আমিও কিছু সফলতা দেখালাম, সেও কিছু ব্যর্থতা দেখাল। ভাব সম্প্রসারণে না যাই কারণ কথা গুলো সেই পুরাতন চর্বিত চর্বণ যুক্তি সমৃদ্ধ। কিছু তর্ক হল কিছু সহমত। প্রায় ২ ঘণ্টার আড্ডা, মোট ৫ কাপ চা আর ১১ টা বেনসন এর পরে দুইজন একই সিন্ধান্তে (যেহেতু আমরা সমর্থক কিন্তু কট্টর না।) আসলাম যে সব সরকারই যতটুকু সুবিধা দিয়েছে কষ্ট দিয়েছে তার চেয়ে বেশি। কেড়ে নিয়েছে আরও অনেক বেশী।

ব্যাপারটা বুঝাতে একটা গল্প বলতেই হয়।

আবুল কারণে অকারণে বউ পেটাত। একদিন সকালে বউয়ের হাতে এক টাকা দিয়ে বাইরে গেল। কিছুক্ষণ পর এক ভিক্ষুক এসে আওয়াজ দিল “ মা ভিক্ষা দে। এক টাকা দিলে ৭০ টাকা পাবি। ” আবুলের বউ ভাবল জামাই তো হাতে টাকা দেয়না তাই এই সুযোগে কিছু টাকা যদি আসে। সে এক টাকা ভিক্ষুক কে দিয়ে দিল। সারাদিন বসে থাকল কিন্তু ৭০ টাকা আর আসেনা!! সন্ধ্যায় আবুল এসে টাকা চাইল। বউ দিতে না পারায় আচ্ছামত পেটাল। এমনি মার তো ছিলই কিন্তু ওই এক টাকার কথা বলে বলে জামাই যে মারটা দিত তাতে বউটা একদম মরমর হয়ে যেত।
এভাবে ৪/৫ দিন গেল। একদিন সকালে যেভাবেই হোক একদম অপ্রত্যাশিত জায়গা থেকে আবুলের বউ ৭০ টাকা পেল। কিছুক্ষণ পর এক ভিক্ষুক আসলো আর এসে সেই একই কথা “মা ভিক্ষা দে। এক টাকা দিলে ৭০ টাকা পাবি। ” আবুলের বউ তখন ভিক্ষুককে বলল, “হ বাবা!! ৭০ টাকা তো পাওন যায় । কিন্তু শরীর এ একটুও কুলায় না। ”

আমাদের একই হাল। অনেক কিছুর আশায় ১টা ভোট দেই। অপেক্ষা করি। অপ্রত্যাশিতভাবে একদিন সরকারের কোন ক্ষেত্রে সাফল্য আসে। কিন্তু অপেক্ষা করতে করতে ততদিনে আমাদের সব তেল শেষ হয়ে যায়। সরকারের অসফলতার ভার নিতে নিতে যখন মৃতপ্রায় তখন চকমকে একটা কিছু সামনে এনে আবার আশায় বুক বাধতে বলে। আমারা আবার ৭০ টাকার আশায় ১ টাকা দেই। এই চক্র চলতে থাকে। আবুলের বউয়ের সাথে আমাদের পার্থক্য এইটাই যে সে একবারে বুঝে গেল যে শরীরে কুলায় না আর আমরা এতদিনেও বুঝিনা।

বি. দ্র. সবখানে ধরা খেয়ে শেষ ভরসা ছিল বেনসন অ্যান্ড হেজেস এর কাঠিগুলো। সেইটার ও দাম বেড়ে গেল বাজেট এর আগেই।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×