somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি ফুলের অঙ্কুরে ঝরে পরা....

১৫ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

- এই ঈষাম এই..উঠ উঠ! সকাল ৯ টা বাজে..তবুও গন্ডারের মতো ঘুমাচ্ছিস! সারা রাত কি চোর পাহারা দিয়েছিলি নাকি?কলেজ নাই তোর?

-ধুর আপু! ঘুমাতে দাও তো..যাও এখান থেকে..এতো ডিস্টার্ব করো কেন?

বলেই মাথার নিচের বালিশটা মাথার উপরে তুলে আবার চোখ বুজলাম আয়েসে। কিন্তু অপরদিকে ডাকাডাকি কিন্তু এখনো সমানতালে চলছেই। যতোক্ষণ না আমি বিছানা থেকে উঠছি ততোক্ষণ এই অটো রেডিও আমার কানের কাছে বাজতেই থাকবে। অবশেষে ১০-১৫ মিনিট পরে এক প্রকার বাধ্য হয়ে আপুর কাছে পরাজয় স্বীকার করে বিছানা ছাড়তে হবে আমাকে...

কখনো যদি তার ডাকাডাকিতে না উঠি তাহলে আপু তার ব্রক্ষাস্ত্র প্রয়োগ করবে..আর এইটা হলো তার একমাত্র ৬ বছরের কন্যা মিথিলা...আপু মিথিলাকে বলবে যে,
"তোর মামা তোর জন্যে ক্যাডবেরী ডেইরী মিল্ক এনেছে।জলদি গিয়ে নিয়ে আয়,নাহলে পাশের বাসার মিলিকে দিয়ে দিবে"

তারপর আর যাই কোথায়...মিথিলা এসে ঠিক আমার মাথার পাশে বসে 'মামা চক্কেট দাও,মামা চক্কেট দাও' শিরোনামে গান গাইতে থাকে। তবুও যদি না উঠি তাহলে আমার পিঠে বা পেটে উঠে চিত্‍কার করে বলতে থাকবে,
'উঠ ঘোড়া উঠ! চল ঘোড়া চল!'

এটা হলো আমার সকালবেলা ঘুম থেকে উঠার প্রতিদিনকার রুটিন। বরাবরের মতোই আমি একজন ঘুমকাতুরে মানুষ। ঘুমের সময় ডিস্টার্ব করলে নিজের আপনজনদেরকে ও জীবনের সবচেয়ে বড় শত্রু মনে হয়। সেই হিসেবে আপু আমার সবচেয়ে বড় শত্রু। তার কাছে আমার ঘুম এক ফোঁটাও সহ্য হয়না। আমার মা-বাবার এইসব ব্যাপারে কোন বিকার না থাকলেও আপু সবসময় আমার পিছে লেগেই থাকে।


আমরা দুই ভাই বোন। আপু বড় এবং আমি ছোট। প্রায় ৭ বছর আগে আপুর বিয়ে হয়েছিল। তখন আমি ছিলাম স্কুল ছাত্র। বিয়ের প্রথম ৫ বছর শ্বশুর বাড়ীতে থাকলেও গত ২ বছর যাবত্‍ আমাদের বাসাতেই আছে আপু। দুলাভাই থাকেন ঢাকাতে। প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার উনি এখানে থাকেন। ঐ দুইদিন আপুর অত্যাচার থেকে বেঁচে যাই আমি। কিন্তু দুলাভাই গেলেই আবার আমার সকল কাজে হস্তক্ষেপ করা শুরু করে দেয় আপু।

আপাতদৃষ্টিতে আপু আমার সকল স্বাধীন কর্মকান্ডে বাঁধা সৃষ্টি করলেও এই আপুই পৃথিবীতে আমাকে সবচেয়ে বেশী ভালবাসেন। ছোটবেলা থেকেই আমি সবসময় আপুর কোলে পিঠে চড়েই বড় হয়েছি। তিনি সব সময় আমাকে আগলে রেখেছেন মমতার অন্তর্জালে। আমার ভবঘুরে আঁকাবাঁকা জীবনটাকে নিয়মতান্ত্রিক সরলরেখায় নিয়ে আসার জন্য আপু সবসময় আমার পিছে পিছেই লেগে থাকে। শাষনের সময় কড়া শাষন এবং ভালবাসার সময় হৃদয়ের হাড়ি উজার করে ভালবাসা দিতে কখনো এতটুকু পিছপা হন নি তিনি।

আপু আমাকে এতো ভালবাসলেও আমি তার থেকেও বেশি ভালবাসি তার একমাত্র কন্যা মিথিলাকে। এই মেয়েটা আমার পুরো হৃদয়টা জুড়ে বৃত্তের মতো ঘিরে রয়েছে। যেই বৃত্তের কেন্দ্রে রয়েছে সে এবং পরিধি জুড়ে আমি।তার কিন্নোর কন্ঠে মামা ডাকটা শুনলে এক ধরনের অজানা ভাল লাগা কাজ করে আমার মাঝে। মিথিলার বাবা আমাদের সাথে না থাকায় তার সকল আবদার এবং ফরমায়েস গুলি সে আমার কাছেই পেশ করে থাকে। এবং প্রতিটি ফরমায়েস অতি গুরুত্বের সাথে আমাকে পূরণ করতে হয়। একবার কলেজে যাবার সময় তাকে বলেছিলাম বাসায় ফেরার সময় তার জন্য বার্বি ডল নিয়ে আসবো। কিন্তু পরে বিভিন্ন কাজের চাপে ভুলে যাই আমি এবং বার্বি ডল ছাড়াই ঘরে ফিরি। সেদিন রাগ এবং অভিমানে টানা কয়েক ঘন্টা এক ফোঁটা পানিও মুখে তুলেনি সে। পরে আবার মার্কেটে গিয়ে বার্বি ডল এনে তারপর তার রাগ ভাঙ্গাতে হয় আমাকে।


আমার আদরের ভাগনীটার নাম মিথিলা হলেও আমি তাকে 'পরী' ডাকি। পরীদের মতোই স্নিগ্ধ এবং কোমল সে। তার হৃদয় নিস্পাপ এবং বিশুদ্ধতার এক স্রোতস্বিণী প্রবাহিত, যেই পবিত্রতার স্পর্শে যে কেউ হয়ে যাবে তারই মত পবিত্র।


এই বছরেই আমার পরীটিকে প্রথম স্কুলে ভর্তি করানো হয়েছে। যেদিন ভর্তি করানো হয় সেদিন আমি এবং আপু গিয়েছিলাম তাকে নিয়ে। ঐদিন প্রিন্সিপালের রুমে তাকে কিছু সাধারণ প্রশ্ন করা হয়। সব কয়টির উত্তর পারলেও শেষে একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি সে। তখন প্রিন্সিপাল স্যার মজা করে তাকে বেত দেখিয়ে বলেন যে, 'এখন এইটা দিয়ে তোমাকে মারবো!'

এতে মিথিলা ভয় তো পায়ই নি। তার উপরে উনাকে বলেছে যে,
'আমাকে মারলে আমার মামা তোমাকে ঘুসি মেরে তোমার চশমা ভেঙ্গে ফেলবে'


মিথিলার এই কথা শুনে প্রিন্সিপাল রুমে কয়েকজন টিচার সহ আমরা সবাই হাসিতে ফেটে পড়ি।


স্কুলে ভর্তি করার প্রথম কয়েক মাস পড়ালিখার প্রতি অসীম আগ্রহ দেখালেও এখন আর পড়তে ভাল লাগেনা তার। প্রতিদিন সন্ধ্যায় আপু তাকে নিয়ে পড়তে বসে। কিন্তু পড়তে বসলেই বিভিন্ন অজুহাত ও কান্নাকাটি শুরু হয়ে যায় মিথিলার। তখন কোন উপায়েই তাকে পড়তে বসানো যায়না। পরে আমি গিয়ে ডেইরি মিল্ক চকোলেট বা আইসক্রিমের লোভ দেখিয়ে তাকে পড়তে বসাই। এই দুইটা জিনিসই তার একমাত্র দূর্বলতা।

একবার রাত ১২ টার সময় তার চকোলেট ফ্লেভার আইসক্রিম খাওয়ার ইচ্ছা জাগে। অনেক জোড়াজুড়ি করার ফলে আপু রেগে মিথিলাকে দুই-তিনটা থাপ্পড় লাগায়। তারপর চোখ মুখ লাল করে সোজা আমার রুমে এসে হাজির হয় সে। তখন আমি বিছানায় শুয়েছিলাম।সে এসে বিছানার পাশে দাড়িয়ে আমার শার্টের কোণা ধরে টানতে থাকলো। তাকাতেই দেখলাম যে আমার পরীটার চোখ থেকে জল এসে তার কোমল গালের আঙিনা বেয়ে টপটপ করে নিচে পড়ছিল। পরীটার মায়াবী চোখে অশ্রুর এই শ্রাবণধারা দেখে সেই সময় আর বসে থাকতে পারিনি। তাকে কোলে নিয়ে সেই রাতেই প্রায় ২০ মিনিটের মতো হেঁটে দোকানে গিয়ে আইসক্রিম কিনে দেই। ঘরে ফিরে যখন পরীটা খুশি মনে তার ফেভারিট চকলেট আইসক্রিম খাচ্ছিলো তখন আমি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম তার দিকে। তার খুশিটা কয়েকগুণ বেড়ে গিয়ে তখন আমার হৃদয়ে এসে বাসা বাঁধছিল প্রতিনিয়ত।

ওকে ভাত খাওয়ানোটা আরেকটা কষ্টের কাজ। কিছুতেই মেয়েটা ভাত খেতে চায়না। এটা নিয়ে অনেক সময় আপু খুব বকাঝকা করে তাকে। কিন্তু কিসের কি! উল্টা আমার কাছে এসে আপুর নামে একগাদা বিচার দিয়ে যায়। তাকে ভাত খাওয়াতে হলে অবশ্যই টম এবং জেরী কার্টুন দেখাতে হয়। যেদিন দুপুরে টিভিতে এটা দেখায় না ঐদিন তার খাবার ও বন্ধ। তাই কিছুদিন আগে অনেকগুলি টম এন্ড জেরী কার্টুনের ডিভিডি ক্যাসেট নিয়ে আসি। এখন ভাত খাওয়ার সময় ছাড়াও সারাদিন এটা নিয়েই পরে থাকে। আপু এই নিয়ে আমার উপর খুব রাগ। আমি নাকি আদর দিয়ে দিয়ে মেয়েটাকে নষ্ট করছি। আমি কিছুই বলিনা,মনে মনে হাসি। আমার এই ছোট্ট পরীটার জন্যে আমি সব করতে পারি।

পরীটা গোলাপ ফুল খুব পছন্দ করে..জানিনা এতোটুকুন একটা মেয়ের গোলাপের প্রতি এই আকর্ষণের কারণ। তার এই গোলাপ প্রীতির জন্যে বাসার ছাদে আপু কয়েক প্রজাতির গোলাপের টপ লাগিয়েছেন। দুপুরবেলা যখন আমরা ঘুমাই তখন পরীটা চুপটি করে চলে যাবে ছাদে। মৃদু হাওয়ায় হেটে বেড়াবে এবং গোলাপ ফুলদের কাছে সারাদিন কি কি করেছে সেটা ব্যক্ত করবে।


দিনটা ছিল শুক্রবার। কলেজ না থাকলেও সামনে পরীক্ষার কারণে সকালবেলা চলে গেলাম এক বন্ধুর বাসায় গ্রুপ স্ট্যাডি করার জন্যে। এখানে আসার ঠিক এক ঘন্টা পরেই আমার মোবাইলটা বেজে উঠলো হঠাত্‍। পকেট থেকে বেড় করে মোবাইল স্ক্রীনে আপুর নাম দেখতে পেলাম। ভাবলাম, 'বাসা থেকে নাস্তা না করে আসার জন্যেই হয়তো বকা দিবে আমাকে'

তাই প্রথমে ফোন না ধরে আবার স্ট্যাডিতে মনোযোগ দিলাম। কিন্তু একবার,দুইবার,তিনবারের সময় যখন বারবার আপুর ফোন আসতে থাকলো তখন মনের ভেতরে একটা খটকা লাগলো। সাথে সাথেই আপুর ফোনটা রিসিভ করি আমি। হ্যালো বলার আগেই ঐ প্রান্ত থেকে আম্মুর কন্ঠ,

-ঈষাম,বাবা তুই কোথায়?

-কেন আম্মু? কি হয়েছে?

-তুই জলদি হসপিটালে আয় বাবা। আমরা সবাই এখানে আছি।

হসপিটালের নাম শুনেই আমার বুকের ভেতরে চিনচিনে ব্যথা শুরু হয়ে গেলো। মনে মনে ভাবলাম আব্বু অথবা আপুর কিছু হয়নি তো!! আম্মুর কাছ থেকে তাড়াতাড়ি হসপিটালের ঠিকানা নিয়ে বেড়িয়ে পরলাম সাথে সাথেই।

প্রায় আধঘন্টা পরে হসপিটালে এসে পৌছলাম। ৪০৩ নম্বর কক্ষের খোঁজে চার তলায় উঠি বিদ্যুত্‍ বেগে। চার তলার করিডোরে আব্বু,আম্মু এবং দুলাভাইকে দেখলাম বিষন্ন মনে দাড়িয়ে আছে। কিন্তু কোথাও আপু এবং আমার পরীটাকে দেখতে পেলাম না। তাদেরকে জিজ্ঞেস করতেই আমাকে রুমের ভেতরে নিয়ে গেলো।

রুমের ভেতরে আপু বসে আছে একটা চেয়ারে। তার চোখ দিয়ে অনবরত অশ্রু ঝরছে। আপু সামনে সাদা বিছানাটায় শুয়ে আছে আমার পরীটা। আমি ধীরে ধীরে তার কাছে গেলাম। তার মাথার কাছে আলতো করে বসে কপালে হাত রাখি। গরমে কপালটা যেন পুড়ে যাচ্ছে। আরেকটু গরম হলেই হয়তো আগুন ধরে যাবে।

আমি হাত সরিয়ে আম্মুকে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে আমার পরীটার!!

তারপর আম্মু বলতে শুরু করলো,
"তুই বাসা থেকে বেড় হওয়ার কিছুক্ষণ পরে যখন মিথিলাকে নাস্তা খাওয়ানো হচ্ছিলো তখন হঠাত্‍ করে প্রচন্ড কাশতে শুরু করে। কাশতে কাশতে একসময় মুখ থেকে অনবরত রক্ত পড়া শুরু হয়। সাথে সাথেই আমরা তাকে এখানে নিয়ে আসি"

আম্মুর কথা শুনছিলাম এবং আমার পরীটার কষ্টের কথা চিন্তা করে চোখ দিয়ে অশ্রু পরা শুরু হয়ে গেলো। আবার ফিরে গেলাম পরীর কাছে। পাশে বসে দুই হাতে তার কোমল হাতটা ধরি এবং মনে মনে আল্লাহর কাছে দোয়া করলাম যেন আমার এই নিষ্পাপ পরীটাকে সুস্থ করে দেয়।


সেদিন আমার দোয়া আল্লাহ দরবারে কবুল হয়নি। পরের দিনই পরীটার মেডিকেল রিপোর্ট আসে। সারে ৬ বছরের বাচ্চার এই ছোট্ট কোমল শরীরটায় ব্লাড ক্যান্সার নামক মরনব্যাধি বাসা বেঁধেছে। যা প্রতিনিয়ত তিলে তিলে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে আমার পরীটাকে। ডাক্তাররা শেষ একমাসের সময় বেঁধে দিয়েছেন। ক্যান্সারের এই শেষ পর্যায়ে কিছুই আর করার নেই আমাদের শুধু একটি একটি করে দিন গুনা ছাড়া।


দিন দিন পরীটা আমার শুকিয়ে যাচ্ছে। এখন আর আগের মতো সারা বাড়ি মাতিয়ে রাখেনা সে। আমার রুমে এসে বলে না "মামা মামা,আইসক্রিম খাবো"

প্রিয় ক্যাডবেরী চকলেটেও এখন আর রুচি নেই তার। সারাদিন বিছানায় শুয়ে ছলছল চোখে তাকিয়ে থাকে। চোখের দৃষ্টিতে কথা বলে অসীমে হাড়িয়ে যাবার। কখনো অস্ফুট কন্ঠে মামা বলে ডেকে উঠে। এর বেশী আর একটা কথাও বলেনা আমার পরীটা।

হস্পিটাল থেকে ফেরার ২৩ দিনের মাথায় আমাদের সবাইকে নিঃস্ব করে হাড়িয়ে যায় আমার পরীটা। ডুব দেয় অসীম ঘুমের অজানা দেশে। যে ঘুম কখনো ভাঙ্গবেনা। যে ঘুম থেকে উঠে কেউ আর বলবেনা,
"মামা, চক্কেট খাবো"



দেখতে দেখতে ছয়টা মাস পার হয়ে গেলো। সকাল ১০ টার মতো বাজে। এখন আর কেউ আমাকে ডাকাডাকি করে ঘুম থেকে জাগায় না। সকাল সকাল কেউ পিঠে উঠে ঘোড়া চড়তে চায় না। আপু এখন কারো সাথেই কথা বলেনা, মাঝে মাঝে নিজে নিজে কি যেন বলে এবং সারাদিন কাঁদতে থাকে নিজের রুমে বসে।

বিছানা ছেড়ে গত ঈদে আপুর দেয়া নীল পান্জাবীটা পড়ি আমি। এই পান্জাবীটা পরীর পছন্দে কেনা হয়েছিল। আজ একটা স্পেশাল দিন। আমার পরীটার জন্মদিন। গত জন্মদিনেও রাত ১২ টায় উইশ করিনি বলে খুব রাগ করেছিল সে। পরে মিকি মাউস গিফট করে সরি বলাতে কি যে খুশি হয়েছিল!!


ছাদে গিয়ে টপের গাছ গুলোতে গোলাপ খুজলাম। কিন্তু অনেকদিনের অযত্নে এবং প্রিয় সঙ্গীটির অভাবে এখন তারা আর ফুল ফোটায় না। তবুও অনেক খুজে দুই একটা অর্ধ জীর্ন গোলাপ পেলাম যারা এখন ঝরে পরার দিন গুনছে।

ঐ ফুলগুলি নিয়ে চলে এলাম পরীর কবরের কাছে। যেখানে আমার পরীটা ঘুমাচ্ছে প্রাণ ভরে। আস্তে করে ফুলগুলি রাখলাম তার শিয়র পাশে যেন তার ঘুমে ব্যঘাত না ঘটে।

তার কবর পাশে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে আর নিজেকে আটকিয়ে রাখতে পারলাম না। বুকে জমাট বাঁধা কষ্ট গুলি বিগলিত হয়ে চোখ বেয়ে হয়ে অশ্রু হয়ে ঝরে পরা শুরু করলো।

হঠাত্‍ অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়তে শুরু করলো। আমার এই কান্নার সঙ্গী হতে আজ আকাশটাও যেন কাঁদছে। যেন কান্নার জলে ভাসিয়ে নিতে চাইছে আজ আমার সব দুঃখ গুলিকে........


[কিছু কথা: কিছুদিন আগে আমার খালাতো ভাইয়ার মাত্র ৫ মাসের কন্যা সন্তান মারা গিয়েছে লিভারের সমস্যায় ভুগে। হয়তো ৫ মাসের এই মেয়েটার চলে যাওয়াটা এই দেশ কিংবা পৃথিবীর জন্যে কোন ক্ষতিই না। কিন্তু যে মা তাকে ৯ মাস পেটে রেখে স্বপ্ন দেখেছেন তার সন্তান পৃথিবীতে আসবে বলে,যে বাবা প্রতিদিন প্রতিক্ষায় থেকেছেন সন্তানকে একটিবার কোলে তুলবেন বলে, তাদের জন্য সন্তানের এই অকালে চলে যাওয়া এক অপূরণীয় ক্ষতি। এভাবে কোন ফুল যাতে আর অঙ্কুরে ঝরে না পরে সেই কামনাই করি সবসময়.......]


-ঈষাম আরমান
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১২ রাত ১:২৭
৫৩টি মন্তব্য ৫৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×