বর্তমান কথিত ডিজিটাল জগতে বসবাস করে এমন একটি বক্তব্য বা ধারণা অবাস্তব মনে হলেও বিষয়টির গ্রহণযোগ্যতা এবং বিশ্বাস ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে বর্তমান সময়ের মানুষের প্রতিচেতন এবং অবচেতন মনে। শ্রেষ্ঠত্ব নির্বাচিত হয় সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রদত্ত গুণাবলীর দ্বারা কে কার উপর অবস্থান করছে, তা নির্ধারণের মাধ্যমে।
চিল অনেক উঁচু থেকে যমীনের সবকিছু পরিষ্কার দেখতে পায়, মানবজাতি স্যাটেলাইট তৈরি করে তার চেয়েও আরো অনেক উপর থেকে আরো পরিষ্কার দেখার ক্যামেরা তৈরি করেছে। বাঘ, সিংহ কিংবা হাতি মানুষের চেয়ে অনেক শক্তিশালী তথাপিও মানব তৈরি অস্ত্র বন্দুকের কাছে তারা অসহায়। অর্থাৎ মানবজাতি অন্যান্য সকল প্রাণীর বিশেষ গুণাবলীসমূহ জ্ঞান এবং বুদ্ধি দিয়ে অর্জন করতে পারে। এমনকি তার চেয়ে বেশি উন্নত সংস্করণ তৈরি করে তা দক্ষতার সাথে নিজের কাজে ব্যবহার করতে পারে। তবে কেন আমাদের প্রতিচেতন এবং অবচেতন মনে এহেন ধারণা চেতনা মনের অগোচরে স্থাপিত হলো?
মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি চলমান রাখতে প্রাণী জগতে এক বিশেষ ব্যবস্থার আয়োজন করেছেন। সমুদ্রের নিচের মাছ থেকে আকাশে বিচরণরত পাখি সকল প্রাণীর জন্য একই পদ্ধতি। তা হচ্ছে একটা বয়স পার করার পর সকল প্রাণীকে শারীরিক সামর্থ্য এবং অন্তরে আগ্রহ দেয়া হয় প্রজনন ক্রিয়া অংশগ্রহণ করার জন্য। এই দুই সামর্থ্য যদি প্রাণী জগতকে না দেয়া হতো, তবে পৃথিবী থেকে প্রাণী জগৎ বিলীন হয়ে যেতো।
আলোচ্য বিষয়ের মূল বক্তব্য হচ্ছে, পৃথিবীর সকল প্রাণীকে এই দু’সামর্থ্য একই সময় প্রদান করা হয়েছে এবং ফলশ্রুতিতে সকল প্রকার প্রাণী ঠিকঠাক নতুন প্রজন্মের ব্যবস্থা করে নিজেরা বিদায় নিচ্ছে শুধুমাত্র মানবজাতি ব্যতীত। তাদের অন্তরে আগ্রহ আসে ৯ থেকে ১২ বছর বয়সে, মেয়ে/ছেলে প্রকারভেদে তবে তারা শারীরিকভাবে প্রচলিত আইনে সামর্থ্য হয় যথাক্রমে ১৮ এবং ২১ বছর বয়সে। নাঊযুবিল্লাহ! এহেন সাংঘাতিক এক দুর্বলতা নিয়ে মানব জাতি কী করে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব দাবী করতে পারে?
আসলে ব্যাপারটি একটি নির্জলা ভাওতাবাজী। মানবজাতিকেও মহান আল্লাহ পাক তিনি ওই সামর্থ্য একই সময় দিয়েছেন। শয়তান পৃথিবীতে অবৈধ যৌনাচার ব্যাপকভাবে প্রচলন করার জন্য অতিসূক্ষ্ম মগজ ধোলাইর মাধ্যমে এই উপলব্ধি মানব অন্তরে স্থাপন করতে পেরেছে যে, অন্তরের আগ্রহ যখনই আসুক না কেন, একটি মেয়ে প্রজনন কর্মকান্ডে ১৮ বছরের পূর্বে এবং একটি ছেলে ২১ বছরের পূর্বে শারীরিকভাবে উপযুক্ত হয় না।
কত অবাস্তব একটি ধারণা কত সুন্দরভাবেই না শয়তানের মানবরূপী প্রতিনিধিরা সাধারণ মানুষের অন্তরে স্থাপন করতে সামর্থ্য হয়েছে। মানুষ বিশ্বাস করে শ্রেষ্ঠ জীব আবার এই ভ্রান্ত উপলব্ধিটাকেও তারা মনে করে সঠিক। অতীতে সকলেই মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ অনুযায়ী সঠিক সময়ে বিবাহ সম্পন্ন করতেন এবং সুস্থ এক প্রজন্ম রেখেই এই নশ্বর পৃথিবী থেকে বিদায় নিতেন। আজ সেই পবিত্র বিবাহ পদ্ধতি পাশ্চাত্য দুনিয়া সমাজ থেকে প্রায় তুলে দিয়েছে। ব্যাপক যৌনাচার এবং ফলশ্রুতিতে মারাত্মক সব নতুন নতুন মরণ ধরনের ব্যাধিতে তারা আজ আক্রান্ত। ‘মরার উপর খরার ঘা’ হিসেবে অবিরাম খোদায়ী গযব তো আছেই।
এই ভয়াবহ আযাব গজব হতে মুক্তি পেতে আমাদের মুসলমানদের প্রয়োজন অন্ধের মতো ওই নাপাক, কাফির, মুশরিকদের অনুসরণ না করা। ইসলামের ছহীহ আক্বীদা অর্জন করার লক্ষ্যে খালিছ আল্লাহ পাক উনার ওলী”র নিকট বাইয়াত গ্রহণ করে তাছাউফ চর্চার মাধ্যমে ইহকাল ও পরকালের কামিয়াবী হাছিল করা। পাশাপাশি মুসলমান নামধারী সকল বাতিল ফিরক্বাহ থেকে দূরে থাকা। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে ছহীহ ইসলাম উপলব্ধি করার তাওফীক দান করুন। আমীন।