অনেক নারীবাদী পুরুষের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, তারা নিজের স্ত্রীকে বহিরাগত কর্মসংস্থানে পাঠানোর চাইতে অন্তর্গত চারকোনাকৃতির রান্নাঘরে আবদ্ধ করে রাখতে বেশি উৎসাহী। তারা বলেন ঠিকই-"রান্নাবান্না এখন শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য না,ছেলেরা এতে অনেক ভালো করছে।" কিন্তু যখন শোনেন বাসায় আজ তাকে রান্না চড়াতে হবে স্ত্রীর আসতে কিঞ্চিৎ দেরী হওয়ার কারণে,তখনই পুরুষালী প্রভাব খাটানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যান। স্ত্রী যদি কোথাও যেতে চায়,হোক তা আর্জেন্ট জরুরী কোনো কাজে,স্বামী যদি দেশান্তরীও হয়ে থাকে,তবুও "অনুমতি" নিতে হবে। কিন্তু তিনি যদি বন্ধুদের সাথে সিনেমাও দেখতে যান স্ত্রীকে না জানিয়ে, তা নিতান্তই সাধারণ, অন্যায়ের প্রশ্নই ওঠে না। তারা বলেন, "আমরা অনেক প্রোগ্রেসিভ সমাজে বাস করছি। আমাদের বাবা কিংবা দাদারা স্ত্রীকে ঘরের বাইরে কাজ করার অনুমতি দিতো না। কিন্তু আমরা "অনুমতি" দিচ্ছি।" যদি প্রোগ্রেসিভই হয়ে থাকেন,তাকে নিজের সমান মনে করে থাকেন,তাহলে অনুমতির প্রশ্ন কেন আসছে রে ভাই? ছোটোকে বড় অনুমতি দেয়,সমানে সমানে অনুমতির প্রয়োজন পড়ে না।
নিয়ম যদি নিয়মই হয়,তাহলে তো তা সবার জন্যই সমান হওয়া উচিত। "আমি করলে ঠিক,তুমি করলে ভুল"- এটা তো নিয়ম হতে পারে না।
সবাই মুখোশধারী,বিচার মানি তাল গাছ আমার গোত্রের। মুখোশের আড়ালে একটি কুৎসিত প্রতিকৃতি। নারীবাদী মন্ত্র তাদের মুখবইয়ের দেয়াল কিংবা অন্য কোনো দেয়ালিকা অথবা বক্তব্য পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। সেসব মন্ত্রকে ঘরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। দরজা জানালা বন্ধ করে সজোরে আটকে রাখা হয়। কিছু ব্যতিক্রম হয়তো আছে। তাদের মুখোশ পরতে হয় না। তারা সত্য এবং সুন্দরে বিশ্বাসী। দ্বিচক্রযানের দু'টো চাকাকেই তারা সমান তালে চালাতে চান,একটি ছোট একটি বড় না রেখে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো,যতদিন পর্যন্ত এই মুখোশহীন মানুষগুলো "ব্যতিক্রম" এর কাঁতারে আর মুখোশধারীরা "সাধারণ" এর কাঁতারে থাকবে,ততদিন পর্যন্ত সমাজের দুটো চাকা অসমানই থাকবে। যত যাই হোক,খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে আর কদ্দুরই বা যাওয়া যায়?
তবে এই "ব্যতিক্রম" এর রূপ আজও কল্পনাতেই লালন করছি,বাস্তবে তার দেখা পাওয়া ঢাকা শহরে ট্র্যাফিক জ্যামহীন রোববার দেখারই সমান!!
[নিজ ইচ্ছায় কাদা মাখালে,মাঠঘাট দায়ী নয়।]