somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুরনো চুমুর আওয়াজ ও নতুন থাপ্পরের প্রতীক্ষা

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি চুমু ও একটি থাপ্পরের বৃত্তান্ত


আমাদের গেদু মিয়া বিজ্ঞানী।
সে দিন ঘরের দেয়ালে একটি টিকটিকি পোকা ধরতে গিয়ে ধপ করে ছাদ থেকে ফ্লোরে পরে গেল তার সামনে । গেদু মিয়া খেয়াল করল টিকটিকিটি ৪৫ ডিগ্রির পরিবর্তে ৯০ ডিগ্রীতে ঝাপ দিতে গিয়ে এই অঘটনটি ঘটিয়েছে। টিকটিকিটি দৌড়ে পালাল। গেদু মিয়া নিশ্চিত বিশ্বাসে উপনীত হলো টিকটিকি পরে মরে না, মরে পরে। গেদু মিয়া এত দ্রুত ভাবতে পারে! মজার ব্যাপার হলো সকাল বেলা উঠানে যখন মোরগ কর কর করে উঠে তখন সে তার ভাষা বুঝতে পারে। মোরগ তার প্রেমিকাকে ডাকছে। এ ব্যাপারে সে যে থিসিসটা তৈরী করে ফেলেছে তাতে সে পশু পাখীদের ভাষার হুবুহু বিবরণ দিয়েছে। কিন্তু তার সমস্যা হল মানুষ নিয়ে, মানুষ গুলো অন্যরকম। মুখে বলে এক আর হৃদয়ে ঝপে আরেক। সে দেখেছে মানুষ ভালোবাসার কথা বলে নির্দিদ্ধায় বোমা ছুড়ে মারতে পারে। সেবার যখন হিরোশিমায় পারমানবিক বোমা মারা হলো তখন তারা শান্তির কথা প্রচার করল। মানুষের ভাষা এমনই চমৎকার!!

তো আমাদের বিজ্ঞানী বহু দিন বহু দেশ ঘুরে বহু পথ পেরিয়ে একটা যন্ত্র আবিষ্কার করলেন। মানুষের মনের ভাষাকে আলাদা করে ফেলতে পারে মুখের ভাষা থেকে। নাম দিলো মনো-মিটার। নেহাতই সে বাংলাদেশে জন্মগ্রহন করেছেন না হলে তাকে নোবেল পুরস্কার দিতে বাধ্য হতেন সুইডিস কর্তৃপক্ষ। অবশ্য এমন আশা সে করেও না কারন তার পূর্বপুরুষ জগদীশ চন্দ্র বসুকে কোনি মেরে নোবেল নিয়ে নিলো মার্কুনি। এই কুনির ভয়ে সে তাই তার যন্ত্র জনসমে প্রকাশ করল না। কিন্তু যন্ত্রটা নিয়ে সে বসে রইল না। মাঝে মাঝে টেস্ট করে নেয়।

একবার ট্রেনে চড়ছিলেন গেদু মিয়া । তার যন্ত্রটা একটা কামড়ায় রেখে সে বসে রইল। কামড়ায় ছিল চার জন। একজন মহিলা অধ্যাপিকা, সুদর্শন যুবক, যৌবতী সুন্দুরী আর একজন রাজনীতিবিদ। তাদের কথোপকথন বেশ উপভোগ্য ছিল।

অধ্যাপিকা: সমাজটা অধ:পতনে চলে যাচ্ছে, যুবক যুবতী অবাধ মেলামেশাই এর প্রধান কার।
যুবক: আমরা সামাজিক আন্দোলন গড়তে পারি।
যুবতী: নারীদের কে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখতে হবে।
রাজনীতিবিদ: রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাটাই পাল্টাতে হবে।

এমন সময় বিদ্যুত্ চলে গেল। সাথে সাথে একটি চুমুর ও থাপ্পরের আওয়াজ পাওয়া গেল। আজব খেলা আবার বিদ্যুত্ চলে এলো। দেখা গেল যুবকের গাল লাল হয়ে আছে। নিশ্চিত যে থাপ্পরটি যুবক খেয়েছে।

গেদু মিয়া বিশাল আগ্রহী হযে উঠল। তার মনো-মিটারে দৃষ্টি দিয়ে বসে রইল।
মনে মনের কথাগুলো যন্ত্রটি পড়তে লাগল।

অধ্যাপিকা: ঠিক আছে, সাবাস মেয়ে , আমার দেশে এমন মেয়েই দরকার। একটু চান্স পাইছে আর... থাপ্পরটি যথার্থ হয়েছে।

যুবতী: আমাকে রেখে ম্যাডামকে? থাপ্পর খাবা নাতো কি খাবা?

যুবক: শালা রাজনীতিবিদ মজা লইলি তুই আর থাপ্পর খেলাম আমি।

রাজনীতিবিদ: নিজের হাতে একটা চুমু দিলাম আর একটা থাপ্পর দিলাম বেয়াদপ পোলাডার গালে। আমারে কেউ সন্দেহ করে নাই তো??/

এভাবে রাজনীতিবিদরা সন্দেহাতীতভাবে নিজেদেরকে অনন্য উচ্চতায় মেলে ধরেন আর ঐ যুবকের মতো আমরা চুমুর আওয়াজ শুনে ও থাপ্পর খেতে খেতে বছরের পর বছর পার করে দেই এবং নতুন বছরে নতুন খাপ্পরের প্রতীক্ষা করতে থাকি।
৪২টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×