somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালবাসি প্রিয়তমা

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কেন ডেকেছ এখানে... -নিশ্চয়ই কারনটা তোমার অজানা নয়। -ঠিক বুঝলাম না। -একটা সাইন করতে হবে। -হা হা হা শুধু একটা সাইন আর কিছু চাইবে না। -তোমার কাছ থেকে পাওয়া এটাই অনেক। -তাহলে সিদ্ধান্তটা তুমিই নিয়েছ। -হ্যা আমি বড্ড ক্লান্ত। -সত্যিই কি তোমার সকল ক্লান্তির কারন আমি ছিলাম। -হয়তবা। পেপারটা এগিয়ে দিল প্রমি হৃদয়ের দিকে। চোখদুটো কেন জানি ঝাপসা হয়ে আসছে।সেই কবে থেকে প্রমি রিকুয়েষ্ট করছে সই করার জন্য।কিন্তু হৃদয় বলেছে সম্পর্কটা তো সম্পর্ন দুটি মনের ওপর নির্ভর করে,আর সেই দুটি মনের ভিতর যখন এক অজানা ঝড় এসে ভেঙে দিয়েছে তখন সামান্য একটা পেপারে কি আসে যায়। তবুও প্রমি এর শেষ দেখতে চায়।তাই আজ এখানে আসা। পেপারটা হাতে নিয়ে হৃদয় অতীতের প্রমিকে খোঁজার চেষ্টা করছে।এই কি সেই মেয়েটি যে দিনে হাজারবার ফোনে কথা বললেও বলত মিস ইউ জান।প্রতিদিন সকালে ভেজা চুল এনে মুখের ওপর রেখে মিষ্টি করে বলত আই লাভ ইউ।যাকে প্রতিদিন খাইয়ে না দিলে গাল ফুলিয়ে বসে থাকত।আজ এই মেয়েটাকে চিনতে সত্যিই খুব কষ্ট হচ্ছে। নাহ,চোখের পানি কিছুতেই দেখানো যাবে না মেয়েটিকে।প্রমির হাত থেকে পেপারটা নিয়ে সাইন করে দিল। -নাও এখন থেকে তুমি মুক্ত।শেষ বন্ধনটুকু দিয়েও তোমায় ধরে রাখতে পারলাম না।জানি ভুলে যাবে সবকিছু হয়ত নতুন জীবনে নিজেকে ব্যস্ত রাখবে।তবুও যাকে পাবে তাকে হৃদয় দিয়ে আঁকড়ে রেখ,মন দিয়ে চিনতে শিখ। শুভকামনা রইল। বামহাত দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে হৃদয়বেরিয়ে পড়ল। পিছনে তাকায় নি একবারও।কেন তাকাবে সে,তাকে ছেড়েই তো মেয়েটি সুখী হতে চেয়েছে।আর তার সুখের জীবনে কোনভাবে ব্যাঘাত ঘটাতে চাইবে না।যেখানে ভালবাসার কোন মূল্য নেই,সেখানে চোখের নোনা পানির তো কোন স্থানই নেই। .আকাশটা মেঘলা হয়ে আসছে এই বুঝি মেঘেদের বর্ষন নামবে।হৃদয় এলোমেলোভাবে পথ হাঁটছে।দু আঙুলের ফাঁকে সিগারেট।মনে পড়ছে সেই দিনের কথা এর আগে একবার সিগারেট খেয়েছিল হৃদয়। প্রমির সাথে দেখা করতে গিয়ে ধরা পড়ে যায়।মেয়েটা ভীষন কেঁদেছিল সিগারেট খাওয়া নিয়ে কিন্তু একটিবার বলেনি কেন খেয়েছ।সেই থেকে হৃদয়ের আর কখনও সিগারেট খায় নি। কিন্তু আজ,কার কথা ভেবে সে সিগারেটকে ঘৃনা করবে। হঠাৎ ঝুমঝুম করে বৃষ্টি নামল...হৃদয়ের হাতের দিকে তাকাল,সিগারেটটা নিভে গেছে বৃষ্টির পানিতে।এবার একট অট্টহাসি দিল... জানিনা এই হাসিটা সত্যিই হাসি নাকি এক ব্যাথিত হৃদয়ের গোপন আর্তনাদ কিনা। হৃদয় বিড়বিড় করে বলে উঠল, বৃষ্টি ভীষন ভালবাসত মেয়েটা। জানিনা কেন এই কথাটা সে বলল।হয়ত তার চোখের পানি ধুয়ে দিতে এই বৃষ্টির আগমন।ভীষন কালো আকাশটা আজ একটু বেশি প্রিয় হয়ে উঠেছে হৃদয়ের কাছে। অন্ধকার সেই স্মৃতি জড়ানো ঘরটাতে হৃদয়ের সিগারেট মুখে তুলতেই মৃদু আলো ছড়াচ্ছে আবার আঁধার হয়ে যাচ্ছে। আলো আঁধারের এই খেলায় হৃদয়ের অতীতে ফিরতে ইচ্ছে করছে। বেশ সুখেই তো ছিলাম।কেন এল এমন ঝড়। হৃদয়ের আর প্রমির লাভ ম্যারিজ ছিল।খুব ভালই চলছিল সব। কিন্তু একসময় প্রমির মনে সন্দেহ হয় যে হৃদয় অন্য কিছুতে আসক্ত।যার কারনে তাকে সময় দেয়না। প্রমির এ ধারনটা একেবারেই ভুল ছিল।কারন অফিসে কাজের চাপ একটু বেশি হওয়ায় হৃদয়ের ফিরতে রাত হত।অবশ্য প্রমিকে সবকিছু বলে কিন্তু প্রমি বিশ্বাস করতে চায় না।এজন্য প্রত্যেকদিন অফিস থেকে ফেরার পর সামান্য ঝগড়া হত। একদিন প্রমিকে রাগে বলে দেয় চলে যাও আমার কাছ থেকে তাহলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।তার পরেরদিনই প্রমি বাপের বাড়ি চলে যায়। হৃদয় অনেকবার গিয়েছিল ফিরিয়ে আনতে কিন্তু বারবার প্রমির জেদের কাছে হেরে যায়।প্রায় একমাস পর আজ প্রমি দেখা করতে বলেছিল।হৃদয় জানত মেয়েটি কি চাইবে।যতটুকু সম্ভব ততটুকু দিয়ে বুঝিয়ে কোন লাভ হয়নি আজ যদি আপত্তি করতাম তাহলেও কোন লাভ হত না।যাক যে যেতে চায়,অহেতুক পথ আগলে।চোখদুটো ভিজে উঠছে হৃদয়ের.... হঠাৎ টেবিলের ওপর রাখা ফোনটা মৃদু স্বরে কাঁপতে লাগল।হৃদয় স্ক্রিনের ওপর তাকিয়ে একটা চিনচিনে ব্যাথা অনুভব করছে বুকের বামপাশে...।ফোনটা একবার রিং হয়ে কেটে গেল।আবার ফোনটা মৃদুস্বরে কেঁপে উঠল....এবার রিসিভ করল, -হ্যালো।(হৃদয়) -ঘুমাও নি (প্রমি) -ঘুম,সে তো হারিয়ে গেছে।জানি না আর কখনও আসবে কি না। -কেন হারাতে দিলে তাকে? -আমি তো হারাতে চাইনি।সে নিজে থেকেই হারিয়ে গেছে। -কেন তাকে বাধা দিলে না? -হয়ত আমার অধিকার ছিল না। -যদি বলি অধিকার তোমার ছিল কিন্তু তুমি প্রয়োগ কর নি। -কোন লাভ হত না।সে তো দূরে যেতেই চেয়েছিল,চেয়েছিণ সুখী হতে। -কিভাবে বুঝলে? -মনের ভাষা পড়েছি। -তবে কেন চোখের ভাষা পড়নি,যদি একটিবার চোখের দিকে তাকাতে তাহলে এভাবে ছেড়ে যেতে না। -আমি তো ছাড়তে চাইনি সেই তো ছেড়ে চলে গেল। -যাকে ছাড়া একমূহুর্ত ও চলতে পারবে না।তাকে এত সহজে কিভাবে হারাতে দিলে।তুমি একটিবার ভাবলে না তোমাকে ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব।(কেঁদে কেঁদে বলল) -তাহলে কেন দূরে গিয়েছিল সে? -অভিমানে। -আমি তো বোঝাতে চেয়েছি। -কচু বুঝিয়েছ।কখনো বুকে টেনে নিয়ে বলেছ ভালবাসি প্রিয়তমা। -তবে সে কেন সব বুঝে এত কষ্ট দিল? -মনে কর তোমার শাস্তি। -তাহলে পেপারটা। -এখন আমার সামনে পুড়ছে।আচ্ছা এত সহজে কিভাবে সাইন করলে তুমি।একটুও ভালবাস না এখন তাই না। -আমি সত্যিই দুঃখিত। -এমন ভুল আর হবে কি? -কখনও না।এরপর থেকে আগলে রাখব এই বুকে। -তাহলে বল -কি -ভালবাসি -ভালবাসি,ভালবাসি,ভালবাসি প্রিয়তমা। -ভালবাসি তোমাকে। -এই খেয়েছ? -নাহ তুমি এসে খাইয়ে দাও। -এখন? -হুম। -আচ্ছা আসছি। অন্ধকার ঘরটা এবার আলোয় ভরে উঠেছে। হৃদয় হাসিমুখে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে পড়েছে প্রিয়মানুষটির কাছে। নাহ একটু দেরি হলে চলবেনা।সে যে এমন একটা সম্পদ হারাতে গিয়েও ফিরে পেয়েছে যা সে স্বপ্নেও ভাবে নি......। ভালবাসা তখনই একপাক্ষিক হয় যখন প্রিয়জন একটু একটু করে দূরে চলে যায়।চলার পথে এমন ভুল ত্রুটি হবেই তাই একটা সুযোগ প্রিয়জনকে দেওয়া উচিৎ।তাকে মন থেকে চিনতে শিখুন,সবসময় যেটা তার আচরনে ফুটে ওঠে সেইটা তার মনের কথা নাও হতে পারে।ধৈর্য নিয়ে ভালবাসুন। জীবনটা নিশ্চয়ই সুন্দর হবে।



ফরিদ আহমেদ হৃদয়
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:০২
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×