আমার ছেলেবেলা। বাবার গায়ে তখন শক্তি ছিল, তবু
হামেশাই আমি অবাধ্য হতুম।
জোর করে খাওয়ানোকে রিমান্ডে নেবার মত বা
প্রিয় সার্কাস দেখতে নিষেধ করাকে বাড়াবাড়ি রকম মনে হত।
পড়ালেখাতেও জবরদস্তি কিছু কম ছিল না।
মা শুধু বলতেন, ’তোর বাবাকে তো চিনিস,
একটু বুঝতে চেষ্টা করিস।
আজ উনি বয়সের ভারে ন্যূব্জ, দূর্বল। তারপরও
অস্ফুষ্ট স্বরে যখন কোন কিছুতে ’না’ বলেন,
ঠেলতে পারি না তখন, পাহাড়সম ঠেকে তা।
ছেলেবেলায় স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে বাবাকে না পেলে-
মহাছুটি লেগে যেত।
আজ সংশয়ে থাকি -
কখন না জানি মাথার উপর থেকে ছাতাটা সরে যায়।
ওনার দেয়া একটু সন্দেশ এখন প্রসাদ মনে হয়, আর
উপদেশগুলো আশির্বাদ হয়ে ঝরে।
বাবাকে এখন আমি বুঝতে চেষ্টা করি।
ওনার প্রতিটি কথা খুব মানি, বিশ্বাস করি।
এমনকি যখন বলেন -
’আমি নাকি ছেলেই রয়ে গেছি এখনো, পরিপক্ক হইনি আজও’
সে কথাও।
আজ আমি দূরন্ত দু’সন্তানের জনক।
অন্যদিকে পিতার একান্ত বাধ্যগত এক পুত্র।
পিতা-পুত্রের এই দ্বৈত পরিচয়
আমি বেশ উপভোগ করি ।
আমাকে জড়িয়ে রাখে এক গভীর আবেশে ।
স্বামীবাগ, ঢাকা।