somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমকামি বুড়োর খপ্পরে একদিন!

৩০ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মেহগনি গাছের পুরাতন পাতাগুলো ঝরে পড়েছে কিছুকাল পূর্বে। পাতাবিহীন গাছগুলোকে দেখে মনে হলো যেন রাস্তার পাশে মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে আছে। টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানের ভেতরে বিকেল বেলা মাগরিবের নামাযের ঠিক আগ মূহুর্তে। মেহগনি গাছের সর্বশেষ পাতাটি আমার গায়ের উপর এসে পড়লো। মনে হচ্ছিলো, পাতাটি আমাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে শেষ বিদায়ের কথা। এমন করেই খসে পড়বে একদিন জীবন আকাশের ঝলমলে তারকা। শীতের শেষে বসন্তের আগমন টের পাচ্ছিলাম।

আনমনে হাঁটছিলাম একা একা। প্রায়ই হাঁটা-হাঁটি করি এখানে। পেছন থেকে সালামের আওয়াজ পেলাম। ঘুরে দাড়িয়ে দেখি দাঁড়ি-চুল সাদা এক বৃদ্ধ বাঁধানো একটি কবরের উপর বসে আছে। সেই দিয়েছে সালাম। সালামের জবাব দিলাম। আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বসতে বলে কুশলাদি জিজ্ঞেস করলো।
-কেমন আছো দাদু?
-জ্বী, আলহামদুলিল্লাহ। আপনি কেমন আছেন?
-আল্লাহ খুব ভালো রাখছেন। তা.... তোমার নাম কি দাদু? কি করো?
- আমি মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। নাম হাবিবুর রহমান। আপনি কোথায় থাকেন? মাঝে মাঝে আপনাকে এখানে বসে থাকতে দেখি?
- আমি পূর্ব আদালত পাড়া মোড়ে থাকি। ওখানেই আমার বাসা। আর এটা আমার স্ত্রীর কবর। বাসায় কেউ নেই। ছেলে মেয়ে থাকে আমেরিকা। এই বৃদ্ধ বয়সে আমি একা। কি আর করবো বলো। বসে বসে কথা বলি স্ত্রীর সাথেই। ও আমার কাছে এখনো জীবিত।

বৃদ্ধ লোকটার মুখে স্ত্রীর প্রতি এমন ভালোবাসার কথা শুনে মনটা যেন কেমন নড়ে উঠলো।
-আপনি আপনার স্ত্রীকে অনেক ভালোবাসতেন, তাই না?
বৃদ্ধ লোকটা আর কোন কথা বলতে পারলো না। চোখের চশমাটা খুলে মনের অজান্তে গড়িয়ে পড়া জল লোকানোর দৃশ্য আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম। আমি আর কথা বাড়ালাম না। লোকটার দাঁড়ি-চুল সাদা হলেও গায়ে-গতরে বয়সের ছাপ খুবই কম। বেশ শক্ত-সামর্থ। গায়ে গ্রামীন চেকের ফতোয়া আর পড়নে সাদা পাজামা স্টাইলের প‌্যান্ট। হাতে পাকা বাঁশের শক্ত লাঠি।

কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলার পর বেশ সখ্যতা গড়ে উঠলো বৃদ্ধ লোকটার সাথে। আমাকে দাদু বলেই সম্বোধন করে কথাগুলো বলছিলো। ততক্ষণে মিনার থেকে মাগরিবের আযান ভেসে আসছে।
-চলো দাদু, নামায পড়ি। তুমি নামায পড়ো তো?
- জ্বি দাদু, আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ি।
-মাশাআল্লাহ.......

নামাজের জন্য অযু করছিলাম। ট্যাপের পানিতে অযুটা সেরে উঠতে উঠতে ততক্ষণে প্রথম রাকাতের সূরা ফাতেহা শেষ। জায়গা হলো মসজিদের বারান্দায়। বৃদ্ধ লোকটির অযু ছিলো বিধায় মসজিদের ভেতরে জায়গা পেয়েছিলো। নামায শেষে আমি মসজিদের মাঠে অপেক্ষা করছিলাম সদ্য পরিচিত হওয়া দাদুর জন্য। কিছুক্ষণ পর দাদু বেরিয়ে আসলো মসজিদ থেকে।
-চলো দাদু আমার বাসায় যাই। কেউ নেই বাসায়। তুমি গেলে গল্প করা যাবে তোমার সাথে।
-আজ না দাদু। আরেকদিন যাবো।
-তোমার কি ফোন আছে? অবসরে যদি তোমাকে কল দেই তোমার কি সমস্যা হবে?
-জ্বি ফোন আছে। সমস্যা হবে কেন? আপনি ইচ্ছা হলে ফোন দিয়েন।

আমার ফোন নাম্বারটা নিয়ে একটা মিসকল দিলো। বললো, "এটা আমার নাম্বার সেভ করে রাখো"। আমিও সেভ করে নিলাম দাদু নামে।

আমার নিজের দাদা-দাদি নেই। আমি যখন এসএসসি টেস্ট পরিক্ষা দেই তখন আমার দাদী গত হয়েছেন। দাদী মারা যাবার পনের দিন পর দাদাও পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন। আমার দাদার অবস্থা বেশি শোচনীয় ছিল। সকলের ধারনা ছিলো দাদাই আগে মারা যাবেন। খাদ্যনালী ছিদ্র হয়ে গিয়েছিল। কোন কিছুই খেতে পারতো না। যা খেতো বমি হতো। কুমুদিনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবশেষে চলেই গেলেন। দাদীকে হাসপাতালে নেয়ার সুযোগও দেয়নি মৃত্যুদূত!

নামায শেষে মেসে ফিরছিলাম। প‌্যান্টের ডান পকেটে থাকা ফিচার ফোন বেজে উঠলো। বের করে দেখি সেই দাদুর ফোন। রিসিভ করলাম।
- হ্যালো, দাদু। বাসায় চলে এসেছি আমি।
-ও আচ্ছা, আমি তো যাইনি এখনো।
-ঠিক আছে বাসায় যাও। পরে কথা হবে।
কথাটা বলেই লাইন কেটে দিলো। লোকটির এমন আন্তরিকতা দেখে আমার নিজের দাদার কথা মনে পড়ে গেল। আমার দাদা আমাকে কত আদর করতেন। দাদী তো চোখের আড়ালই করতে চাইতেন না। এমন একজন বৃদ্ধ মানুষকে একটু সঙ্গ দিতে পারলে মন্দ কি।

রাতে আরো দুইবার ফোন দিল। খেয়েছি কি না তারও খবর নিলো। আমি বেশ সমীহ করেই তার সাথে কথা বলতাম। আমিও দাদু ডাকতাম বৃদ্ধ লোকটাকে। মনে মনে নিজের পরলোকগত দাদার ছবি তার মধ্যে আবিষ্কার করার চেষ্টা করলাম।

ঘটনাটি ২০১১ সালের। তখন কেবল অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। অভ্যাস মতো সেদিনও হাঁটছিলাম গোরস্থানের পথ ধরে। সেই আগের জায়গাতেই বৃদ্ধ লোকটাকে আবিষ্কার করলাম। আগের মতোই পরিপাটি পোশাকে বসেছিল। আজকে আমিই আগে সালাম দিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলাম। সালামের জবাব দিতে দিতে আমার সাথে তার কুশলাদির পর্বও শেষ হল। তখনও আমার হাত ছাড়ছিলো না সে। ডান হাতটি ধরা অবস্থায়ই কথা বলছিলো নতুন পরিচিত দাদু।
-দাদু, তোমার হাত এতো নরম কেন? মেয়েদের মতো!
- কি যে বলেন দাদু, আমি তো তেমন কোন কাজ করি না। তাই হয়তো এমন। আমি হেসেই জবাব দিলাম।
আসলেই আমার হাত অন্য সবার মত অতো শক্ত না। একটু নরমই। কিন্তু এমনভাবে কেউ হাত ধরে রাখেনি কোনদিন।
-তোমার ঠোঁটে কি লিপস্টিক দাও নাকি দাদু?
-হা হা হা, না না....... আমার ঠোঁট এমনিতেই লাল। আর এখনো তো সন্ধ্যার দিকে হালকা ঠান্ডা বাতাস। তাই ভ্যাসলিন দিয়েছি।
সত্যি কথা বলতে তার এমন প্রশ্নে আমি মোটেও অবাক হইনি। কারণ আমার ঠোঁট নিয়ে এমন উক্তি অনেকেই করেছেন।
কথার টপিকস পাল্টানোর জন্য আমি নিজেই বললাম:
-দাদু, চলেন উঠি। আবার আযান দিয়ে দিবে।

বলতে বলতেই মাগরিবের আযান হয়ে গেল। দুজনেই উঠে দাঁড়ালাম নামাযের উদ্দেশ্যে। তখনও আমার হাত ছাড়ছিলো না সে। "আসো দাদু কোলাকুলি করি। কোলাকুলি করলে মহব্বত বাড়ে।" কথাটা বলেই আমাকে জড়িয়ে ধরলো। এমন শক্ত করে ধরলো যে আমার কষ্ট হচ্ছিলো। আরেকটু জোরে ধরলে হয়তো দম বন্ধ হয়ে যেত। ৬ ফুট ২ ইঞ্চির লোকটার গায়ে এখনো যে জোরের কমতি নেই তা ভালোভাবেই টের পেলাম। তখনও তার কুমতলব আমি টের পাইনি। সত্যি কথা বলতে বৌ মরা একজন বৃদ্ধ লোকের এমন কুমতলব থাকতে পারে তা কেইবা বুঝবে?

নামায শেষে আমি সেদিন আর লোকটার জন্য অপেক্ষা করলাম না। টিউশনি ছিলো। তাড়াতাড়ি সেখানেই চলে গেলাম।

কিছুক্ষণ পরে ফোন দিলো। ফোনটা নামাযের সময় সাইলেন্ট ছিলো বিধায় টের পাইনি। টিউশনি শেষ করে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি ১২ টা মিসড কল। এতো বার ফোন দিয়েছে দেখে আমি নিজেই ফোন ব্যাক করলাম। ফোন ধরেই একটু অভিমানের সুরে কথা বললো। আমি বললাম, " স্যরি দাদু, আমার আসলে টিউশনি ছিলো। তাই তাড়াতাড়ি চলে এসেছি। আমি একদিন সময় করে বাসায় গিয়ে আপনার সাথে গল্প করবো।" "আচ্ছা ঠিক আছে" বলে ফোন রেখে দিলো।

আমার খুব খারাপ লাগছিলো। আমার কারনে একটা লোক কষ্ট পাবে এটা কিছুতেই ভালো লাগছিলো না।

লৌহজং নদীর উপর তখন বাঁশের সাঁকো। সেই বাঁশের সাঁকো দিয়েই নদী পার হচ্ছিলাম। টাঙ্গাইল শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা এক সময়কার খরস্রোতা লৌহজং নদীর গল্প শুনেছি দাদার কাছে। এ নদীপথ দিয়েই নাকি টাঙ্গাইলের বিখ্যাত পোরাবাড়ির চমচম চলে যেত ঢাকা সহ সারাদেশে। সেই নদী এখন মরা খালের চাইতেও সরু। নদীতে নেই কোন স্রোত। কচুরী পানাগুলো নদীকে তাদের নিরাপদ আশ্রয় করে নিয়েছে।

পরের দিন আসর নামায পরেই গোরস্থানের পথ ধরে হাটঁতে গেলাম। পশ্চিম আকাশে রোদের তীব্রতা তখনও আছে। গোরস্থানের সেই স্থানটাতে বৃদ্ধ লোকটাকে দেখতে পাচ্ছি না। বুকের ভেতর কেমন যেন করে উঠলো। দাদুর কি কিছু হলো তাহলে! কোন অসুখ করলো নাকি আবার! ফোন দিতে চাইলাম। আবার কি মনে করে যেন ফোন দিলাম না।

সূর্যের বিদায় নেয়ার সাথে সাথে পাখিরাও দলবেঁধে নীড়ে ফিরছে। সকাল হলে আবার সূর্য ফিরে আসবে নতুন তেজ নিয়ে পৃথিবীর বুকে। এই যে গোরস্থানের ঘুমন্ত মানুষগুলো! তারা কি ফিরবে কখনো? না ফেরার দেশে আমাদেরও তো একদিন চলে যেতে হবে। সে দিনটা কারো খুব কাছে, কারো বা দূরে। কিন্তু পাড়ের কড়ি কি নিয়েছি আমরা? জীবনবোধের এই ভাবনা কজনই বা ভাবে?

ভাবনায় ছেদ পড়লো মুয়াজ্জিনের "আল্লাহু আকবার" ধ্বনিতে। আরেকটা সন্ধ্যা নামাযের সুযোগ পেয়ে শুকরিয়া আদায় করলাম। আজকে মসজিদের একেবারে সামনের কাতারে দাঁড়িয়ে নামায পড়লাম। নামায শেষে ফোন দিলাম দাদুকে।
-দাদু কোথায় আপনি? অসুস্থ নাকি, আজকে আসেন নি কেন?
-হ্যাঁ দাদু, একটু অসুস্থ।
-আমি তাহলে আসতেছি। বলে ফোনটা পকেটে রেখে বৃদ্ধ লোকটার বলে দেয়া ঠিকানা মোতাবেক বাসার নিচে গিয়ে হাজির। আর এমনিতেও টাঙ্গাইলের সব অলিগলি আমার চেনা হয়ে গেছে। ইন্টারমেডিয়েটের ২ বছর কাটিয়েছি টাঙ্গাইলে।

বাসার নিচে গিয়ে ফোন দিলাম। আমার ফোন পেয়ে দোতলা থেকে আমাকে এগিয়ে নিতে আসলো বৃদ্ধ লোকটা। তাকে দেখে মনে হলো না সে অসুস্থ। প্রতিদিনকার মতোই মনে হলো।

গায়ে আমার ফুলহাতা শার্ট। হাতা কুচানো। বরাবর যেমন পড়ি আর কি। সাইকেল চালিয়ে এসেছি। সাইকেলটা নিচে সিঁড়ির সাথে তালা লাগিয়ে উপরে উঠলাম বৃদ্ধ লোকটার পিছু পিছু। দরজার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মাঝ বয়সী একটা লোক দরজা খুলে দিল। সাইকেল চালিয়ে আসতে গিয়ে ঘেমে গেছি অনেকটাই। রুমে প্রবেশের সাথে সাথে দরজা লাগিয়ে দিলো বৃদ্ধ লোকটি। দরজা লাগিয়েই আমার শার্টের বোতাম খুলতে লাগলো। একটা খোলার পর আমি বললাম, "দাদু আমার তো গরম লাগছে না।" তারপরও জোর করে দুইটা বোতাম খুললো। জামার ভিতরে হাত ঢুকিয়ে শরীরের যেখানটাই চর্বি জমা হয় সেখানটায় বেশ জোরেই চাপ দিল। আমি ব্যাপারটা তখনও আঁচ করতে পারিনি। একবার চাপ দিয়েই হাতটা বের করে আনলো। আমাকে টেনে সামনে নিয়ে বুকের সাথে বুক মিলালো সেই আগের মতো। দুইহাতের বাহু চেপে ধরে দুই গালে সজোরে চুমু খেলো। ভাব দেখে মনে হলো কামড় বসিয়ে দিচ্ছে। বৃদ্ধ লোকটার মোচের খোঁচায় আমার গাল ছিদ্র হবার উপক্রম। আমি বললাম, দাদু কি করছেন এগুলো? থামেন! লোকটা এবার থামলো। টেবিলের উপর রাখা জগ থেকে গ্লাসে পানি ভরে খেতে গেলো। এই ফাঁকে আমি চলে আসতে চাইলাম। দরজা খুলতে গিয়ে দেখি বাইরে থেকে লক করা। খুব ভয় লাগছিলো তখন। লোকটা কি না কি করে! যে লোকটাকে আমি কয়েক মিনিট পূর্বেও দাদুর আসনে বসিয়েছিলাম তার এমন কান্ড কারখানা আমাকে দারুনভাবে আতংকিত করলো।

দরজার কাছ থেকে ফিরে এসে ড্রইং রুমের টিভির সামনে বসলাম। স্টার স্পোর্টস চ্যানেল চলছিলো টিভিতে। এক গ্লাস পানি আমার সামনে ধরে খেতে বললো। আমি খেতে অস্বীকার করলাম। একটু পর আমি যেখানটায় বসে ছিলাম চেয়ার নিয়ে সেখানে এসে দাঁড়ালো লোকটা। আমার সামনে এসেই আমার বাম হাতটা ধরে তার পায়জামার ফিতা ঢিলা করলো। বৃদ্ধ লোকটি তখন তার চূড়ান্ত রূপ দেখালো। আমি আর বসে থাকতে পারলাম না। বসা থেকে একলাফে উঠে দাঁড়ালাম। বললাম, "আমি আজ যাই, আরেকদিন আসবো।" "এতো অস্থির হচ্ছো কেন? যাবেই তো।" বৃদ্ধ লোকটি কথাটা শেষ করতে না করতেই বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটি ১০০ টাকা মূল্যের তিনটি দলিলের ফাঁকা কাগজ এনে বৃদ্ধ লোকটার হাতে দিলো।

মৃদু হাসি দিয়ে বৃদ্ধ লোকটি বলতে লাগলো:
- তুমি আমাকে মজা দিবা, আর আমি তোমাকে মজা দিবো। তুমি যেভাবে চাও সেভাবেই হবে। তোমাকে অনেক টাকা দিবো। তোমাকে আমি বিয়ে করে আমেরিকা নিয়ে যাবো। তোমাকে অনেক সুখে রাখবো। তুমি এখানে অনার্স করে কি করবে। তোমাকে আমেরিকা নিয়ে গিয়ে ভালো ভার্সিটিতে ভর্তি করিয়ে দিবো।

কথাগুলো শেষ করেই ফাঁকা দলিল আমার সামনে এনে ধরলো। বললো, "এখানে সাইন করো"। আমি বললাম, "ফাঁকা দলিলে সাইন করবো না। আপনি লিখে রাইখেন। আমি আরেকদিন এসে সাইন করবো।" আমার নাম ঠিকানা আলাদা কাগজে লিখে দিয়ে আসলাম। তবে আমার নিজের নাম বাদে সবই ভুয়া লিখে দিলাম। নাম ঠিকানা লিখে রেখেই কোন মতে বৃদ্ধের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলাম সেদিন। নিচে নেমে সাইকেলটা বের করেই দ্রুত সেই বাসা ত্যাগ করলাম।

তারপর থেকে কোনদিন গোরস্থানের ভিতরে ঐ পথে যাইনি। ঐ বাসা থেকে আসার পর আমাকে অনেকবার কল দিয়েছে, রিসিভ করিনি। একদিন দেখি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গেটে দাঁড়ানো। সেদিন আমি বাসে ছিলাম। তাই আর দেখা হয়নি। মানুষকে বিশ্বাস করে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে ভাবিনি কখনো। এমন যদি হয় তাহলে মানুষ কেন আরেকজন মানুষকে বিশ্বাস করবে?

সহজ স্বীকারোক্তি: ঘটনাটি সত্য। এর কোন অংশই বাড়িয়ে লেখা হয়নি।

ছবিঋণ: গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:৪৫
২৯টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×