somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের বংশে পুরুষদের চেয়ে নারীদের আয়ু অন্তত ২০ বছর বেশি

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সারাদেশে করোনার ভয়াল থাবা।
করোনার আগ্রাসন থেকে পিছিয়ে নেই আমাদের গ্রামও। কিন্তু এটি কেউ মানতেই চাচ্ছেন না মনে হয়। মানতে চাচ্ছেন না বলছি তার কারণ হলো হাট কিংবা বাজার চলছে আগের মতোই। স্বাস্থ্যবিধির কোন বালাই নেই। কোন দোকানপাট বন্ধ নেই। বেঁচা-বিক্রি চলছে সাধারন সময়ের মতোই। গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই করোনার উপসর্গ নিয়ে অবস্থান করছেন এমন রোগীর সংখ্যা কম নয়। কোন কোন পরিবারেরর সবাই ঠান্ডা-কাশি-নাকে ঘ্রাণ না পাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ নিয়েই দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। করোনাকে কেউ গোনায় ধরছেন না। দিনে দুই-একবার বাজারে পুলিশের অভিযান চললেও সারাদিন যেই-সেই অবস্থা।এরই মধ্যে গ্রামের অন্তত ১৫ জন মারা গেছেন করোনার উপসর্গ নিয়ে। কেউই করোনা টেস্ট করাননি। সরকারের তালিকায়ও এদের নাম নেই। সুতরাং বললতে হবে সরকার করোনার সঠিক হিসাব পাচ্ছেন না।

আমাদের গ্রামের নাম উত্তর পেকুয়া।
পূর্বে অবশ্য পেকুয়া নাম ছিলো। গ্রামটি বেশ বড় হওয়াই দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটি উত্তর পেকুয়া, আরেকটি পেকুয়া নামেই রয়েছে। গ্রামে আমাদের পাড়াকে সবাই মৌলভী বাড়ি নামেই চিনেন। আমার দাদা, তাঁর দাদা, এভাবে কয়েক পুরুষ ধরে বংশে মৌলভী ছিলেন। খুব একটা সম্ভ্রান্ত নয় আমাদের বংশ। সবাই বেশ পরিশ্রম করে জিবিকা নির্বাহ করতেন। আমার দাদা পর্যন্ত সবাই তাঁতের কাজ করতেন। মানে শাড়ি লুঙ্গি গামছা এসব হাতে চালিত তাঁতে বুনতেন এবং স্থানীয় হাটে বিক্রি করতেন। বেশ উন্নত মানের কাপড় বুনলেও দাম পেতেন না তেমন। যা পেতেন তা দিয়ে সংসার আর চলতো না। আমার জন্মের পরও এই তাঁতের কাজ ছিলো কিছু দিন। আমি যখন ক্লাস এইটে, সে সময় থেকেই বাড়িতে তাঁতের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। আমার বাবা সহ আর যারা কাপড় বুনতেন তারা সবাই চলে যান দোহারের জয়পাড়ায়। সর্বশেষ ২০০৮ পর্যন্ত দোহারের জয়পাড়াতেই কাজ করতেন বাবা।

আমাদের পরিবারের পুরুষরা ৭০ পেড়িয়েছেন এমন খুব কমই আছে।
আমার ৫ জন চাচাতো দাদা (দাদার ভাই), ৬ চাচাতো চাচা (বাবার চাচাতো ভাই) মারা গেছেন আমার দশ বছরের সময়। এখনো তাদের স্ত্রীরা জীবিত আছেন। আমি বিষয়টা নিয়ে ভাবি মাঝে মাঝে। এই কথা আমি আরিশের আম্মুকেও বলেছি। এমন কথা উঠতেই আয়েশার মন খারাপ হয়ে যায়। আয়েশা বলেন, আমি তোমাকে ছাড়া একদিনও বাঁচতে চাই না। বৃদ্ধ বয়সে তোমাকে কাছে চাই, না হলে দুজনকেই যেন এক সাথে আল্লাহ মরন দেন। আমি বেশি কিছু বলে আর কথা বাড়াই না। শুধু বলি, "আমিন"।

এই দিক থেকে অবশ্য আমার দাদা-দাদী খুবই ভাগ্যবান।
ওনারা দুজনেই মারা গেছেন আমার এসএসসি টেস্ট পরীক্ষার সময়। দাদী মারা যাবার এক সপ্তাহ পর মারা যান আমার দাদা। আমি খুব কেঁদেছিলাম। দাদা-দাদীকে নিয়ে একদিন বিস্তারিত ব্লগ লিখবো আশা আছে। সেই ব্লগে বাকি কথা বলবো।

আল্লাহর কাছে আমি সবসময় চাই আমি-আয়েশা দুজনে যেন এক সাথে বাঁচি অথবা মরন এলে দুজনেই যেন এক সাথে মরতে পারি। আয়েশা ছাড়া একটি দিনও আমি ভাবতে পারি না। আয়েশাও আমাকে ছাড়া অসহায় হয়ে যাবে। আল্লাহ যেন আমাদের প্রার্থনা কবুল করে নেন। আমিন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:১৭
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×