somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

₪ সর্বজনীন সার্বজনীন ₪

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘সর্বজনীন’ শুদ্ধ। ‘সার্বজনীন’ গ্রাহ্য। গঠন – সর্ব + জন = সর্বজন + ঈন = সর্বজনীন। অর্থ – সকলের জন্য (কৃত, উদ্দিষ্ট, অনুষ্ঠিত, উপযোগী)। ‘ঈন’ একটি প্রত্যয়, সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয়। কেউ কেউ বলেন, ‘ঈন’ প্রত্যয় যোগ হলে শব্দের আদ্যস্বরের বৃদ্ধি হয় না। তাই সর্বজন + ঈন = সর্বজনীন শুদ্ধ, সার্বজনীন ভুল। কিন্তু এ ধারণা অপূর্ণ। কেননা সংস্কৃত ‘ঈন’ প্রত্যয় একটি নয়, দুটি। একটি যোগ হলে আদ্যস্বরের বৃদ্ধি হয় না, আরটিতে হয়। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় তাঁর ‘ভাষা-প্রকাশ বাঙ্গালা ব্যাকরণ’-এ ৮৭টি সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয়ের তালিকা দিয়েছেন। তাতে ‘ঈন’ দু বার, ৩৬ ও ৩৭ নম্বরে। হুবহু উদ্ধৃত করি:

[৩৬] “-ঈন” [১] [খ]: “কুল—কুলীন; সর্বজনীন, বিশ্বজনীন”।
[৩৭] “-ঈন” [২] [খঞ]: “সার্বজনীন, বৈশ্বজনীন”।

মৃত সংস্কৃত ভাষার কবরে এই দুই ‘ঈন’-এর অর্থগত সূক্ষ্ম কোনো পার্থক্য ঢাকা পড়ে থাকলে থাকতেও পারে, তবে খোঁড়াখুঁড়ি করে কেউ তা উদ্ধার করেছেন বলে শুনি নি। অনুমান করি, পার্থক্যটা ‘দ্বারা’ ও ‘জন্য’-এর মতো কিছু। আসলে আমাদের দরকার হলো ‘সর্বজন’-এর বিশেষণ বানানো। ‘সর্বজনীন’ বললে সেটি হয়ে যাচ্ছে। অতএব ‘সার্বজনীন’ বলে ঝামেলা বাড়িয়ে লাভ নেই। এ কারণেই অধিকাংশ আধুনিক অভিধানে ‘সার্বজনীন’ শব্দটি নেই, আছে সর্বজনীন। কোনো কোনো অভিধানে ‘সর্বজনীন’-এর একই ভুক্তিতে ‘সর্বজনহিতকর’ ও ‘বারোয়ারি’ এই দুই অর্থ জুড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এ দ্বিবিধ অর্থেই ‘সর্বজনীন’ শব্দটি ব্যবহার করতে পারি। কিংবা অন্যভাবে বানাতে পারি বিশেষণ, যেমন: সার্বজন, সার্বজনিক (এখানে আদ্যস্বরে বৃদ্ধি জরুরি)। আধুনিক বাঙলায় ‘বৈশ্বজনীন’ শব্দটি কাউকে লিখতে দেখি না, ‘বিশ্বজনীন’-এর চেয়ে তার অর্থবৃদ্ধি বা অর্থভেদ কোনখানে তা নিয়েও তর্ক করতে দেখি না। তেমনি যাঁরা ‘আভ্যন্তরীণ’ লেখেন তাঁরা ‘অভ্যন্তরীণ’-এর বেশি কী বোঝাতে চান কখনো খোলাসা করেন না। খামাখাই ঝামেলা বাড়ান ‘সার্বজনীন’ টেনে। এই ঝামেলা দূর হোক। “সর্বজনীন” সকলের হোক!
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×