somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্যদের ব্যর্থ দিনে আমরা জ্বলে উঠি!

১৩ ই জুলাই, ২০০৭ দুপুর ২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অন্যদের ব্যর্থ দিনে আমরা জিতি বা জ্বলে উঠি। কথাটা শতভাগ সত্যের মর্যাদা পেয়ে গেছে আমাদের দেশের ক্রিকেট। কারণ ক্রিকেটে খারাপ দিন বা ব্যাড ডে বলে একটা বিষয় আছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা যতই দেখছি ততই মনে হচ্ছে প্রতিটা খেলার দিনই তাদের ব্যাড ডে।[অবশ্য ১০/১৫টা খেলার মধ্যে ২/১টায় তো জেতায় যায়] যেদিন অন্য দল খারাপ খেলে সেদিনই আমরা জিতি। আমাদের ক্রিকেটাররা ইতোমধ্যে তা প্রমাণ করে ফেলেছেন।
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে প্রায় ১৫০ টা একদিবসী ক্রিকেট খেলে ফেলেছে। জিতেছে কয়েকটায়। এ পরিসংখ্যানে অনেকে হয়তো তৃপ্তির ঢেকুর তুলবেন। জয়ের হিসাব তো একেবারে খারাপ না। তাদের বলি নিচের পরিসংখ্যানটায় চোখ পড়লে আপনার বদহজম বা অরুচি আসতে পারে। কিসে? সেটা না হয় নাইবা বললাম। বড় দল বলতে আমরা হারিয়েছি অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলংকা, দণি আফ্রিকা, ভারত ও পাকিস্তানকে। এর মধ্যে ভারতকে কেবল দুবার হারানো গেছে। বাকি জয়গুলো এসেছে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বলতম দলগুলোর বিপ।ে টেস্টে যে জয়টা এসেছে সেটাওতো ওই দুর্বল দলের সাথেই। বড় দলগুলো টানা ভালো খেলতে খেলতে একট দিন তাদের খারাপ যেতেই পারে। কারণ, তাদের ব্যস্ততম টানা শিডিউল। এক আধদিন তাদের কান্তি ভর করতেই পারে। সেদিনের সুযোগে আমরা জিতি। পরের ম্যাচে আমাদের ফলাফল দেখলে বিষয়টা আরো সহজ হয়। কারণ, যে ম্যাচে বড় দল হারে তার পরের ম্যাচে তারা দপ করে জ্বলে ওঠে। হারের ম্যাচটা তাদের চাঙ্গা করে দেয়।
বড় দলগুলোর সাথে একটা ম্যাচ জিতলে আমরা ক্রিকেটারদের দেবতার আসনে বসিয়ে ফেলি। বাংলাদেশের বীর, টাইগার বলতেও তাদের দ্বিধা করি না। পরের ম্যাচেই আমরা আবার ‘বিলাই’ হয়ে যায়। তখন বিলাইয়ের গলায় টাইগারের ডাক বড় বেসুরো লাগে।
বাংলদেশ খারাপ খেললেও খবরের কাগজে তাদের নিয়ে ভালো ভালো কথা লেখা হচ্ছে। বলা হয় তারা নবীন, এখনো অভিজ্ঞতা অর্জন করছে। প্রশ্ন আসে, এই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে আর কতদিন লাগবে? আর জিতলে তো কথাই নেই। খবরের কাগজে ফলাও করে তাদের নিয়ে লেখা হচ্ছে। ক্রীড়া সাংবাদিকরা হাত খুলে লেখেন। শতেক আইটেমের লেখা। মাঠের সত্যিকারের খেলা না দেখে খবরের কাগজে খেলার খবর পড়তে ভালো লাগে। টেনশন ফ্রি অবস্থায় পড়া যায়। আহারে! মাঠের খেলাটা বাংলাদেশকে যদি খেলতে না হতো!
আমাদের ক্রিকেটাররা একটা বিষয়ে বেশ উদার। বিপদলের বোলারকে বেশি কষ্ট করে বল করতে হয় না। ব্যাটসম্যানরা তাদের উইকেট বোলারদের উপহার দিয়ে আসে। আউট হওয়ার আগ মুহূর্তে ব্যাটসম্যান বোলারকে বলে, ‘তুই আমারে কি আউট করবি, আমি নিজেই আউট হব, তুই বল কর!’ (ব্যাটসম্যানদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ অনুবাদ করলে এটাই দাঁড়ায়) দিনের পরদিন একই ধরনের শট খেলে তারা আউট হচ্ছে। আউট হয়ে ফিরে এসে তারা সংবাদ সম্মেলনে বলে, আজকের আউটগুলো খুব বাজে ছিল। আগামীতে আমরা এসব ভুল কাটিয়ে উঠে আরো ভালো খেলব। এরপরেও তারা একইভাবে আউট হচ্ছে। আবার সংবাদ সম্মেলনে সে ওই একই কথা। এই কমিটমেন্টটা ক্রিকেটাররা বরাবরই পালন করে চলেছে। মাঠে তাদের বোলিং ফিল্ডিং, ব্যাটিং দেখে মনে হবে তারা বিপ দলকে জিতিয়ে দেয়ার জন্য মাঠে নেমেছে। বাংলাদেশ জোর করে হারবে এবং হারু পাট্টির মধ্যে [পরাজিত দলগুলোর] মধ্যে প্রথম হবে।
ম্যাচে জিতলেই ক্রিকেটারদের জন্য বিভিন্ন ধরনের উপহার সামগ্রী ঘোষণা করা হয়। বড় অংকের পুরস্কার ঘোষণা দেয়া হয়, দেয়া হয় বোনাস। ভালো খেললে যদি তারা পুরস্কার পেতে পারে তাহলে খারাপ খেলে দেশের মান ডোবানোর জন্য পুরস্কার প্রত্যাহারও করা যেতে পারে। এ লজ্বাতে হলেও যেন তারা ভালো খেলে।
পাঠক আপনার কানে কানে একটা পরামর্শ দিই।যদি কোনো ক্রিকেটারের সাথে আপনার খারাপ সম্পর্ক থাকে বা তাকে আপনার হিংসে হয়, আপনি যদি তার অমঙ্গল চান আর সে যদি হয় অল্প বয়সী- অবিবাহিত তাহলে তাকে পটিয়ে বা তার পরিবারকে রাজি করিয়ে তাকে বিয়ে দিয়ে দেন, দেখবেন মাস খানেকের মধ্যে সে ফল পাবে। একের পর এক ম্যাচ খারাপ করতে থাকবে। এটাতো ইতোমধ্যে প্রমাণীত। আর আমাদের মাথা মোটা নির্বাচকরা আত্বীয়তার সূত্রে দিনের পর দিন তাদের খেলিয়ে যাবেন। দেশ-দল রসাতলে গেলেও তাদের কোনো তি নেই। মাস গেলে মোটা অংকের বেতন তারা ঠিকই পান।
মানুষেরর আবেগকে নিয়ে আমাদের ক্রিকেটাররা খেলছে। আবেগটাই তাদের পুঁজি। এ রকম খেলা হতে থাকলে এ আবেগটাও আর থাকবে না। ক্রিকেটের দিব্বি, আপনারা দেশের মানুষকে আবেগ শূন্য করবেন না। মানুষের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই, বিনোদন নেই, তাই মানুষ টিকিট কেটে এখানো স্টেডিয়ামে যায়। কোথাও যাবার জায়গা থাকলে ভুলেও মানুষ স্টেডিয়াম মুখো হতো না।
শ্রীলংকা ট্যুরে বাংলাদেশ যে খেলা খেলছে সে বিষয়ে কারুর কোনো মন্তব্য...?
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×