এই যে শুনছেন,,
জি,,, আমাকে বলছেন?!
জি না, আপনার পাশের গাছটাকে বলছি,, (গাধা কোথাকার)
আজিব! সেইটায় তো জানতে চাইলাম,, বলুন আপনার জন্য কি করতে পারি?
আপনি যে এইভাবে আমাকে ফলো করছেন! আপনি কি জানেন আপনার কপালে কতোটা দুঃখ আছে?
জানি না, আর জানতে চাইও না,, সুখের কথা থাকলে বলুন, দুঃখের কথা শুনতে ভালো লাগে না,,
ভালো না লাগলে কেটে পড়েন তাড়াতাড়ি,,আমার পিছনে ঘুরলে সুখ হয়ে যাবে আপনার জীবনের মরিচিকা, দুঃখ হবে পরম পাথেয়,,
দেখুন আপনি ভুল বুঝচ্ছেন, আমি মোটেও আপনাকে ফলো করছি না,, বাই কোইনসিডেনস, হয়তো আপনি আমাকে প্রায় দেখতে পাচ্ছেন,,এইটা আপনার সাইকোলোজিকাল প্রবলেম,,পৃথিবীতে মেয়ের অভাব নেই যে আমি আপনার পেছনে ঘুরবো,,,কথাগুলো বলা মাএই আবির হাতের সিগারেটটা ফেলে নীলাকে পাশ কাটিয়ে হাটাঁ ধরলো,,,
ফ্যাকাসে মুখে নীলা আবিরের পথপানে চেয়ে রইল,,আসলেই কি ছেলেটা তাকে ফলো করে নি, তার কোনো ভুল হচ্ছে না তো, ছেলটাকে সে এর আগে মাএ দু বার দেখেছে, একবার এক রেস্টুরেন্টে, আরেকবার নিউমার্কেটের এক শাড়ির দোকানে,, তার মনে হয়েছিল রেস্টুরেন্টে ছেলেটা বারবার উকিঁ দিয়ে তার দিকেই তাকাচ্ছিল,,তার চোখে চোখ পড়তেই ছেলেটা চোখ নামিয়ে ফেলেছিল,, আর নিউমার্কেটে তো রীতিমতো ছেলেটা তাকে একটা লাল শাড়ি দেখিয়ে জানতে চেয়েছিল, আপু শাড়িটা কেমন, নীলা ভাল বলেই দোকান থেকে বেড়িয়ে পড়েছিল,, ঠিক তার ৫ দিন পর ছেলেটাকে সে আজ তাদের কলেজের পাশেই একটা গাছে হেলান দিয়ে সিগারেট টানতে দেখলো,, আর সে অমনিই চটে গিয়ে যা তা বলে আসলো,,হয়তো সে যা করেছে ঠিক করেনি, মনের অজান্তেই করেছে,,,
৩ মাস পার হলে গেল,, এর মধ্যে নীলা একবারও আবিরকে দেখতে পেল না! প্রতিদিন কলেজ থেকে যাওয়ার পথে সে ঐ গাছটার দিকে তাকায়, কিন্তু সেই খোচাঁখোচাঁ দাড়ির মাঝে লুকিয়ে থাকা কালো চেহারাটা সে আর দেখতে পায় না!!
কি হতো যদি সেদিন ঐ ভাবে ছেলেটাকে না বকলে,,নীলার কান্না পায়, কিন্তু সে কাদেঁ না,,নাম ও পরিচয় না জানা একটা ছেলের জন্য সে কাদবেঁ কেন! জীবন চলতে থাকে নিজের মতো,, নীলার বিয়ে হয়, স্বামী-সংসার হয়, দেখতে দেখতে ২০ টি বছর পেরিয়ে যায়, তারপরও সে দিনটির কথা নীলা আজও ভুলতে পারেনি,, হয়তো কখনো পারবে ও না!
কারো জন্য জীবন থেমে থাকে না, শুধু কোনো এক গভীর রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে যখন মনে পড়ে যায়, অবিরাম অশ্রুর ধারা বয়তে থাকে, নিরবে, নিভৃতে ও নির্জনে,,,