মাত্রই আবিষ্কার করলাম আমি ব্লগ লিখছি তা তিন বছর হয়ে গেছে! তাও আবার সামুর বামপাশের বর্ডারের হিসাবের খাতা দেখে। কয়েক সেকেন্ডের জন্য মনে হল কয়টা বিট মিস করে গেলাম। টাইম মেশিনের মত এত দ্রুত না হলেও ধীরে ধীরে চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগল সেই পুরনো ফেলে আসা দিনগুলো যেগুলো আজ প্রায় কষ্ট আর অবহেলার ধুলোয় পুরোটা ঢাকা পড়তে বসেছে। লেখা আগানোর চেষ্টা করছি আর আস্তে আস্তে টের পাচ্ছি কতটা অবনতি হয়েছে। প্রয়শই ব্ল্যাঙ্ক হয়ে যাচ্ছি!
কারণটা খুব যথার্থই। সময় অনেক কিছু পরিবর্তন করে দিয়ে গেছে। জীবনের হালখাতা থেকে অনেক কিছুই ছিনিয়ে নিয়ে গেছে সাথে যুক্ত করেছে নতুন ছুতো। তিন বছর আগের মানুষটি আর এখনকার আমাকে দাড় করানো গেলে আমি নিজেই হয়ত চিনতে পারব না। পুরো ৩৬০ ডিগ্রী এঙ্গেলে উল্টে গেছি। মানসিকতায় এসেছে অনেক পরিবর্তন। এবার আসি লেখালেখির প্রসঙ্গে। প্রথম এক বছর যেখানে সেঞ্চুরির কাছাকাছি লিখেছি সেখান থেকে পরের দুই বছরে মাত্র হাতেগোনা গুটিকয়েক! কেন মাঝখানে বড় গ্যাপ পরে গেল তার কারণ নিজে উপলব্ধি করা যতটা সোজা লিখে এই মুহূর্তে প্রকাশ করাটা ঠিক ততটাই কঠিন। সেদিকে আর যেতে চাইও না। শুধু এটুকুই বলব সময় মানুষকে এমন এমন পরিস্থিতির সামনে ঠেলে দেয় আর তার রেসপন্স আমাদের ভিতরকার আমিটা কিভাবে দেয় তাও বলা মুশকিল। তবে বলতে দ্বিধা নেই আমি কখনই খুব ভাল কিছু লিখতে পারিনি। লেখার হাত এখনও বাচ্চাদের পুরো খাতা জুড়ে বর্ণমালা শিখার মতই রয়ে গেছে।
আসলে সব কিছুর সাথেই একটা উইল পাওয়ার একটা পারপাস জড়িত থাকে। দুটোর ক্যামেস্ট্রিটা ভাল থাকলেই কেবল ওই পারটিকুলার কাজটা করা যায়। যাই হোক যেই বেইস থেকে লেখালেখি শুরু করেছিলাম মাঝখানে এমন কিছু সিচ্যুয়েশানের মধ্য দিয়ে গিয়েছি যেগুলো আমার সেই বেইসটাকে দুমরে মুচড়ে দিয়ে গেছে। ওই সময়টায় প্রতিটি নিঃশ্বাস পাহাড় সমান স্থূল আর ভারী মনে হত। এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে উঠার চেষ্টায় আছি। আচমকা পেয়ে বসা বাস্তবতার বেরসিক ধাক্কাটা সামলে নিতে শিখে যাচ্ছি। এখন এসে মনে হয় আসলে ওই নাইটমেয়ারটার দরকার ছিল তা না হলে জীবন কি কিভাবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজেকে ভেঙে গড়তে হয় সেগুলো আজও সিলেবাসের বাইরে থেকে যেত।
সত্যি বলতে মানুষের এক অদ্ভুত ক্ষমতা আছে। গিরগিটির মত বাহ্যিক রং পাল্টাতে না পারলেও নিজের অবাধ্য মনটাকে কঠোর হাতে শাসন করে পাল্টে দিতে পারে। এখানেই ক্যারিশমা! আমিও মনে হয় সে কাজটাই সফলতার সাথে করতে পারছি। যার জন্য নিজেকে একটা থ্যাঙ্কস দিতেই পারি। আর সেজন্যই এখনও আনাড়ি হাতে এটাসেটা লেখার সাহস করে ফেলি হা হা হা। শেষটায় এসে মেনে নিতেই হয় মানুষ কিছু কিছু কাজ করে একান্তই মনের খোঁড়াক জোগানোর জন্য অন্যের বাহবা পাওয়াটা যেখানে নিতান্তই গৌণ। কথায় আছে দেহটা পচে যাক কিন্তু মনটা ভাল থাক।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৭