somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাস্তিক ও ইসলামবিরোধীদের প্রশ্নোত্তর

১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পর্ব-৮

নাস্তিকঃ- ধর্মমতে ঈশ্বর ভবিষ্যতের সবকিছুই ফিক্সড করে রেখেছেন আর সে অনুযায়িই চলছে সুতারাং আমরা খারাপ কাজ করতে বাধ্য হচ্ছি এবং ফিক্সড ভাগ্যের কারনেই জাহান্নামী হতেও বাধ্য হচ্ছি, তাহলে আমাদের দোষ কোথায় ?

আস্তিকঃ- কুরান-হাদিস হতে আমরা জানতে পারি আল্লাহ সুবহানা তায়ালার মোট ৪টি পর্যায় রয়েছে যেমন- ১ম পর্যায়ে তিনি একাই ছিলেন আর কোন কিছুরই অস্তিত্ব ছিল না, না ছিল সময় আর না ছিল আকার বা স্থান এর অস্তিত্ব যে যাতে তাঁর আরশ অবস্থান করবে কেননা আরশও একটা সময় তিনি বানিয়েছিলেন অর্থাৎ শুধু তিনিই ছিলেন আর কিভাবে ছিলেন আর সেটা আসলে কেমন তা কোন সৃষ্টির পক্ষে কল্পনাও করা সম্ভব নয়। আর এই পর্যায়ে যেহেতু সৃষ্টি বলতে কোনকিছুই ছিল না তাই ভাগ্যও লেখা হয় নাই তাই কোনকিছুই ফিক্সড ছিল না। ২য় পর্যায়ে সৃষ্টি-জগৎ বানান আর এই পর্যায়ে তিনি সবকিছুই লিপিবদ্ধ করে ফিক্সড করেছেন একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অর্থাৎ কেয়ামত পর্যন্ত, যেকারনে ভাগ্যলিখনির কলমের কালি শুঁকিয়ে গিয়েছিল আর এই পর্যায়েই তিনি পরীক্ষার হলও বানিয়েছেন মানুষ ও জ্বিন জাতির জন্য। ৩য় পর্যায়ে তিনি কেয়ামত ঘটিয়ে সবকিছু ধ্বংস করে আবারও শুধুই একা থাকবেন এই পর্যায়েও কোনকিছু ফিক্সড থাকবে না তবে এভাবে তিনি ৪০টা সময়কাল অতিক্রম করে আবারও সবকিছুর পুনর্জন্ম দিবেন অর্থাৎ কেয়ামত হতে হাশরের মাঠ বা বিচার দিবস শুরু হবার পূর্ব পর্যন্ত কোনকিছুই ফিক্সড নয় এই সময় তিনি কি কি করবেন আর কিভাবে থাকবেন একমাত্র তিনিই জানেন। এরপর ৪র্থ পর্যায় বা সর্বশেষ পর্যায়ে এসেও ভাগ্য লিপিবদ্ধ না থাকায় সেই আনলিমিট পর্যায়ে এসেও বলা যেতে পারে যে সবকিছুই ফিক্সড নয়। যেহেতু ২য় পর্যায়ে লিখিত ভাগ্যলিপি হতে একটা আভাস পাওয়া যায় যে যাদের পূর্বেই জান্নাতি বা জাহান্নামী ঘোষনা করা হয়েছে তারা ঠিকই তাই হবে সুতারাং এই পর্যায়েও কিছু কিছু জিনিস পুর্বনির্ধারিত বলা গেলেও তা শুধু আল্লাহ সুবঃ এর জ্ঞানেই থাকবে কিন্তু কোনকিছুতে তা লিখিত থাকবে না যে- এই হবে সেই হবে, কারন এই পর্যায়টা হবে অসীম অর্থাৎ যার শুরু আছে কিন্তু শেষ নাই। তাই এসবও যদি পূর্বের মতন ভাগ্যে লিপিবদ্ধ করা হয় তাহলে তা আনলিমিট হওয়ায় ঐ লেখারও শেষ হবার কথা নয় অর্থাৎ লেখা চলতেই থাকতে হত কিন্তু আমরা জানি আল্লাহ সুবঃ কলমের কালি শেষ করে ভাগ্য লেখার ইতি টেনেছিলেন। তাই যেহেতু এই পর্যায়ে পুর্বের মত লিপিবদ্ধ কিছু নেই তাই একেও আমরা একশত ভাগ ফিক্সড বলতে পারি না সুতারং পরকাল ফিক্সড নয় অর্থাৎ যেখানে মানুষ থাকবে চিরকাল সেটা তো ফিক্সড নয় শুধু ইহকাল ফিক্সড।
এখন দেখতে হবে পরকালের কিছু ব্যাপার পূর্বনির্ধারিত হবার পাশাপাশি ইহকাল সম্পূর্নই পূর্বনির্ধারিত বা ফিক্সড কেন করলেন ? খুবই ভালভাবে লক্ষ্য করলে বুঝা যাবে যে দুনিয়ায় সবকিছু ফিক্সড করায় ঈশ্বরের তো কোন দোষ নেইই বরং প্রশংসার যোগ্য এর পাশাপাশি মানুষেরও তেমন একটা দোষ নেই যা শেষের দিকে প্রমান দেয়া হবে ইনশাহ আল্লাহ । তারপূর্বে আলোচনা করা হবে ইহকাল ফিক্সড করার মূল কারন কি ? আসলে ইহকাল ভাগ্যে লিপিবদ্ধের মাধ্যমে পরিপূর্ন ফিক্সড তিনি যেসব কারনে করেছেন তার সবগুলো কারন মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব না হলেও তিনি যতটুকু জানিয়েছেন তার মাধ্যমে আমরা ঠিকই তাঁকে নির্দোষ ঘোষনার পাশাপাশি প্রশংসাও করি। ভাগ্য তৈরী বা সৃষ্টিজগৎ তৈরীর পূর্বে হয়ত তিনি অনেক বিজ্ঞতার সাথে প্লান করে দেখেছেন যে, ইহকালকে ভাগ্যের মাধ্যমে ফিক্সড না করলে কিছুতেই ভবিষ্যৎ ভারসম্য সম্ভব নয় এবং মানুষ ও জ্বিনের জন্য যে পরীক্ষার ক্ষেত্র বানাবেন তাতেও পরিপূর্ন সততা রক্ষা সম্ভব নয় এমনকি ভালভাবে পরীক্ষা না হবার পাশাপাশি বিশৃংখলার মাধ্যমে সমস্ত সৃষ্টিই ধ্বংস হয়ে সেখানেই পরিসমাপ্তি ঘটত অর্থাৎ পরকাল তৈরীর করে প্রতিফল দেয়ার মাধ্যমে যে সৃষ্টিকার্য করতেন তাকে আর আগে বাড়ানো যেত না অর্থাৎ পরীক্ষা হলের সততা রক্ষার্ত্রেই তিনি সকল সৃষ্টিকে একটি ফিক্সড ব্যাবস্থার মধ্যে আবদ্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন অনেকটা মুভি-সিনেমার মতই যেমন- পরীক্ষা হলে পরীক্ষক যদি সততার সাথে ভালভাবে পরীক্ষা নিতে চায় তবে তিনি সকল পরীক্ষার্থীর অনেক স্বাধীনতা হস্তক্ষেপ করে পরীক্ষা হলকে নিয়ন্ত্রন করেন উদাহরনস্বরুপ- কেউ কপি করতে পারবে না, অন্যের দেখে লিখতে পারবে না, কারও সাথে কথা বলতে পারবে না, অন্যদের কোন ধরনের বিরক্ত করতে পারবে না, যতক্ষন পরীক্ষা হলে থাকবে ততক্ষনই বসে থাকতে হবে ইত্যাদি আরো অনেক কিছু। তবে শুধুমাত্র স্বাধীনতা থাকবে ভাল/খারাপ লেখা অথবা একদমই না লেখার এমনকি তিনি পরীক্ষার্থীর লেখাগুলোকেও পরিপূর্ন নিয়ন্ত্রন করতে পারতেন অর্থাৎ তার ইচ্ছামতই লিখাতে পারতেন কিন্তু যেহেতু তিনি তা না করে স্বাধীনভাবে লিখতে দিচ্ছেন তাই এটাও তিনিই করাচ্ছেন বলা যায় । অতএব এরকমভাবে হলের মধ্যে ফিক্সড একধরনের ব্যাবস্থা সৃষ্টি করে কেউ যদি পরীক্ষার হলে সততা রক্ষা করেন তবে তাকে কি দোষ দেয়া উচিত নাকি প্রশংসা করা উচিত ? হ্যা! তার প্রশংসা করা উচিৎ কিন্তু যাদের অতীতে সময় দেবার পরও পড়াশুনা করে নাই তারা কিন্তু পরীক্ষা হলের সততা রক্ষায় ফিক্সড ব্যাবস্থাকে অবশ্যই ক্ষতির কারন হিসেবে দেখবে এবং কপি বা অন্যের না দেখে লিখতে পারায় ফেল করার সম্ভাবনার কারনে নিজেকে দোষারোব না করে পরীক্ষকের উপর দোষ দিয়ে একধরনের অত্মতৃপ্তি পাবে। নাস্তেকদের ক্ষেত্রেও এমন ব্যাপার লক্ষ্য করা যায় ।
আল্লাহ সুবঃ যদি সৃষ্টি জগৎকে ফিক্সড না করতেন তবে অবশ্যই সৃষ্টিকে পরিপূর্ন স্বাধীনতা দিতে হত আর সৃষ্টি যেহতু জোরায় জোরায় করেছেন তাই ভাল মানুষের পাশাপাশি খারাপ মানুষও থাকত আর তারা পরিপূর্ন স্বাধীন হলে বিশৃংখলার মাধ্যমে অন্যদের পরিপুর্ন ধংস করত এবং দুনিয়ায় আল্লাহর দ্বীনকে একদমই নিভিয়ে দিত আর দ্বীন না থাকার ফলে সততার সাথে পরীক্ষা করা যেত না আর তাই সু-বিচার এর মাধ্যমে পরকালেও সাস্তি দেয়াও উচিত হত না ফলে পরকাল সৃষ্টিও অযোথা হত। কিন্তু বাস্তবতা হল উপরের ঐ পরীক্ষা হলের উদাহরনের মত- আমরা দুনিয়ায় কিন্তু যা ইচ্ছা তাইই করতে পারি না যদিও ভাল/মন্দ করার স্বাধীনতা আছে কিন্তু তারও একটা সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে কেউ ইচ্ছে করলেই নিজে ভাল হবার পাশাপাশি সমস্ত মানুষ ও জ্বীনকেই পরিপূর্ন ভাল যেমন করতে পারবে না কিছু না কিছু খারাপ থেকেই যাবে ঠিক জাহান্নামীরাও সমস্ত ভাল মানুষকে দুনিয়া হতে পরিপূর্ন বিনাশও করতে পারবে না, তবে যখনই তারা চেষ্টা করবে তখনই মুসা আঃ, ইমাম মাহদী আঃ এর মত সাধারন মানুষের হাত দিয়ে ফেরাউনের মত প্রতাপশালী রাজাদের বা দাজ্জালের মত শক্তিশালীদের ধ্বংস আল্লাহ সুবঃ পূর্বেই নির্ধারন করে রেখেছেন যাতে করে দুনিয়ায় ধর্ম মানার বা না মানার স্বাধীনতা বিরাজমান থাকে অর্থাৎ এক পক্ষ অন্য পক্ষকে সমূলে বিনাশ করে যেন ভারসম্যতা নষ্ট না করতে পারে অর্থাৎ পরীক্ষা হলের সততা যাতে নষ্ট না হয় তাই তিনি পরিপূর্ন ফিক্সড করতে বাধ্য হয়েছেন আর দুনিয়ায় পরীক্ষার ক্ষেত্র যেহেতু তাঁকে ফিক্সড করতে হয়েছে তাই পরিপূর্ন ন্যায় বিচারের জন্য পরকালের প্রতিফলটাও ফিক্সড করতে হয়েছে, কিন্তু তা এখনকার ফিক্সড ভাগ্যের মত লিপিবদ্ধ করা হবে না কারন পরকাল হবে অনন্ত।
এখন কথা হল একপক্ষ যারা জান্নাতি তারা ফিক্সড ভাগ্যের জন্য খুশিই হয়ে থাকে কিন্তু আরেক পক্ষ জাহান্নামীরা আল্লাহ সুবঃ কে দোষারব করে এজন্য যে কেন তাদের দুনিয়াতে সুখী করে পরকালে দুঃখী করা হল অর্থাৎ পরকালেও সুখী কেন করা হল না? ভাগ্য ফিক্সড হওয়ায় তারা তো ঠিকই পাপী হতে বাধ্য হবে তাই তাদের দোষ নেই। তাদের এই প্রশ্নের জবাবে বলতে হয় যে মুমিনদের যে দুনিয়াতে আল্লাহ সুবঃ আযাব ভোগ করিয়ে দুঃখী বানিয়ে রাখবেন এটার জন্যে মুমিনদের দোষ কোথায়? দুনিয়াতে সাস্তি পাওয়ার জন্য তারা তো কোন পাপ করে নাই এমনকি রুহ জগতেও না তাহলে তাদের শুধু শুধু কেন আল্লাহ সুবঃ দুনিয়াতে দুঃখী করে রাখছেন অথচ জাহান্নামীরা দুনিয়াতে পাপ করবে অতঃপর তার সাস্তিস্বরুপ পরকালে আযাব ভোগ করবে। আর জাহান্নামীরা দুনিয়াতে ডবল মজায় থাকবে ১ নম্বর মজা হল পাপ কাজ করে ২ নম্বর মজা হল দুনিয়াতে সুখী হয়ে, তাই তাদের পরকালে অনন্তকাল আযাবে থাকতে হবে অর্থাৎ দুনিয়ায় ডবল মজা ভোগকারীদের অনন্তকালের আযাব দিয়ে কাটাকাটির ব্যাবস্থা করেছেন আর যারা দুনিয়ায় অশান্তিতে থাকবে তাদেরকে পরকালের অনন্ত সুখ দিয়ে কাটাকাটির ব্যাবস্থা করেছেন। এখানে দুই পক্ষ সৃষ্টি করে উভয় পক্ষকেই তো সুখ-দুঃখ দুটোরই স্বাদ আস্বাদন করাচ্ছেন তাহলে ঈশ্বরের দোষ কোথায় ? তাছারা জাহান্নামীরা তো পরকাল চাইছেও না, দুনিয়াই তাদের কাছে লোভনীয়।
সবচেয়ে বড় কথা হল জাহান্নামী নিজেরাই যদি জাহান্নামে যাবার পর আল্লাহকে দোষী না মনে করে থাকে তবে আপনার এত মাথাব্যাথা্ কেন ? এই ব্যাপারে বিস্তারিত ৬ নং পর্বে আলোচনা করা হয়েছে যে আল্লাহ সুবঃ কিভাবে জাহান্নামীদের সেটিসফাইডের ব্যাবস্থা করেছেন। তাছারা যারা জাহান্নামী তাদের সেভাবেই যোগ্য করা হয়েছে অর্থাৎ কাফেরদের মোটা চামরার অধিকারী বা দোযখের আযাবের সহ্য শক্তি দিয়ে বানালে সমস্যা কোথায় ? মুমিনদের অনন্তকাল আযাবের সহ্য শক্তি দেন নাই তাই দুনিয়াতেও দেখা যায় যারা জান্নাতী তারা লাজুক এবং নরম স্বভাবের অর্থাৎ মনে হয় তারা যেন অদৃশ্য সফট্ চামরার অধিকারী কিন্তু কাফেরদের দেখা যায় নির্লজ্জ এবং কঠোর স্বভাবের যেন তারা অদৃশ্য এক মোটা চামরা দিয়ে সৃষ্ট , বাস্তব জীবনে দেখা যায় এদের অপমানবোধ কম আর খারাপী তাদের গায়ে লাগে না যেন তারা গন্ডারের চামরার মানুষ। যাকে যেভাবে ভাগ্যের মাধ্যমে ফিক্সড করেছেন তাকে সেভাবেই যোগ্য এবং সেটিসফাইডও করেছেন, জাহান্নামীরা দুনিয়া পেয়েই সুখী। কারও পক্ষেই দুনিয়া এবং পরকাল উভয়ই পাওয়া সম্বব না, পরকাল যারা পাবে তাদেরকে দুনিয়ার সুখ ছারতে হয়েছে। কাফেরদের কাছে দুনিয়ার সুখ যেমন বড় তেমনি মুমিনদের কাছে পরকালের সুখ, মুমিনরা দুনিয়ায় যে ধৈর্য আর কষ্টের পরীক্ষা দেয় সেই পরীক্ষা কাফেরদের দিলে তারা বলত- পরকালের অনন্ত সুখের দরকার নেই আমার , এত কষ্ট- ধৈর্য্য আমার দ্বারা সম্ভব নয় সুতারং দুনিয়াতে তারা এমনটাই বেছে নেয়। মুমিনরা যেহেতু নরম মনের মানুষ তাই এক হিসেবে বলা যায় মুমিনরা স্বল্প সময়ের দুনিয়ায় যে ধৈর্য্য, কষ্ট, ত্যাগ-তিতিক্ষা আর নিজের জীবন বিসর্জন দেয় তা কাফেরদের অনন্তকাল আযাবের সমপরিমানই, আবার কাফেররা নিজের মন মত চলে, যা ইচ্ছা তাই করে, অপরকে কষ্ট দিয়ে ঠকিয়ে অত্যাচার নির্জাতন করে অল্প সময়ের দুনিয়ায় যে ধরনের উভমুখী মজা পায় তা মুমিনদের পরকালে অনন্তকাল মজারই সমমান বলা চলে তাহলে দুই দলকেই আল্লাহ সুবঃ সুখ-দুঃখ দুটোই দিচ্ছেন এবং তাদের নিজ নিজ পজিসনে সেটিসফাইডও রেখেছেন তাহলে সেটাই যদি করা হয় ফিক্সড ভাগ্যের মাধ্যমে অথবা অন্য পন্থায় , কোন পক্ষেরই তো আল্লাহকে দোষ দেবার কারন থাকে না।
তবে কিছু কাফেরদের মনে হতে পারে যে, তারচেয়ে আমার সৃষ্টি না হওয়াই ভাল ছিল। এটি একটি হাস্যকর কথা, কারন সৃষ্টি না হলে তার তো কোন অস্তিত্বই থাকত না, ব্যাপারটা এমন না যে সৃষ্টি না হয়ে সে এমন এক অবস্থায় থেকে ভাবতে থাকবে যে “ যাক বাবা! আমি তো সৃষ্টিই হই নাই, আরামে আছি, সৃষ্টি হলেই কষ্ট করতে হত” আসলে এধরনের কোন ফিলিংস আসার মত কোনকিছুই থাকত না আর তাছারা সে জাহান্নামী হলেও সৃষ্ট হয়ে তো অনেক ভোগ-বিলাস করতে পারছে সৃষ্ট না হলে তো সেটাও করতে পারত না আর কষ্টের যে ব্যাপারটা তা জান্নাতীদেরও রয়েছে। তাই যারা নিজের মনকে ইলাহ বা ঈশ্বর ভাবে তাদের মনেই এমন প্রশ্ন জাগে আর প্রতিটা নাস্তেক নিজের মনকেই ইলাহ ভাবতে বাধ্য হয় কেননা তারা মনে করে ইলাহ এর কোন অস্তিত্বই নেই, তাই তারা নিজেদের স্বাধীন একটা কিছু ভাবে বা নিজ নিজ ফিলিংসকে ইচ্ছামত বোধ করার জন্য তাদের করনীয় অনেক কিছুই আছে এমন মনে করে। কিন্তু তারা জানে না যে আমরা আসলে কিছুই না তিনিই সবকিছু করেন এবং প্রতিটা প্রানের পাশাপাশি সত্যিকারের ফিলিংসও তিনিই নেন অর্থাৎ জাহান্নামীদের সমপরিমান কষ্ট তিনিও পান কিন্তু তা অনেকটাই এরকম যে- সিনেমার মাঝে কারও কষ্ট দেখে দর্শকের যেমন কষ্ট লাগে কিন্তু তাতে দর্শকের তেমন যায় আসে না শুধুমাত্র একধরনের বিনোদন ছারা। তবে অনেকে ভাবতে পারে যে ঈশ্বর যেহেতু সবকিছুই ফিক্সড করেছেন তাই জীবনে আশ্চর্য্যান্নিত আনন্দে ভাটা পরল। সত্যিকারের কথা হল- ফিক্সড ভবিষ্যতের সবকিছুই আমাদের অজানা থাকায় মজা নষ্ট হবে না। অর্থাৎ আগামী কাল আমি কখন খাব-দাব, ফুর্তি করব তার পরিপূর্ন চার্ট আগের দিন একজন মানুষকে দেয়া হলে সে তখনই একধরনের আনন্দ বোধ করবে কিন্তু পরের দিন যখন ঠিক সেসব আনন্দের ঘটনা হুবহু তার সামনে ঘটবে তখন আর তার বেশি মজা লাগবে না কারন সে পুর্ব হতেই জানত যে এগুলোই তো ঘটতে যাচ্ছে অর্থাৎ আশ্চর্য্যান্নিত আনন্দের ক্ষেত্রে অনেকটাই ভাটা পরবে তাই আল্লাহ সুবঃ বান্দাদের ভবিষ্যতৎ জানাননি এবং জান্নাতেও হুবহু জানাবেন না যে- এরপরে ঠিক কি ধরনের আনন্দের ব্যাপার অপেক্ষা করছে। তাই সবকিছু ফিক্সড করার পরও তা যদি আমাদেরকে না জানানো হয় তবে মোটেও মজা কমছে না আর একইভাবে কে জাহান্নামী কে জান্নাতী তাও তিনি পূর্বে আমাদের জানাননি তাই দেখা যায় যারা জান্নাতী তারা ঠিকই চেষ্টা করে যায় ঐ দলের অন্তর্ভুক্ত হতে আর জাহান্নামীরা ঈশ্বরের দোষ, মুমিনদের ভুল ইত্যাদি নিয়ে পরে থাকে এবং একসময় হেড অফিসে ডাক পরে যায় আর জাহান্নামী হয়েই অবশেষে পটল তুলতে হয়।




নাস্তিকঃ- মুসলিমরা ইদানিং প্রায়ই ফ্রান্সিস বেকন এর ভুল উদ্ধৃতি দেয়- তিনি আসলে বিজ্ঞান নয় দর্শনের কথা বলেছেন।তাছারা ফ্রান্সিস বেকন ইংল্যান্ডের রাণী এলিজাবেথ ওয়ান-এর র্পালামেন্টের সদস্য ছিলেন এবং বলেছিলেন তার প্রধান কাজই হবে দেশের এবং চার্চের সেবা প্রদান করা। তিনি এন্জেলিকান খ্রীষ্টান ছিলেন। ৪৫ বছর বয়সে এলিস নামে এক মেয়েকে বিয়ে করেন কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে তিনি একজন সমকামী ছিলেন। তিনি বলেছিলেন অল্প দর্শন বিদ্যা শিক্ষা মানুষকে নাস্তিক করে গড়ে তুলে এবং অধিক দর্শন বিদ্যা শিক্ষা মানুষকে স্রষ্টার কাছে নিয়ে চলে। Source : Wikipedia (Sir Francis Bacon)

আস্তিকঃ- তিনি আস্তিক খ্রীষ্টান ছিলেন আবার ব্যক্তিগতভাবে তিনি একজন সমকামী ছিলেন এসব বলে আপনি কি বুঝাতে চাচ্ছেন ? তিনি যা বলেছেন তা ভুল বলেছেন ? আর আপনি কি জানেন বিজ্ঞান তত্তের উদ্ভব কিসে থেকে হয়েছে ? বিজ্ঞানের মূলত উদ্ভব হয় দর্শন শাস্ত্র হতে অথবা দর্শনকে বিজ্ঞানের আদি বাপও বলা যায় অর্থাৎ অতীতে বর্তমানের মত বিজ্ঞান নামে আলাদা কোন শাস্ত্র এর অস্তিত্ব ছিল না, দার্শনিকদেরই বিজ্ঞানী ভাবা হত, পরে অবশ্য দর্শন শাস্ত্র আর বিজ্ঞান শাস্ত্র আলাদা দুটি বিষয়ে পরিনিত হয় বর্তমানে যেমন- পদার্থ বিজ্ঞান আর গনিত দুটি আলাদা বিষয় এবং বর্তমানে এসে সম্পুর্নভাবে দর্শন আলাদাই একটি প্রাচীন শাস্ত্রে পরিনিত হয়েছে আর বিজ্ঞান শুধুমাত্র বস্তুবাদ সংশ্লিষ্ট হওয়ার তা সম্পূর্ন আলাদা একটি স্বতন্ত্র শাস্ত্রে পরিনিত হয় । কিন্তু তারপরেও কিছু মানুষ দার্শনিকদেরই বিজ্ঞানী ভাবত কারন বর্তমানের মত তখন জ্ঞানের পরিধি এত বিশাল ছিল না তাই একজন মানুষ একই সাথে দার্শনিকও হত, সাহিত্যিকও হত, গনিতবিদও হত আবার ধার্মীকও হত এর স্পষ্ট উদাহরন দেয়া যায় এরিস্টটল এর ক্ষেত্রে তিনি একই ব্যাক্তি হয়ে বিভিন্ন শাস্ত্র এর উপর বিভিন্ন তত্ত দিয়েছেন কিন্তু বর্তমান যুগে জ্ঞানের ক্ষেত্র এতই বেশি যে একজন পদার্থবিদ হয়েও চিকিৎসা শাস্ত্রে এমনি দূর্বল হন যে সামান্য জ্বরেই ডাক্তারের সরানোপন্ন হন কিন্তু নিজে থেকেই কি ঐষধ নিবে তা বুঝতে পারেন না অথচ দুটোই বিজ্ঞানেরই বিষয় , অতীতে কিন্তু মানুষ এমন ছিল না বরং একজন ব্যাক্তিই অনেক বিষয়ে জ্ঞান রাখত। তাই ফ্রান্সিস বেকন যে যুগে এটি মন্তব্য করেছেন সেই যুগেও মানুষ কিন্তু দর্শন আর বিজ্ঞানকে এক করেই দেখত, শুধু তাই নয় বর্তমানে বিজ্ঞান শাস্ত্র এর জন্য যে ডেফিনেশন দ্বার করা হয়েছে তাও কিন্তু অতীতে ছিল না। মোটকথা তখনকার সময়ে ফ্রান্সিস বেকন দর্শন বলতে মুলত বর্তমান বিজ্ঞানসহ দর্শনকেও বুঝিয়েছেন একথা প্রায় সকলেই বুঝবে কিন্তু নাস্তেকদের ফ্রান্সিস বেকনের উক্ত উক্তিটি এমনি আঁতে ঘা দিয়েছে যে তার ব্যাক্তিগত খারাপ বদাভ্যাস উইকিপিডিয়াতে লিপিবদ্ধসহ নাস্তেকদের গাঁ জ্বালানো তাঁর সেই বিখ্যাত বানীটাকেও ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করছে। যুক্তির খাতিরে ধরেই নিলাম যে ফ্রান্সিস বেকন বিজ্ঞান নিয়ে বলেননি, কিন্তু বর্তমান যুগে একদিকে নাস্তেকদের বিজ্ঞানে কপি-পেষ্ট মার্কা জ্ঞানের পরিধি আর লাফালাফি দেখে অন্যদিকে অনেক জ্ঞানী মানুষের ধর্মে ফিরার অবস্থা দেখে এটাই কিন্তু প্রমান হচ্ছে যে-"অল্প বিজ্ঞান শিক্ষা মানুষকে নাস্তিক করে তুলে এবং অধিক বিজ্ঞান শিক্ষা মানুষকে স্রষ্টার কাছে নিয়ে চলে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:২১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×