somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মনে রবে কিনা রবে?

১২ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৪২২ বঙ্গাব্দ, সকাল ৬টা।
ঘুম ভাঙ্গল মোবাইলের এলার্ম শুনে। তারাতারি বিছানা থেকে নেমে বার্থরুম থেকে ফ্রেস হয়ে এসেই মোবাইলের স্কিনে মুমুর মিসড্ কল। ব্যাক করতেই রিসিভ করল।
হ্যাপি নিউ ইয়ার মাই ডিয়ার মুম।
তোমার না ঐ অভ্যাস গেল না। আজ কিসের বাংলা নববর্ষ। শুভ নববর্ষ বলবে তা নেই। প্রথমে হ্যাপি নিউ ইয়ার। কেন তোমার হ্যাপিরে খুব পছন্দ হয়?
সরি না না দুঃখিত। শুভ নববর্ষ.....
আমি তৈরি তুমি?
জাস্ট ১০ মিনিট। ড্রেস পরে আচ্ছি।
কি পরবে?
কেন জিন্স প্যান্ট, টি শার্ট।
আমি শাড়ি খুলে রাখলাম। তুমি যাও। আমার যাওয়া হবে না।
তোমার আবার কি হলো?
আজ পহেলা বৈশাখ তুমি বাউন্ডেলে সেজে আসো। আর আমি খাঁটি বাঙালি সেঁজে শাড়ি পরে আসি!
ওকে পাঞ্জাবি পরে আচ্ছি।
না তোমার আসার দরকার নেই। ইংলিশ বাবু।
দেখ সকাল সকাল মেজাজ গরম না করে হোস্টেল থেকে বাহির হও। আমি ১০ মিনিটে আচ্ছি।
রাখি।
বাই। ফোনটা বিছানায় রেখে হলুদ পাঞ্জাবি পরলাম। কিছুদিন আগে মুম এটা গিফট করেছিল। নিজেকে হিমু হিমু লাগছে। ভাবলাম হিমুর মত খালি পায়ে যাই। তা দেখলে মুম সত্যি সত্যি আমাকে ছেড়ে হোস্টেল ফিরে যাবে। সারাদিন ফোন রিচিভ করবে না, কারো সঙ্গে কথা বলবে না। বিছানায় শুয়ে কেঁদে ভাসাবে বালিশ।
১০ মিনিটের আগেই হোস্টেলের সামনে যেতেই দেখি মুম আসছে। ওকে আজ সত্যিই কোন গ্রাম্য সুন্দরী নতুন বধু বলতে দ্বিধা করবেন না। আছে আসতেই লাল টুকটুকে গোলাপ ফুল হাতে দিয়ে বলল,
শুভ নববর্ষ। তোমার প্রতিটি দিন অনেক অনেক সুন্দর ভাবে কাটুক।
হুম্ম।
কি হলো ফুলটা নিবে না? সবাই কেমন ড্যাবড্যাবে এদিকে তাকিয়ে আছে।
ও আচ্ছা ফুলটা নিলাম। নিজেকে খুব ছোট মনে হচ্ছে। আমারই
উচিৎ তার জন্য একটা ফুলের তোড়া নিয়ে আসার। চলো
মুম_!
কি হল?
না মানে__
আরে কথা না বলে চলো। রিক্সাওয়ালা ভাই রমনা যাবেন? রিক্সা ওয়ালা এলে আমরা চরে বসলাম।
রিক্সা চলছে ফুটপাত ঘেঁষে। রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম। চলছে বৈশাখের র্যালী। ছোট ছেলে মেয়েদের রং নিয়ে আনন্দ উৎসব। মুম মাথাটা আমার ঘাড়ে রেখে কোন কথা না বলে আছে। হঠাৎ ওর দিকে মুখ ফিরিয়ে বুঝতে পারলাম চোখে পানি। তার মানে নিরবে কাঁদছে। মুম হাতের উল্টা পিট দিয়ে পানি মুছল।
মুম কাঁদছো কেন?
কই নাতো? আমি দেখলাম চোখের পানি মুছতে।
না মানে?
আমি তোমাকে কিছু বলছি কাঁদার মত। না কোন কিছু হয়েছে খুলে বল। মুম কিছু বলে না। আবারো নিরব হয়ে যায়। আমি ওর মুখের দিয়ে তাকিয়ে দেখি ওআমাকে কিছু বলতে চায়। হয়ত বলতে পারছে না। আমি কিছু না বলে ওর মুখের দিকে চেয়ে।
তুমি দীপ ভাইয়া কে চেন?
দেলওয়ার আহমেদ দীপ ভাই।
হু। ভাইয়া এক সপ্তাহ হলো থ্যাইল্যান্ড থেকে ফিরেছে। বেরোবি তে অধ্যাপক হিসাবে যোগ দিবেন কিছু দিনের মধ্যে।
সে তো আনন্দের কথা।
দূর রাখ তোমার আনন্দ। বাবা মা চায় ওনার সঙ্গে আমার বিয়েটা হয়ে যাক।
ভালো তো ভালো না। একজন ডাক্তার মুনসুরা সুলতানা মুম অন্যজন অধ্যাপক দেলওয়ার আহমেদ দীপ।
জানো দীপ ভাইয়া আমার কত বছরের বড়?
কত?
পনেরো বিশ হবেই।
শুধু কি বয়সের জন্য তোমার মত নেই?
হুম্ম।
ঠিক বলেছো। আমার মতো এক বাউন্ডেল ছেলে কে ছেড়ে যাওয়াই ভালো।
তুমি না?
আমি রিক্সা থেকে নামলাম তুমি যাও। ভাই রিক্সা থামান আমি নামব। সত্যি সত্যি নামার জন্য আমি প্রস্তুত।
না আপনি থামাবেন না। আমি রিক্সা থেকে লাফ দিব। এমন সময় মুম আমার হাতটা টেনে ধরে।
রুহান, অনেকটা পথ একই সঙ্গে এসে হঠাৎ ছেড়ে যাবে?
উপায় আছে?
তুমি আমাকে কত দিন থেকে চেন? সেই ছোট বেলা থেকে এক সাথে বড় হয়েছি। একই ক্লাসে পড়েছি। গ্রামের মানুষ যেন বিনা চিকিৎসা কিংবা ডাক্তারের অবহেলায় মারা না যায়। সে জন্য মেডিকেল ইউনিভার্সিটি পড়ছি। আর এক বছর পর কোর্স শেষ হলে......
অফ প্রচন্ড মাথা ব্যথা করছে। রেডিও চিলমারী ৯২.২অফ কর।
রেডিও চিলমারী! মুম আমার মাথার চুল টেনে ধরে।
অনেকক্ষণ কোন কথা হয়না। মুম আমার মাথাটা ওর কাধে নিয়ে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে আছে। রিক্সা চলছে রমনার বটমূলের উদ্দেশ্যে।
হ্যালো।
বল।
রুহান, তোরা কই?
এই তো গেটের সামনে।
আরে আমি আর তনু সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছি। তোরা রিক্সায় না? আমরা তোর সামনেই।
শালা, ফোন রাখ। আমার বন্ধু নুহাশ ও তনু আগেই এসেছে। কথা ছিল আজ আমি এদের খাওয়াবো। রিক্সার টাকা দিতে গিয়ে দেখি মানিব্যাগ নাই। আসার সময় ছেড়ে এসেছি। কি করব ভেবে না পেয়ে মুমুকে বললাম,
খুচরা টাকা আছে?
হুম। রিক্সা ভাড়া দিল। যাচ্ছি ওদের দিকে।
মুমু, একটা সমস্যা হইছে।
মানিব্যাগ নাই। আমি থ বনে গেলাম। হ্যা না কিছুই বললাম না। আরে মন খারাপ করনা। আমার কাছে টাকা আছে।
কিন্তু?
কোন কিন্তু নয়। চলো। আমার হাতটা ধরে হাটতে লাগলো। ওর ফোনটা বেজে ওঠে। রিসিভ করে
আস সালামু আলাইকুম। আমার কানটা টেনে ওর কানের কাছে নিয়ে গেল। মাঝে মোবাইল।
ওয়া আলাইকুম আস সালাম। এখন কোথায়?
এইতো রমনায়।
একা?
অন্য কেউ সাথে আছে।
ঠিক তাই না। বন্ধুরা সাথে আছে, নাকি?
হুম।
বাসা আসবে কবে?
বলতে পারব না। সামনে পরীক্ষা। চিন্তায় আছি।
আমি সম্ববত দুএকদিনের মধ্যে ঢাকা আচ্ছি। দেখা করবে?
আসেন।
ঠিক আছে। টেক কেয়ার। কথা শেষ। ফোনটা রেখে দিল হাতে। আমার বুঝতে বাকি নাই দ্বীপ ভাইয়ার ফোন।
বেশ কয়েক বছর পর পান্তা খেলাম ঝাঁটকা ইলিশ আর আর চেনা অচেনা কয়েক ধরনের ভর্তা দিয়ে। আগে পদ্মার ইলিশ অনেক খেতাম। এখন পাওয়াই যায়না। বুঝিনা ইলিশ যায় কোথায়? দাদি বলত, দাদু পাট বিক্রি করে বড় বড় ইলিশ কিনে আনত।
পান্তা খাওয়ার ফলে আমার জ্বর-মাথা ব্যথা বেড়ে গেল। নাক দিয়ে শুরু হল পানি পড়া। আমি হোস্টেলে ফিরতে চাইলেও মুমুর জন্য ফেরা হলো না। চারজন মিলে এখানে সেখানে ঘুরলাম। দুপুর বেলা ফিরে আসলাম হোস্টেলে। বিকেলবেলা যাওয়া হবে টিএসসি। হোস্টেলে গিয়ে ট্যাবলেট খেয়ে শুয়ে পড়লাম।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:২৪
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×