somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাহিত্যই দর্পণ

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কোন সভ্য জাতীকে অসভ্য করবার ইচ্ছা যদি থাকে, তাহলে তাদের বইগুলো ধ্বংশ কর এবং কোন দেশ কে সভ্য ও মানুষ করবার বাসনা থাকে তাহলে সে দেশের সাহিত্যকে উন্নত কর।”Ñডা. লুৎফর রহমান।
প্রথম উক্তিটি তাদের জন্য যারা জাতিকে সঠিক বা সভ্য থাকতে দিতে চায়না। দ্বিতীয় উক্তিটি হল তাদের জন্য যারা সাহিত্যিক বা পন্ডিত। তাদের এ জন্য বলা হয়েছে যে,“লেখক সাহিত্যিক ও পন্ডিতেরাই জাতীর আত্মা।” আত্মা যদি পবিত্র থাকে তাহলে জাতী থাকবে শান্তিতে। আর আত্মা যদি অপিবত্র থাকে তাহলে অসভ্য হবেইএর প্রধান কারণ আত্মাই মনের খাদ্য সৃষ্টি করে। আপনি হয়তো ভাবছেন এই খাদ্য কি? সেটি হচ্ছে সাহিত্য। আমাদের আগে জানা দরকার সাহিত্য কি? তার জন্ম কিসের জন্য? তার কাজ কি?
সাধারনত আমরা সাহিত্য বলতে বুঝি গল্প, ছড়া-কবিতা, প্রবন্ধ, গান, নাটক, উপন্যাস ইত্যাদি। কিন্তু প্রামাণ্য সঙ্গা আলাদা। আর তা হল “পরের কথা বা বাহ্য জগতের কথা সাহিত্যিকের যে সুরে ঝঙ্কৃত হয়, তার শিল্প সঙ্গত প্রকাশই সাহিত্য।” আর সাহিত্যিক তিনি যিনি সাহিত্য রচনা করেন। এক কথায় বলা যায় সাহিত্যিক যা রচনা করেন তাই সাহিত্য। সাহিত্যর জন্ম কথা বলতে গিয়ে বাংলা গদ্যে চলিত রীতির অন্যতম সার্থক প্রবর্তক, মননশীল লেখক ও প্রবন্ধকার প্রমথ চৌধরী যথাযথই বলেছেন, “মানুষের দর্শন, বিজ্ঞান, ধর্মনীতি, অনুরাগ-বিরাগ, আশা-নৈরাশা, তার অন্তরের সত্য ও সপ্ন এই সকল সমবায়ে সাহিত্যের জন্ম।” রবিন্দ্রনাথের ভাষায় সাহিত্যের কাজ হল “অন্তরের জিনিসকে বাহিরে, ভাবের জিনিসকে ভাষায়, নিজের জিনিসকে বিশ্ব মানবের ও নকালের জিনিসকে চিরকালের করিয়া তোলা সাহিত্যর কাজ।” তাহলে কি সাহিত্যের অন্য কাজ নাই? আছে বৈ কি? তার আগে আমাদের জানা দরকার দর্পণ সম্পর্কে। কেননা সাহিত্যই দর্পণ ।
বিজ্ঞানের ভাষায দর্পণ হল, “যে মসৃন তলে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে তাকে দর্পণ বলে অথবা যে তল হতে আলোক রশ্মি প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসে তাকেই দর্পণ বলে। উদাহরন স্বরূপ আমরা নিতে পারি আয়না। একটি আয়নার সামনে মুখ করে যদি কেউ তাকায় তাহলে যা দেখতে পারবে তা আমাদের সকলের জানা (কেননা শুধু কানা ছাড়া এমন কেহ নেই যে গর্ব করে বলবে আমি আয়নার মুখ দেখিনি)। ঠিক তেমনি যদি আমরা সাহিত্যর দিকে তাকাই তাহলে আমরা শুধু মুখ নয়, দেখতে পারব আমাদের জীবনের হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, সুখ-দুঃখ, শান্তি-অশান্তি, আচার-আচরন, দর্শণ, বিজ্ঞান, ধর্মবানী, রাজনীতি, রাগ-অনুরাগ, আশা-আখাংকা, রাষ্ট্র, মহান আল্লাহর সৃষ্টি ইত্যাদির প্রতিবিম্ব দেখতে পারব। আমরা এক কথায় বলতে পারি সব কিছুই।
আবার সাহিত্যিক এর কাজের কথায় ফিরে আসি। যদি কেহ আয়নার সামনে দাড়িয়ে তার মুখের কোন স্থানে বরুন কিংবা মেসতার চিহ্ন দেখতে পায় তখন সে তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা অবশ্যই করবে। ঠিক তেমনি সাহিত্য দেখে আমাদের পরিবেশকে, সমাজকে, রাষ্ট্রকে, দেশকে এক কথায় এই পৃথিবীকে সুশীল ভাবে গঠন করতে হবে। এবং যে, সমাজে কোন মেসতা কিংবা বরুনের রূপ নিয়ে সুন্দর্য্য নষ্ট করে তাকেও সরানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে। এতো গেল পাঠক/পাঠিকার কথা। এখন যারা সাহিত্য রচনা করে আমি তাদের কি বলব কারণ তারা সবাই একাই একশ (যদি না হত তাহলে সাহিত্য রচনা করতে পারত না)। তার পরর আমি আদেশ নয়,সকল সাহিত্যিককে অনুরোধের সুরে বলি, চলো হে সাহিত্যিকেরা আমরা যে প্লাটফর্মে থাকিনা কেন? আমাদের অগ্রযাত্রা করি একটি সুশীল সমােেজর দিকে । আর একটি সুশীল সমাজে পৌঁছিতে হলে আমাদের সকলের উচিত সমাজ কে যুগউপযুযি, রুচিশীল, সুসাহিত্য উপহার দিয়ে একটি সুন্দর সুশীল সমাজ গঠন করা, কুসাহিত্য বর্জন করা। আপনি যদি সেক্সচুয়ালিটি রাইটার হন তাহলে যুক্তি নিশ্চয় তৈরি করেছেন যে “যেহেতু সাহিত্যই দর্পণ সেহেতু সাহিত্যে ওসব থাকবে। ” আমি বলব হ্যাঁ । সেটাও হতে হবে রুচিশীল। তসলিমা নাসরিনের মত খোলাখুলি নয়। আর একটা প্রশ্ন এতে কি লাভ পাঠকের? বরং এতে পাঠক-পাঠিকার চরিত্রের অবনতি হয়। এখনো সময় আছে ফিরে আসুন সাহিত্যর আসল ধর্মে। কেননা জাতী যদি ধ্বংশ হয় তাহলে আত্মা গুলোও ধ্বংশ হবে। এর কোন বিকল্প নেই।
কি বলব হায়! দুখের বিষয় হলেও সত্য এই যে আজ আমাদের সমাজের সু-সাহিত্যের চেয়ে কু-সাহিত্যের প্রভাব বেশি। এরও কারণ আছে। শুধু শুধু লেখকদে দোষ দিলেই হবে না। সমস্ত দোষ পাঠক- পাঠিকার এজন্য যে, তারা ওসব গ্রহণ করে। অবশ্য এতে তাদেরই তি। প্রকাশক ছাপিয়ে দেয় বিক্রি বেশি হওয়ার জন্য। আর লেখক রাতারাতি নাম ফুটায়ে পাঠক/পাঠিকার মন জয় করতে আশ্রয় তো নিবেই। অবশ্য বাংলাদেশের বেশির ভাগ নামি লেখকেরাই প্রথম অবস্থায় সাহিত্যগুলো রচনা করে একটু সেক্স মিশিয়ে। পরে তারাই নবীণ লেখকদের উপদেশ দেয় না লেখার জন্য তা অবশ্য নবীণেরা শুনলে তো? এবার লাভ-তির হিসাব করি । লেখক লেখে, প্রকাশক প্রকাশ করে। এতে লেখক ও প্রকাশক আর্থিক লাভবান হয়। আর পাঠক/পাঠিকার চরিত্রের অবনতি, এটা সেটা ঘটার জন্য মন আনচান করে। অতচ আমাদের চাওয়া ছিল না এমন যা আজ পেয়েছি। আমি মনে করি এই কু-সাহিত্যের জন্য সু-সাহিত্য দুর্লভ। আমরা কি পারি না কু-সাহিত্য কে সমাজ থেকে বিতারিত করতে। শেষ বারের মত আর একবার বলি আসো হে সাহিত্যিক বন্ধুরা , আমরা সুসাহিত্য রচনা করি। সমাজের মানবের তথা পাঠক/পাঠিকার সঙ্গে সাহিত্যের সু-সম্পর্ক স্থাপন করি। তখনই কথাটি যথাযথ হবে সাহিত্যই দর্পণ । সাহিত্যের মাঝে খুজে পাবে মানবকুল তাদের আসল প্রতিবিম্ব। মূল্যায়ন হবে সঠিক চিন্তন ও প্রত্যেক সাহিত্যিকের। আর আত্মাগুলো থাকবে প্রশান্তিতে। যাতে কোন সন্দেহ নাই।
..................।
জরীফ উদ্দীন

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

লিখেছেন আবু ছােলহ, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

গুগল থেকে নেয়া ছবি।

সামুতে মাল্টি নিক নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। অনেকের কাছে মাল্টি যন্ত্রণারও কারণ। শুধু যন্ত্রণা নয়, নরক যন্ত্রণাও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×