হাঁটছিলাম স্টেশন রোডে। ফোনটা বেজে উঠল। মোবাইলের স্কিনে অপরিচিত নাম্বার দেখে রিসিভ করব কি না ভাবতেই কেটে গেল। ব্যালেন্স নাই মোবাইলে তাই ব্যাক করা সম্ভব হল না। মোবাইলটা পকেটে রেখে দিব সেই সময় আবার রিংটোন বাজতেই রিসিভ করলাম। ওপ্রান্ত থেকে ভেসে আসল
হ্যালো, আস সালামু আলাইকুম।
ওয়া আলাইকুম আসসালাম।
কেমন আছো?
ভালো। কে? বলেই চিনে ফেললাম তাকে।
চিনতে পারনি?
অচেনা রে আর চিনব কি করে যতদিন দেখিনি। কেমন আছো?
ভালো। রংপুর আসলে কবে?
এইতো আসলাম ভাওয়াইয়া এক্সপ্রেসে।
এখন নিশ্চয় রাস্তায় হাটছো। কালো প্যান্ট-সাদা শার্ট, সু পরা। ঘাড়ে ব্যাগ। আচ্ছা মুখে খোঁচা দাড়ি কত দিন থেকে সেফ কর না? করবে কখন শুধু ব্যস্ত থাক। আমি দাঁড়ালাম।
তুমি তাহলে আমাকে দেখতেছো। আজ কি তবে দেখা হবে?
না। কিছু না বলে লাইন কেটে দিলাম। মনে পড়ল কিছু দিন আগের কথা। কিডনি জনিত অসুস্থতায় বাড়ি থেকে কোথাও বাহির না হওয়ায় ফেইসবুকে বেশির ভাগ সময় কাটাতাম । তখন ফেইসবুকে তার সাথে পরিচয়। চ্যাটিং করতাম প্রায় সময়। মাঝেমাঝে ফোনে কথা হত। এক সময় ওর সাথে রিলেশনে জড়িয়ে পড়ি। হঠাৎ ব্রেক আপ। তাকে আর ফেইসবুকে খুঁজে পাইনা। যে নাম্বার দিয়ে ফোনে আমার সাথে কথা বলত সেটা তার বাড়ির নাম্বার। সে বাড়িতে থাকত না। রংপুরে আন্টির বাসায় থেকে পড়ত। তাই ফোনেও যোগাযোগ হত না। সে আর আমাকে ফোন দিত না। এক সময় আমাদের আর কোন যোগাযোগ রইল না। অনেকদিন পর ফোন দিয়ে কাছে থেকেও দেখা করবে না। মনটা বিষন্নতায় ভরে গেল। না আর ভাবতে চাই না।
আকাশে মেঘ ছিল। বৃষ্টি পরা শুরু করল। যে যার মত নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য অস্থির। আমি বৃষ্টিতে আবারও হাঁটা শুরু করলাম। পিছন থেকে ভেসে আসল,
দাড়াও। তাকাতেই দেখি অপরিচিত একটি সুন্দরী মেয়ে বৃষ্টিতে ভিজে আমার দিকে এগিয়ে আচ্ছে। কণ্ঠটা আমার অতিপরিচিত। যার সাথে কথা বললাম সেই হবে। মুখটা যেন কতকাল আগে থেকে চেনা। এসে আমার হাতটা ধরল। কি করব, কি বলব ভেবে পেলাম না। সেই নিরবতা আবারো ভেঙে বলা শুরু করল
চলো হেঁটে যাই ওগো আজি পিচঢালা পথে
চষিয়ে বেড়াই রংপুর শহর বৃষ্টিতে ভিজে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:১৯