আমরা যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে অনার্স পড়ি জানি না আমাদের কিংবা পূর্ব পুরুষদের কোন পাপের ফলে এই প্রায়শ্চিত্ত। আমরা আজও ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মত দুধ না পেয়ে দুধের সন্নিকটে থাকা দুধের মত স্থানে........। যে দেশে পাবলিক ইউনিভার্সিটি ও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে হাতে গোনা কয়েকটা প্রশ্ন আর স্যারের নোট পড়ে ফাস্ট ক্লাস পেয়ে দিব্বি বেড়িয়ে আচ্ছে বছরের পর বছর সুভাগ্যবান সোনার সন্তানেরা। সেই দেশে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কপাল পোড়ারা টেনেটুনে সেকেন্ড/থার্ড ক্লাশ পায় বইয়ের প্রথম থেকে শেষ পড়ে পরীক্ষায় কমন না পেয়েও। মূলত পাশ করার পর কারা মেধা দিয়ে পাশ করে তা সবারই জানা আছে নতুন করে না বলাই যুক্তিযুক্ত।
যখন অনার্স কোর্স রমনা মেইল কিংবা গরুর গাড়ির চাকা মত না ঘুরিয়ে একটু এক্সপ্রেস কিংবা ঘোড়ার গাড়ির স্প্রিটে নিয়ে আসল আমরা যারা মধ্যবিত্ত ঘরের শিক্ষার্থী আছি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। ভাবলাম অনার্স আর বেশিদিন পড়তে হবে না। একটা ফাইনাল পরীক্ষার প্রায় ৭ মাস পরে আর একটা ফাইনাল পরীক্ষা কি না! যা হউক এবার তাহলে অনার্স শেষ হবে। কিন্তু তা কি আদৌ সম্ভব? বরঞ্চ এখন বছরের পর বছর মনে হয় মান উন্নয়ন পরীক্ষা দিতেই চলে যাবে। সে দুঃখ আপাতত থাক।
দেশের জাতীয় খাসি'রা জাতীর টাকা আর ছাত্রদের অতিরিক্ত ফি খেয়ে কি করে না করে আল্লাহ মালুম। গত বর্ষে ২য় ইনকোর্সের সময় হঠাৎ করে বাড়ল (ইতিহাস বিভাগের ২য় বর্ষের) 'ইসলামের রাজনৈতিক ও স্বাংস্কৃতিক ইতিহাস' যে বইটি আগে ৩য় বর্ষে পড়ানো হত। পরীক্ষা শেষ। ৩য় বর্ষে পড়তে শুরু করলাম যথা সময় ইনকোর্স পরীক্ষা হলো আটটি বিষয়ে। সময়ের বিবর্তনে ৩য় বর্ষের রুটিন বাহির হলো। কিন্তু একি! বিষয় নয়টি পরীক্ষার বাকি আছে মাত্র ২২ দিন। যে বিষয়টা যুক্ত করা হয়েছে সেটি ২য় বর্ষে পরীক্ষা দিয়েছি। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের মাথা ঠিক থাকলে এরকম করতে পারে না। হঠাৎ বিষয় যোগ কিংবা বিয়োগ তারা কেন কররে? কেন আমাদের মত শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে এরকম খেলছে? কে দিবে তার উত্তর? হঠাৎ পরীক্ষার তারিখ করবে ? আর আমাদের জীবন করবে অভিশপ্ত কিংবা ঝুলন্ত। অপর পক্ষে ওদের সোনার সন্তানদের পাবলিক কিংবা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অথবা বিদেশে পাঠাচ্ছে লেখা-পড়া ও উচ্চ ডিগ্রীর জন্য। আমাদের মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। মাঝেমাঝে মনে হয় অনার্স না পরে গার্মেন্টসে কাজ করা অনেক ভালো। যেহেতু পড়তে শুরু করেছি শেষটা দেখতেই হবে। জয়তু অনার্স, জয়তু নীতিনির্ধারক।